বাগেরহাটে টিকটক করানিয়ে দ্বন্দ্বে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় স্বামী

প্রকাশ : 2021-05-09 17:46:30১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

বাগেরহাটে টিকটক করানিয়ে দ্বন্দ্বে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় স্বামী

ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের সময় দুজনই ছিলেন বেকার। আয়–রোজগার না থাকায় ‘টিকটক’ ও ‘লাইকি’ অ্যাপস দিয়ে নানা ধরনের ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট দিতেন তাঁরা। কিন্তু এসব অ্যাপসে স্ত্রী ভীষণ আসক্ত হয়ে পড়েন। এ নিয়ে ঝগড়া হয়। এ ঝগড়ার জেরে স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 গতকাল শনিবার রাতে বাগেরহাট শহরের দশানী এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার পর স্বামী আবদুল্লাহ আল নাইম থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। পুলিশ দাবি করেছে, আবদুল্লাহ আল নাইম প্রাথমিকভাবে তাঁর স্ত্রী সোমা আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

 মারা যাওয়া সোমা আক্তার (২০) বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সিংড়াই গ্রামের আবদুল করিম বকসের মেয়ে। সোমা বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আজ রোববার দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমার মা কোমেলা বেগম বাদী হয়ে জামাতা আবদুল্লাহ আল নাইম ওরফে শান্তর বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। 

অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল নাইম বাগেরহাট শহরের দশানী এলাকার গোলাম মোহম্মদের ছেলে। সে ঢাকার একটি বায়িং হাউসে চাকরি করতেন।
আবদুল্লাহ আল নাইম বাগেরহাট শহরের দশানী এলাকার গোলাম মোহম্মদের ছেলে। সে ঢাকার একটি বায়িং হাউসে চাকরি করতেন।

 সোমা আক্তারের বড় বোন নাজমা আক্তার জানান, সোমা ও নাইম নিজেদের পছন্দে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তখন তাঁরা দুজনই বেকার ছিলেন। বিয়ের পর টিকটক ও লাইকিতে নানা ধরনের ভিডিও তৈরি করে ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করতেন দুজন। তাঁরা সেখান থেকে রোজগারও শুরু করেন। এর মধ্যে চাকরি পেয়ে নাইম ঢাকায় গেলে সোমা তাঁর বাবার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করা শুরু করেন। পাশাপাশি ওই অ্যাপসগুলোতে নিয়মিত ভিডিও দিতেন তিনি। সেখান থেকে আসা আয়ে সোমার ভালোই চলছিল।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কলেজছাত্রী সোমা টিকটকে নানা ভিডিও বানিয়ে তাঁর ফেসবুক একাউন্টে তা পোস্ট করতেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর স্বামী তাঁকে এ কাজ করতে নিষেধ করে আসছিলেন। সোমা তাঁর নিষেধ না শুনে ভিডিও বানিয়ে আপলোড করে যাচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। শনিবার বিকেলে নাইম ঢাকা থেকে বাড়ি এসে স্ত্রী সোমাকে আসাতে ফোন করেন। ওই ফোন পেয়ে সোমা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন।

 বাগেরহাট মডেল থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটার দিকে টিকটক অ্যাপসে ভিডিও তৈরি করা নিয়ে দুজনের মধ্যে বিবাদ হয়। এর একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে নাইম তাঁর স্ত্রী সোমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তিনি থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমরা তাঁর বাড়ি থেকে সোমার লাশ শনিবার রাতেই উদ্ধার করি। এ ঘটনা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার আবদুল্লাহ আল নাইম আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হয়েছেন।’