ভারত বয়কট! গান্ধীর প্রয়াণ দিবস।
প্রকাশ : 2024-01-30 13:51:31১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বিএনপি জামাত এখন ভারতের পন্য বয়কটের কথা বলছে। এটা একটা সস্তা ঔষধ। বাংলাদেশে এই বয়কট মুখ সর্বস্ব ধ্বনি খুব জনপ্রিয়। কিছু হলেই বঙ্গীয় সন্তানরা ডাক দেয় বয়কট বয়কট বলে রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলে। পৃথিবী বয়কট রাজনীতিতে চলে না। কোন হাত ই ফেলনা নয়। এমন আজগুবি তান্ডপ বাংলাদেশেই হয়।
ইউক্রেন একটি ছোট দেশ সে দেশের যুদ্ধ গোটা বিশ্বে কীভাবে অর্থনীতির চাকা বিধ্বংস করে ফেললো। বঙ্গীয় সন্তানরা ভারত বিদ্বেষী কী খেলার কারণে? এটি একেবারে মিথ্যা কথা। তা হলে টেষ্ট ক্রিকেট!
ওদের মননটাই গঠন হয়েছে নানাভাবে। অপ্রিয় সত্য বললে ভাসুর বেজার। প্রধানত ধর্মীয় উস্কানি হতেই এ ভারত বিরোধিতা। এ জোয়ারে বিএনপি এখন হাওয়া দিচ্ছে। হেডাম লাগে! মুখে বললে হবে না। হেডামওয়ালা দেশেও এ ধ্বনি পাবেন না।
পাকিস্তানের মতো একটা দেশ ও এখন এসব ঠুনকো বিষয় গুলো পাশ কাটাতে শুরু করেছে। ভারতের চাঁদ বিজয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী অভিনন্দন জানিয়েছে পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়া।
আমরা ২০১৯ সনে চাঁদ অভিযানে ব্যর্থতায় হাসি আর আনন্দের বন্যায় ভাসিয়েছি, তবে এবার তার ব্যতিক্রম ছিলো বাংলাদেশে।
পাকিস্তান কে খেলায় সমর্থন করে, বিশ্বকাপে পাকিস্তান জিতলে ঢাকার রাজপথে মিছিল হয় আবার ভারতের পরাজয়ে মিষ্টি মুখ করে বলে খেলার সাথে রাজনীতি মিশাবেন না। কেউ কেউ উপমহাদেশ বলে সুবিধা নেয়, ভারত ও তো উপমহাদেশ। নিজ দেশের সাথে খেলায় পাক পতাকায় ঢেকে যায় স্টেডিয়াম! এ চিত্রও তো নিকট অতীতে দেখেছি। আবার দেশে মিথ্যা ছবি দিয়ে বাংলাদেশে উগ্রবাদীরা বিভ্রান্ত করে প্রগতীশীল মানুষদের বিরুদ্ধে।
আসলে ৭১ সনের মুক্তিযুদ্ধ কে আমরা ভুলে গেছি। বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে ভারতের অবদান কে পাকিস্তান প্রেমিরা ভুলতে পারেনি। জাতি ধর্ম সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে না ওঠলে তো এমন হবেই। তারা পাকিস্তান ভাঙ্গার দুঃখ ভুলেনি। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ঠিকই বলেছিলেন, একটি অনিচ্ছুক জাতিকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।
ভারত পাকিস্তান কে এক পালায় মাপার মানুষ বঙ্গীয় উপত্যকায় আছে। মনজগতেও যোগী আদিত্যনাথ আর আব্বাসি সাহেব তো বিজ্ঞান হতে বহু কিছুই বাদ দিতে বলেছেন। এদের মিল তো মনের, এদের বাইরে একে অপরের দোষারোপ করে। এরা উভয়েই বিশ্বাস করে বিজ্ঞানময় ধর্ম। সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। এ নিয়ে বললে আবার কেউ নাস্তিক ও বলতে পারেন।
ভাই আমি আস্তিক বা নাস্তিক সে বিশ্বাস ব্যক্তির। এনিয়ে রাষ্ট্রের কিছু বলার নেই। আমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করি, পরধর্ম কে শ্রদ্ধা করি। সকল ধর্মীয় সংখ্যলঘুদের তার অধিকার ভোগের আন্দোলনকে সমর্থন করি তা দেশ - বিদেশ যেখানেই হোক।
পিনাকী ভট্রাচার্য্য ইলিয়াসরা বিদেশে বসে এসব ডাক দেয়। ওরা সুযোগ নেয় ভিন জাতির, আর দরদ দেখায় সুরসুরি দেয় দেশের মানুষকে।
মালদ্বীপের ভারত বয়কটের ডাকে এখন সেখানে সরকারই মহাবিপদে। মাল দ্বীপ ভারতের পর্যটকের উপর নির্ভর করে পথ চলে। চীন - ভারতের দ্বীমুখি রাজনীতির চাপে মালদ্বীপ। আমরা ও কম চাপে নেই। বিএনপি সত্য মিথ্যা অর্ধ সত্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। এর জবাব আওয়ামীলীগ দিতে পারছে না। আওয়ামীলীগের সোশ্যাল মিডিয়া দূর্বল। এতে কোন সন্দেহ নেই বরং আওয়ামী লীগে জামাত মৌলবাদি মননের বংশবৃদ্ধি হয়েছে।
চীন আমেরিকা ভারত পাকিস্তান সৌদি আরব এমন কী ছোট দেশগুলোকে ও বাদ দিয়ে আমরা চলতে পারবো না। সরকার অর্থনৈতিক ভাবে গোটা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে পথ চলছে। এটাই অর্থনীতির কূটনীতি, এটাই এখন প্রধানতম হাতিয়ার।
