বাগেরহাটে নিখোঁজ মেয়েকে ফিরে পেতে বাবা-মায়ের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ : 2021-08-11 19:35:03১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ঢাকায় গৃহ পরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া মেয়ে আনজুমান আরা (১৬) কে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন অসহায় বাবা-মা। বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ আনজুমান আরার বাবা মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী এলাকার আনসার আলী খান এই আকুতি জানান। এসময়, নিখোজ আনজুমান আরার মা টুকটুকি বেগম, চাচা মোঃ আছাদ, মামুন, নিকট আত্মীয় এমরান শেখ উপস্থিত ছিলেন।
আনছার আলী খান বলেন, পার্শ্ববর্তী কচুয়া উপজেলার যশোরদি গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফার রহমান সরদার তার মেয়ে পলী বেগমের বাসায় কাজের জন্য আমার মেয়ে আনজুমান আরাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে আমার বাড়ি পলী বেগম ও তার স্বজনরা আনজুমান আরাকে ঢাকার কল্যানপুর ১১ নম্বর রোডের ৪৭ নং বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে কাজ করে নানা সমস্যার কথা আনজুমান আরা আমাদেরকে জানাত। পলি আমার মেয়েকে বাড়ি আসতে দিত না। বিভিন্ন সময় আমার মেয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা পলিকে বললেও পলি দেয়নি। সর্বশেষ ২০ জুলাই বেলা ১১টায় পলি ফোন করে জানায় আনজুমান আরাকে খুজে পাচ্ছে না। সেই থেকে আমরাও বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করেও পাইনি। পরবর্তীতে আমরা লুৎফার রহমান সরদার ও তার মেয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আমাদের বিশ্বাস পলি বেগম আমার মেয়েকে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে অথবা ভারতে পাচার করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর আগে লুৎফার রহমান সরদার মোরেলগঞ্জের চাপড়ি গ্রামের ইকবাল গাজীর মেয়েকে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তখন ইকবাল গাজীর মামলায় লুৎফার সরদারকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। মেয়ে আনজুমান আরাকে ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি এই নারী পাচারকারীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
টাকার দরকার নেই, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে এনেদিন এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিখোজ আনজুমান আরার মা টুকটুকি বেগম।
পলি বেগম বলেন, আনজুমান আরাকে ঢাকায় আনার পরে সন্তানদের মত করে রেখেছি। বাসার সিসি টিভি ফুটেজে দেখেছি ২০ জুলাই বাসা থেকে বের হয়ে একটি ছেলের সাথে সিএনজিতে করে গেছে।আসলে আমাদেরকে বিপদে ফেলার জন্য আনজুমানের বাবা-মা এসব মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।
পলির বাবা লুৎফার রহমান সরদার বলেন, আনজুমান আরা নিজেই চলে গেছে আমার মেয়ের বাসা থেকে। তাকে আমরা লুকিয়ে রাখিনি বা পাচার করিনি। কোন রকম অন্যায় কাজের সাথে আমরা জড়িত না। মূলত আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই অপপ্রচার করছে তারা।যে অভিযোগে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করেছিল ওটাছিল মিথ্যা মামলা। ওই মামলায় মাত্র একদিন আমি জেল খেটেছি। পরবর্তীতে আমি মামলা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছি।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আনছার আলী খানের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। নিখোজ মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।