বাগেরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ
প্রকাশ : 2024-08-30 18:53:19১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক ঝুমা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ভোটার পরিবর্তন করে জালিয়াতির মাধ্যমে উপজেলা কোটায় চাকরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ঝুমা ভট্টাচার্য কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের পি,কে সম্মানকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঝুমা ভট্টাচার্য বাগেরহাট সদর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়েনের রাখালগাছি গ্রামের বিপ্লব গোস্বামীর স্ত্রী।
প্রত্যক্ষ সুত্রে জানা যায়, গত ২০২৩ সালে ২৩ মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এর সার্কুলার প্রকাশ হলে বাগেরহাট সদর উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া স্বত্বেও কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা হয়ে কাগজপত্র জালিয়াতি করে আবেদন করেন শিক্ষিকা ঝুমা ভট্টাচার্য। ২০২৪ সালে ৩রা ফেব্রুয়ারী লিখিত পরিক্ষার তারিখ প্রকাশ হলে তরিঘরি করে শিক্ষিকার স্বামী বিপ্লব গোস্বামী কচুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে চাকরির সুবাধে ২৯ ফেব্রুয়ারী ভোটার পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু অলৌকিক উপায়ে মাত্র যাচাই ও কাগজপত্র ছাড়া ২ দিনের মধ্যে ০২ মার্চ ভোটার আইডি কার্ড হাতে পান ঝুমা ভট্টাচার্য।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার হিমাশু কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি এই বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে জানিনা তবে আবেদনের জন্য সাধারনত জায়গা জমির দলিল, বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন ও সনাক্তকারী থাকতে হয় বরৈ তিনি জানান।
এ বিষয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে নির্বাচন অফিসার গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি। তবে নির্বাচন অফিসে চাকরিরত বিপ্লব গোস্বামীকে কাগজ পত্র আনার জন্য নির্বাচন অফিসার নির্দেশ দিলেও চালাকি করে স্টরের চাবি নেই বলে। তবে সাংবাদিকরা বিপ্লব গোস্বামীকে সিসি ক্যামেরা ফুটেজে স্টোর ঘরে তালা মারতে দেখে।
এই বিষয়ে কচুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান হাদিজ জানান, সাধারনত প্রত্যয়ন নিতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা হতে হয়। সেখানে জায়গা জমির দলিল বা রেজিষ্টিকৃত টোকেন দেখাতে হয়। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ বিষয়ে তথ্য গোপনের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান ।
তবে খোজ আরো জানা যায়, অবৈধভাবে ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হওয়ার জন্য প্রত্যয়ন পত্র দিলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য চুড়ান্ত কাগজপত্রর জন্য চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট দেন ৪ নং ওয়ার্ডের। তবে সকল বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা যায় পুরো চাকরিটা নিয়েছেন জালজালিয়াতি মাধ্যমে।
এ বিষয় ঐ শিক্ষিকার স্বামী বিপ্লব গোস্বামী কাছে চাকরির আবেদন ২৩ সালে ভোটার পরিবর্তন ২৪ সালে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে পারেনি এছাড়া তিনি কোন ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেটাও ঠিকমত বলতে পারেনি। তবে জায়গা জমির বিষয়ে জানতে চাইলে রেগে গিয়ে বলেন আমার জায়গা আছে।
কচুয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক চাকরি প্রত্যাশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা স্থানীয় বাসিন্দা হয়েও ভাইভা বোর্ড থেকে কষ্ট নিয়ে ফিরতে হয়। কিন্তু অনেকে জল জালিযাতের মাধ্যমে অবৈধভাবে আবেদন করে চাকরি নেয়। এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে সঠিকভাবে তদারকি করে দেখার জন্য অনুরোধ জানান।
তবে স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যাক্তিবর্গ এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন ভোটার আইডি কার্ড পরিবর্তন করার আগে কিভাবে কচুয়া উপজেলার নাম উল্লেখ্য করেছে এই বিষয়ে সঠিক তদন্ত করার জন্য বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসাঃ শামসুন্নাহার বলেন, জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই, কারন নিয়োগ পত্রে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ্য আছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে যদি চাকরি বিষয়ে অবৈধ ও কাগজপত্র জালিয়াতির প্রমান পাওয়া যায় তাহলে নিয়োগ বোর্ড চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য থাকিবে।
বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) নাসরিন আক্তার বলেন, এই বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। তবে বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।