বিশাল বিশাল তালিকা দিচ্ছে বিএনপি। চিকিৎসা খাতে ও বয়কট! এই তো সেদিন মেজর হাফিজ দিল্লী হতে চিকিৎসা করে গেলেন। দিল্লী কী আমেরিকা? শফি হুজুর ও মরার আগে ভারতে চিকিৎসা করায়ে গেছেন। দেওবন্দ এই ভারতেই।
খোলা চোখে বিচার করতে শিখতে পারছি না। ধর্ম কে ব্যক্তি হতে রাষ্ট্রের সাথে মিশিয়ে ভারত - বাংলাদেশে এক মিশ্র সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। বিজেপি সরকার দলের মধ্যে মৌলবাদী আচরণ করলেও রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষতার চরিত্রে হাত দিতে সাহস পায়নি।
আজ এখানে রাষ্ট্র ধর্ম নেই। তবে রাম রাজত্বের নামে একটা জিংঘাসার আগুন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আইনগত সমাধান কে মানুষ মেনে নিলেও মসজিদের ভিতর শিব কে খুঁজে বেড় করার একটা প্রচেষ্টাকে সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ রাজনৈতিক দলগুলো ভাল চোখে দেখছেন না। রাম জ্বরে ভারত আক্রান্ত। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগায়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। ৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর ভারতের সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্র ধর্ম নিরপেক্ষ এখানে যেসব মন্দির মসজিদ উপাসনালয় যেমন আছে তেমনি থাকবে তা কোন পরির্বতন করা চলবে না।
ভারত রাষ্ট্র সে চরিত্রগত পরিবর্তন করেছে। এখন সব রাজনৈতিক কারণ,তবে ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্ভোধনের অনুষ্ঠানে ১১৮ টি ধর্ম গ্রন্থ হতে পাঠ করা হয়। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু্র মৃত্যুর পর সব বাদ পরে। শেখ হাসিনা ৯৬ তে শুরু করলেও খালেদাজিয়া বাদ দেন তা আজও বিদ্যমান।
ধান বানতে শিবের গীত হয়ে গেলো আজ ভারত রাষ্ট্রের জনক মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু দিবস। তার হত্যার পরোক্ষ সুবিধাবাদীরা আজ ক্ষমতায়।
বিএনপি কী করবে কী করবে না তাদের বিষয় তবে তাদের আত্ম বিশ্লেষণ করা জরুরী। প্রনব মুখোপাধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর , দশ ট্রাক অস্ত্র এসব কারনে ভারত দলটিকে আস্হায় রাখতে পারেনি। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখোপাধ্যায়ের অপমান!
কংগ্রেস পরাজয়ের পর শিবসেনা সর্মথিত উগ্রবাদী মোদি সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসতে না আসতেই তাদের হাইকমিশনের দরজা খোলার আগেই অভিনন্দন জানাতে বিএনপি গিয়েছিলেন এ কথা মনে আছে? তবুও মন গলেনি ভারতের। কেন সে অনুসন্ধান করুন। ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের দলের সাথে আর্দশিক বিপরীত অবস্থান গড়লেও বিদেশে দেশের স্বার্থ ও রাষ্ট্রপতির অপমান কে মনে রেখেছে। ভারতের সফলতা বহুত্ববাদী সমাজ গড়ে উঠেছে আমরা ৭৫ এর নির্মমতার পরে তা পারিনি। বঙ্গবন্ধু্র হত্যা কেবল একজন মানুষকে হত্যা নয় একটা আর্দশকে হত্যা এখানেই ওরা স্বার্থক।
'বয়কট - নিষিদ্ধ' এসব 'নয় ভারত' কে রাজনৈতিক ভাবে বিরোধিতা করুন এতে আমার আপত্তি নেই নিজ রাষ্ট্র স্বার্থ বিবেচনায় নিন আগে। বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীন আমাদের আমদানি রফতানি তা নিয়ে ভারতের বিরোধীতা করেন।
পণ্য বর্জন করলে জনগনের নাভিশ্বাস হবে। পেয়াঁজ আদা আলু ডাল এমন কী কাঁচামরিচ পর্যন্ত আনতে হয় ভারত থেকে। প্রাণের একছত্র বাণিজ্য ভারতে। এসব তো ভাববেন। আসলে বিএনপি চায় রোজার মাসে জনগন যেন ফুঁশে উঠে দ্রব্যমূল্যের কারণে।
এ অপরাজনীতি হতে আমাদের বেড় হতে হবে পাশাপাশি সীমান্ত হত্যা ও সুশম বন্টন নীতি পানি চুক্তি করে বন্ধু কে তার হাত প্রসারিত করতে হবে ভারতকেই। বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র ভাষাভিত্তিক জাতিয়তাবাদের ভিত্তিতে জন্মগ্রহণকারী দেশ। এক জাতির এক দেশের নাম ই বাংলাদেশ। এখানে আমরা দরিদ্র হলেও অহংকার বোধকরি। সে অহংবোধ ধরে রাখতেই হবে।
অলক মিত্র