বাগেরহাটে দূর্বৃত্তের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা নেতা আহত

প্রকাশ : 2022-06-16 10:00:04১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

বাগেরহাটে দূর্বৃত্তের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা নেতা আহত

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দূর্বৃত্তের হামলায় তেলিগাতী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জেল শেখ (৭৫) গুরুত্বর আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে উপজেলার তেলিগাতী গ্রামে ওই মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে প্রবেশ করে তার উপর হামলা করে পালিয়ে যায় চার সদস্যের দলটি। পরবর্তীতে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের দাবি স্থানীয় শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া পদে নিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার আদেশে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আবুল কালাম বলেন, শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ে আয়া পদে আমার বোন আবেদন করেছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। আমার বোনকে নিয়োগ পরীক্ষায় ডাকেওনি। এর কারণে আমরা আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার আমার বাবার উপর হামলা করিয়েছে। বাবার অবস্থা খুব খারাপ গোপনাঙ্গ থেকে রক্ত ঝড়ছে বাঁচবে কিনা জানি না। যারা হামলা করেছে তারা আমাদের এলাকার নয়, তারা চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তারের নির্দেশেই এই হামলা করেছে।

এদিকে হামলাকারীদের শনাক্ত ও বিচারের দাবিতে বুধবার (১৫ জুন) সকালে তেলিগাতী বাজারে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মুজিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তেলিগাতী এলাকার ২৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী হাওলদার এমদাদুল হকসহ অর্ধশতাধিক লোক অংশগ্রহন করেন।

তেলিগাতী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মুজিবুর রহমান খান বলেন, চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার ও তার স্বামী শফিকুল ইসলাম নান্টুর লোকজন এর আগেও সলেমান সরদার নামের এক মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করেছে। এখন ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জেল শেখকে মারা হল। এই হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।

আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জেল শেখ বলেন, হাঠৎ করে বাড়ির মধ্যে এসে চার যুবক আমাকে মারধর করেন। আমার গোপনাঙ্গে লাথি মারাসহ পুরো শরীরে আঘাত করেছে তারা। শেষ বয়সে আমাকে এভাবে মারল, এই মারধরের বিচার চাই এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মুক্তিযোদ্ধা তোফজ্জেল।

শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে মারধরের কথা উঠেছে বিষয়টি সঠিক না।

চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। ওইদিন আমার পরিষদ থেকে দুটি মেয়ে তার বাড়িতে ট্যা· আদায়ের জন্য গেছিল। তাদেরকে আরও মারধর করেছে মুক্তিযোদ্ধার ছেলেরা। ওই মেয়েরা এখন মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি।
বিদ্যালয়ে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে বিদ্যালয়ের আয়া পদে আবেদন করেছিল। ত্রুটিপূর্ণ থাকায় তার আবেদনটি নিয়োগ পরীক্ষার আগেই বাতিল হয়ে যায়। যার নিয়োগ হয়েছে তার বেতনও হয়ে গেছে। এটা নিয়ে কোন বিতর্কের সুযোগ নেই।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনা শুনেছি। আমরা খোজখবর নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে এখনও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।