বাগেরহাট সংবাদ
প্রকাশ : 2023-03-23 09:51:55১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
উপকূলের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করলেও নিরাপদ খাবার পানির সংকট
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। প্রতিদিন পানির চাহিদা বাড়ছে কিন্তু বাড়ছে না সুপেয় পানির পরিমাণ ও আধার। পানির উৎস পুকুর, দীঘি, জলাশয়, নদ-নদী-খাল-বিল হ্রাস পাচ্ছে। যার বড় কারণ হচ্ছে দখল ও দূষণ। অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা, পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। উপকূলের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে কিন্তু নিরাপদ খাবার পানি নাই। বুধবার সকালে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, লিডার্স ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে উপকূলীয় অঞ্চলে সবার জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবিতে খালি কলসি হাতে পুকুরে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বক্তারা এ কথা বলেন। ’পানি, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সমাধানে পরিবর্তন ত্বরান্বিতকরণ’ শ্লোগানে বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ব পানি দিবসে পুকুরে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর মোংলার আহ্ধসঢ়;বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা কমলা সরকার, মার্টিন সরকার, হাছিব সরদার, জলবায়ু যোদ্ধা তন্বী সর্দার, চন্দ্রিকা মন্ডল, প্রভূদান সর্দার, চিন্ময় ঢালী প্রমূখ। অবস্থান কর্মসুচিতে বক্তারা আরও বলেন, পানির অবাধ প্রবাহ ও ন্যায় সংগত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা প্রদান, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা ও পানি দূষণ কমাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অঙ্গীকারবদ্ধ। বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলে নিরাপদ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বক্তারা পানিকে পন্যে পরিণত না করে বরং সেবামূলক খাত হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাগেরহাটে জমিসহ ঘর পেলেন ৬৯৬ ভূমিহীন পরিবার
বাগেরহাটে আবারও জমিসহ ঘর পেলেন হতদরিদ্র ৬৯৬ ভূমিহীন পরিবার। বুধবার সকালে (২২মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্চুয়ালি এই ঘর প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে বাগেরহাট স্বাধীনতা উদ্যানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ভূমিহীন পরিবার গুলোর মাঝে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্থান্তর করেন।এসময় বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাছনিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বুলবুল কবির, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নিহার রঞ্জন সাহা, ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, আওয়ামী লীগ নেতা বশিরুল ইসলামসহ উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। বিনামূল্যে জমিসহ ঘর পেয়ে খুশি হতদরিদ্ররা। বাগেরহাট সদর উপজেলার লাউপালা আশ্রয়কেন্দ্রে জমিসহ ঘর পাওয়া শিখা রানী অধিকারী বলেন, কখনও ভাবিনি দালানে থাকব, নিজের জমি হবে, জমির মালিক হিসেবে স্টাম্পের উপর নিজের ছবি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এই জমিসহ ঘর পেলাম, স্থায়ীভাবে দালানে থাকতে পারব এটা ভেবেই ভাল লাগছে। একই আশ্রয়ণকেন্দ্রে ঘর পাওয়া ফাতেমা বেগম বলেন, নিজের জমি না থাকায়, রাস্তার পাশে এবং মানুষের বাড়িতে থাকতাম স্বামী সন্তান নিয়ে। জমিসহ ঘর পেয়েছি, নিজের ঠিকানা হয়েছে। বাকি জীবন আশ্রয়ণকেন্দ্রেই কাটাতে চাই। শুধু ফাতেমা এবং শিখা নয়, বাগেরহাট জেলায় ঘরপ্রাপ্ত ৬৯৬ ভুমিহীন পরীবারের সদস্যদের অভিব্যক্তি একই রকম। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ের ১২৫ টি ও চতুর্থধাপে ৫৭১ টি মোট ৬৯৬ টি ঘর নির্মান সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৪৪, মোংলায় ২২০, মোরেলগঞ্জে ১৩৭, কচুয়ায় ১০, ফকিরহাটে ৭৫, মোল্লাহাটে ৮৩, রামপালে ২০, চিতলমারী ৩২টি এবং শরণখোলা উপজেলায় ৭৫টি ঘর রয়েছে। চতুর্থধাপে প্রতিটি সেমিপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার, ৫শ’ টাকা। দুই শতাংশ জমিতে নির্মান করা প্রতিটি ঘরে বাড়িতে দুটি বেড রুম, একটা কিচেন রুম, একটা ইউটিলিটি রুম, একটা টয়লেট ও একটা বারান্দা রয়েছে। বারান্দার সামনে ফাকা জায়গাও রয়েছে। দুর্যোগ সহনীয় এসব ঘর হবে টেকসই এবং প্রতিটি ঘরে থাকবে সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে হতদরিদ্রদের মাঝে এই ঘরগুলো দেওয়া হয়েছে। উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সাথে কাজ করা হয়েছে। দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা এখানে ভাল থাকবেন। ঘরপ্রাপ্তদের সবধরণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে আশে পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, মসজিদ-মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়, খেলার মাঠ, ফুল-ফলের বাগান করে দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে সুপেয় পানির প্রাপ্ত নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে নলকূপ। এছাড়া উপকারভোগীদের সব ধরণের আরও নানা পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান জেলার এই শীর্ষ কর্মকর্তা।