বিএনপির দূর্গে শিবগঞ্জে ইউনিয়ন নির্বাচনে পরাজিত হলেন সকল স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা
প্রকাশ : 2021-11-16 12:18:19১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নেয়া চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিএনপির কোনো নেতাই বিজয়ী হতে পারেননি। অন্তর্কোন্দলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা বিরাজ করায় এবারের ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির সকল নেতা পরাজিত হয়েছেন বলে মনে করছেন উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির সমর্থকরা বলছেন বিএনপির প্রবীণ নেতারাসহ অনেক নেতা-কর্মী প্রচার-প্রচারণায় অংশ না নেয়ায় তাদের এই ভরাডুবি হয়েছে। এবার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলায় বিএনপির ৯ নেতা ও যুবদলের ১ নেতা অংশ নিয়েছিলেন। তারা হলেন- বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে ওবায়দুল রহমান। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। সদর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আব্দুল ওয়ারেজ, আবু বক্কর সিদ্দিক ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ সাবু। ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে বিএনপি নেতা খন্দকার মোহাম্মদ রমজান আলী। সৈয়দপুর ইউনিয়নে মাহমুদ হোসেন তৌফিক। দেউলী ইউনিয়নে বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেন ওরফে মোহতাসিম বিলা। মাঝিহট্ট ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আকবর আলী। বিহার ইউনিয়নে জুলফিকার হাসান শাওন। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। রায়নগর ইউনিয়নে যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান হিরু।
উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির একক ব্যক্তির আধিপত্য কেন্দ্র করে দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে এক নেতার সঙ্গে আরেক নেতার বিরোধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ইউপি নির্বাচনে। ফলে বিএনপি নেতারা জয়ী হতে পারেননি।
বিএনপির সমর্থকরা জানান, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মাঝে একধরনের হতাশা কাজ করছে। এবার দেখা গেছে দেখা গেছে বিএনপি নেতাদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় দলটির অনেক নেতাই সক্রিয় ছিলেন না। দলীয় কোন্দলের কারণে ইউনিয়ন বিএনপির অনেক প্রবীণ নেতা নীরব ভ‚মিকা পালন করেন। এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, এই ইউপি নির্বাচন ছিল একটি পাতানো নির্বাচন। এছাড়া বিএনপি যেহেতু এই ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। তাই উপজেলা কোনো সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ নেতাকর্মীরা প্রচারপ্রচারণায় অংশ গ্রহণ করেনি। গত বৃহস্পতিবার উপজেলায় ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও রহবল গ্রামের রহবল উচ্চবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া দ্বিমুখী ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশ, আনসারসহ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও সংশিষ্টদের অবরুদ্ধ করার ঘটনাও ঘটে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরে প্রায় তিন হাজার মানুষ ভোট কেন্দ্রের পাশে বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ, টিয়ার ও গুলি ছুঁড়ে। ওই সময়ও বিক্ষুব্ধ জনগণ পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত থেমে থেমে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে বিক্ষুব্ধ জনগণের। পরে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। পরদিন শুক্রবার নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় বিএনপি নেতা-কর্মীসহ ৫২ জনের নাম উলেখ করে মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয় আরো ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে। উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান বাদি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। আনিছুর বগুড়া সোনাতলা থানার এসআই। তিনি নির্বাচনের দিন শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন।