ভয়! কাদের? 

প্রকাশ : 2022-04-15 20:43:32১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ভয়! কাদের? 

কাদের ভয়ে একটি দেশের জাতীয় উৎসব, সার্বজনীন উৎসব, ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব, ইউনেস্কো স্বীকৃত একটি উৎসব এমন সাঁজোয়া বাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পালন করতে হয়? কেন করতে হয়? 

যাদের ভয়ে এমন তিন স্তর চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে এমন একটি উৎসব করতে হয় তারা কেমন প্রকৃতির? এর উত্তরে কিছু লোক বলবে দেশে ধর্মীয় আগ্রাসন নাই, ধর্মীয় উত্থান নাই। ধর্মীয় উত্থান শুধু ভারতে।

আমরা সবাই জানি, বিজেপি হিন্দুত্ববাদী দল, তারা ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থান ঘটিয়েছে। নিশ্চিতভাবেই ঘটিয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজের দেশে কী ঘটেছে?

 প্রথম থেকেই সবগুলি দল যেসব দল ক্ষমতায় এসেছে সবাই কমবেশি ধর্মীয় উত্থান ঘটিয়েছে। একদল সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম করেছে বাকীরাও ক্ষমতায় এসে সেটা সংরক্ষণ করেছে, ব্যবহার করেছে। ভারতে দ্বিপাক্ষিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে তেমনি এখানেও হচ্ছে তবে সেটা ঠিক দাঙ্গা নয়, একপাক্ষিক সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, লুটপাট, জ্বালাওপোড়াও, মন্দির মূর্তি ভাঙ্গা, ধর্ষণ, হত্যা, দেশত্যাগে বাধ্যকরণ। তাইলে এখানকার ক্ষমতাসীন দলগুলির সাথে বিজেপির পার্থক্য কোথায়? কোনো পার্থক্য নেই। 

এখন আপনি যদি শুধু বিজেপির হিন্দুত্ববাদের উত্থান দেখেন আর নিজের ধর্ম বলে নিজ দেশের ধর্মীয় উত্থান না দেখেন, ফিল করতে না পারেন তাইলে তো ভাই আপনি নির্ভেজাল সাম্প্রদায়িক।

এখানকার ক্ষমতাসীন দলগুলির সাথে আসলেই বিজেপির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। সকলেই ধর্মীয় উত্থানের ভেতর দিয়েই ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে চলেছে।

 তবে পার্থক্য হবে যদি এখানে ধর্মীয় দল ক্ষমতায় আসে (আসার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে)। বিজেপি ক্ষমতায় এসে হিন্দুত্ববাদের উত্থান ঘটালেও তারা ভারতীয় সংবিধান অনুসারেই রাষ্ট্র পরিচলনা করছে। মনুসংহিতায় ফিরে যায় নি। কিন্তু এখানে ধর্মীয় দল ক্ষমতায় এলে প্রথমেই এখানকার সংবিধান বুড়িগঙ্গার নষ্ট জলে নিক্ষেপ করবে। এটা যারা স্বীকার করেন না তারা সত্যকে আড়াল করে ধর্মীয় আগ্রাসনকেই উৎসাহিত করেন।

ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাগুলি যে হারে মিডিয়া এটেনশন পায়, বাম প্রগতিশীল লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী যেভাবে সোচ্চার প্রতিবাদ জানায় এবং আদালতে বিচার হয়, এখানে সেরকম নয়। 
এখানকার মিডিয়াগুলি সংখ্যালঘু বান্ধব নয়। এখানে মিডিয়া এটেনশন পায় না বলে প্রায় নিরবেই চলে একপাক্ষিক পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক আক্রমণ।

লেখক: চলচ্চিত্র নির্মাতা।