মাদারীপুরে মুড়িকাটা পিঁয়াজের বাজার মূল্যে দিশেহারা কৃষক

প্রকাশ : 2025-02-12 17:08:41১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মাদারীপুরে মুড়িকাটা পিঁয়াজের বাজার মূল্যে দিশেহারা কৃষক

মাদারীপুর জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মুড়িকাটা পিঁয়াজ তুলতে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন । উপজেলা গুলো হচ্ছে মাদারীপুর সদও, রাজৈর,কালকিনি ,ডাসার ও শিবচর। তবে এসব উপজেলায় পিঁয়াজের বাজার মূল্যে নিয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।মাদারীপুর জেলায় সংরক্ষনাগার না থাকায় উৎপাদন খরচের অর্ধেক মূল্যে পিঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। 

মাদারীপুর জেলার ৫টি উপজেলায় ক্ষেত থেকে তোলা শুরু হয়েছে নতুন পিঁয়াজ। কৃষকরা পিঁয়াজ তোলায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। তবে পদ্মা, আড়িয়াল খা, কুমার নদী বেষ্ঠিত শিবচর উপজেলায় মসলা উৎপাদনে বিখ্যাত এ পিঁয়াজ উৎকৃষ্ট মানের। এ বছর জেলায় ৪ হাজার ৬৫ হেক্টোর জমিতে মুড়িকাটা পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে শিবচর উপজেলাতেই উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টোর। বাজারগুলোতেও বিক্রি হচ্ছে মুড়িকাটা পিঁয়াজ। তবে এ বছর বাজারে পিঁয়াজের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সার, বীজ, কীটনাশক, দিন মজুর, জমি চাষসহ বিঘা প্রতি ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে কৃষকদের। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ মন পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। সে হিসাবে এক মন পিঁয়াজ উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা আর সেখানে এক মন পিঁয়াজ কৃষক ১৪ শ থেকে ১৬ শ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মুড়ি কাটা পিঁয়াজ সংরক্ষনের জন্য এ অঞ্চলে নেই কোন সংরক্ষনাগার। আর কৃষকের আগাম পিঁয়াজ উঠার মৌসুমেই ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানী করছে সরকার। এতেই ধ্বশ নেমেছে দেশীয় পিঁয়াজের বাজার মূল্যে। চরম লোকসানের আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। দ্রুত পিঁয়াজ আমদানী বন্ধের দাবী তাদের। একই সাথে দক্ষিনাঞ্চলে পিঁয়াজ সংরক্ষনাগার নির্মানের দাবী তাদের।

কালকিনি উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের কুলচরি গ্রামের কালাম সরদার জানান, এখন পিয়াজের মওসুম । আমরা, ১ মন পিয়াজ নি¤েœ ৮ থেকে ১০ হাজারএবং উপরে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা দরে পিয়াজের বীজ কিনছি । সে হিসেবে ১ বিঘা ৩৩ শতাংশ জমিতে আমাদের অনেক খরচ পড়ছে। সেই তুলনায় এখন যে পিয়াজের দাম তাতে ৪ আনিও লাভ দেখতে পাচ্ছি না। আর এই মুহুতের্’ বিদেশ থেকে যেমন ভারত,পাকিস্তান থেকে আমদানী করলে আমাদের কৃষকরা অনেক সমস্যায় পরতেছে। সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন অন্তত দুই মাস মাদারীপুর জেলায় আমদানী বন্ধ রাখে না হলে আমরা কৃষকরা একেবারে মারা পড়ে যাবো। এই ইউনিয়নের কৃষক হোসেন খা জানান, আমাদের এ অঞ্চলে পিয়াজই একমাত্র হালট। এই ফসলের উপর নির্ভর করে আমরা স্বচ্ছলতা প্রকাশ করি। আর এই পিয়াজ আমারা সাধারন জনগন বিগত দিনে প্রচুর দাম দিয়ে কিনে খেয়েছি। আমদানি যদি আরো এক দু মাস পরে হতো তাহলে কুষকরাও দাম ভালো পেতো। 

শিবচর উপজেলার ২য় খন্ড ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জুলহাস মিয়া বলেন, এ মওসুমে পিয়াজ উঠে গেছে। এ মওসুমে পিয়াজের দাম কম। কৃষক যাতে করে দাম বেশি পায় । আমাদেরকেও খেয়াল রাখতে হবে কৃষককে বাচিয়ে রাখতে হবে এবং জনগণ যেন সহজ দামে কিনতে পারে সেদিকেও খেয়াল করতে হবে। শিবচরে একটি কোল্ড স্টোরেজ প্রয়োজন যাতে করে কৃষকরা তাদেও উৎপাদিত কৃসিপন্য সংরক্ষণ করতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃস্টি কামণা করছি। 

মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক জীবাংশু দাস জানান, এ বছর মাদারীপুরে যথেষ্ঠ ভাল মুড়িকাটা পিয়াজের উৎপাদন হয়েছে। কৃষকরা আশানোরুপ ফলাফল পেয়েছে। সারা দেশের যে চাহিদা রয়েছে সে চাহিদা পুরণে মাদারীপুর একটি গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখেবে বলে আশা করছি। 

বাজার মূল্য এত কম থাকার জন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানীকেই দুষছেন কৃষকরা। তাই পিঁয়াজ উত্তোলন মৌসুমে আমদানী বন্ধের দাবী কৃষকদের। উৎপাদন এলাকা চিহিৃত করে সংরক্ষনাগার নির্মানের দাবী সচেতন মহলের।