ব্যাংকের পর্ষদে চাপ কেন জানতে চায় আইএমএফ
প্রকাশ : 2022-11-01 10:36:17১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দেশের ব্যাংকিং খাতে মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছে। প্রভিশন ঘাটতি, তারল্য সংকটও সমানতালে বাড়ছে। এতে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের অশনিসংকেত দেখা দিতে পারে।
আর ব্যাংক পরিচালনা পরিষদ (চেয়ারম্যান, পরিচালক, তাদের প্রভাব, ঋণ মঞ্জুর প্রভৃতি) বিষয়ে জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফের) প্রতিনিধি দল। একইভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে হালনাগাদ পদক্ষেপগুলো জানতে চেয়েছে। আর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিক সংস্কারের পরামর্শও দেয় তারা।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) আইএমএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এসব প্রশ্ন তোলেন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদ দেয়। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংস্থাটির প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সমস্যা, সংস্কার, কার্যক্রম, পরিচালনা পর্ষদের গঠন ও ঋণ আদায়ে সমঝোতা স্মারক চুক্তি, বিভিন্ন তদবির, ব্যাংক খাতের সংস্কার, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা, খাত ভিত্তিক আর্থিক ইন্ডিকেটরস, বিভিন্ন ব্যাংকের অনিয়মের বিরুদ্ধে গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
পাশাপাশি ১০টি দুর্বল ব্যাংকের জন্য নেওয়া উদ্যোগ, ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্ট (এফএসএসপি) বাস্তবায়ন, ব্যাংক সুপারভিশন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন (সংশোধন) আইনসহ ৫টি অন্যতম আইনের বিষয়েও জানতে চাই প্রতিনিধি দলটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাবেক আমলাদের। সচিব এবং সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার এসব আমলারই ব্যাংকের পরিচালনায় কতটুকু ভূমিকা রাখছে এবং কীভাবে রাখছে তাজানতে চেয়েছে আইএমএফ।
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। আলোচনার শুরুতেই আইএমএফ আমাদের বোর্ড মিটিংয়ের এজেন্ডাগুলো কীভাবে নির্ধারিত হয়, কী কী বিষয় স্থান পায়, কীভাবে আলোচনা হয় তা জানতে চায়।
তিনি জানান, প্রতিনিধি দল ব্যাংকগুলোর ঋণ খেলাপি বৃদ্ধির কারণ নিয়েও কথা বলেন। এছাড়া ঋণ পুনঃতফসিল করতে বোর্ড মিটিংয়ে অ্যাজেন্ডা, কীভাবে পুনঃতফসিল হয়, রিশিডিউল করতে কোনো কোনো চাপ থাকে কি না সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যানই সাবেক আমলা। এখানে তাদের ভূমিকা ও প্রভাব কতটা তা জানতে চায় তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সব আলোচনাই ফলপ্রসু হয়েছে। আইএমএফ প্রতিনিধিদলকে আমাদের পক্ষ থেকে সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে।