বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলায় মা-দুই ছেলে আহত
প্রকাশ : 2022-03-20 19:42:01১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

জোর পূর্বক জমি দখলে নিতে বাগেরহাট সদর উপজেলার পার কুরশাইল গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শেখ হোসেন আলীর ছোট ভাই অসহায় পঙ্গু সলেমান শেখের স্ত্রী ও সন্তানের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় জিহাদ শেখ ও খালিদ শেখসহ ৯-১০ জনের হামলায় সলেমান শেখের স্ত্রী নাজমা বেগম ও দুই ছেলে আহত হয়েছেন। গুরুত্বর আহত অবস্থায় নাজমা বেগমের বড় ছেলে বেলাল শেখ(২৪) খুলনা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ছোট ছেলে জালাল শেখ (১৯) বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারীরা তার ঘেরের ৩ লক্ষ টাকার মাছ লুটে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। এঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন অসহায় পঙ্গু সলেমানের স্ত্রী আহত নাজমা বেগম।
বাগেরেহাট সদর উপজেলার পারকুরশাইল গ্রামের নাজমা বেগম বলেন, আড়পাড়া কুরশাইল মৌজায় ক্রয়কৃত এক একর ২৩ শতক জমি আমরা ৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। ওই জমিতে আমাদের মৎস্য ঘের রয়েছে। কিছুদিন ধরে পারকুরশাইল গ্রামের আশরাফ আলী শেখের ছেলে জিহাদ শেখ ও খালিদ শেখ আমাদের এই জমি দখলের চেষ্টা শুরু করে। জমি রক্ষায় আমরা বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারার আবেদন করি। আদালতের নির্দেশে সহকারি কমিশনার ভূমি সরজমিন তদন্ত করে ওই জমিতে আমাদের মৎস্য ঘের রয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর পরেও জিহাদ, খালিদ ও সুমন আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৩ মার্চ) সকালে আমি, আমার দুই ছেলেসহ কয়েকজন ওই ঘেরে মাছ ধরতে গেলে জিহাদ, খালিদ, সুমন, শিমুল, হাকিম, জুয়েল, রাসেলসহ ১০-১১ জন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের এলোপাথারি পিটুনিতে আমি, আমার বড় ছেলে বেলাল শেখ ও জালাল শেখগুরুত্বর আহত হই। গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আমার বড় ছেলে বেলাল শেখকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। বেলালের নাকের বাসি ফেটে গেছে, আমার ছেলে বাঁচবে কিনা জানিনা এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
নাজমা বেগম আরও বলেন, আমার স্বামীর বড় ভাই শেখ হোসেন আলী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। আমার স্বামী সলেমান খান পঙ্গু, তার একটি পা নেই, দুই ছেলেই পড়াশুনা করে। এই সুযোগে আমার জমি দখলের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তারা। তারা শুধু আমাদের মারধর করেনি, আমার ঘেরের ১৪টি বস্তায় ১২ মন মাছ নিয়ে গেছে। যার মূল্য আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা। আমি এর অন্যায়ের বিচার চাই।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জালাল শেখ বলেন, ভাইয়া নর্দান বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে পড়েন, আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিব। আমরা দুই ভাই কারও সাথে কোন ঝগড়া বিবাদে যাই না। নিজেদের জমিতে মাছ ধরছিলাম, তখন এসে আমাদের উপর অতর্কীত হামলা করেছে তারা। এতে ভাইয়ার নাক ফেটে গেছে, অনেক জায়গা জখম হয়েছে। আমারও হাত, পা, পিঠসহ কয়েক জায়গা জখম হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, মারধর ও ঘের দখলের চেষ্টার একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।