বরগুনায় পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি
প্রকাশ : 2025-06-18 16:33:15১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

পাওনা টাকা চাইতে গেলে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বরগুনার পুলিশ লাইন সড়কের মৃত জিয়াউল আহসান মিন্টু জোমাদ্দারের স্ত্রী মোসাঃ ফেরদৌসী বেগম এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মেয়র শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুর ১২টায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বরগুনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন তার নিকটতম প্রতিবেশী ও পারিবারিক বন্ধু। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ থেকে তারা একসাথে পুলিশ লাইনে পাশাপাশি বসবাস করে আসছেন। তার স্বামী মিন্টু জোমাদ্দার ও একমাত্র ছেলে রনি জোমাদ্দার জীবিত থাকাকালে শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে ব্যবসায়িক বহু লেনদেন ছিল, যা তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন ও জানেন।
তিনি জানান, তার স্বামী ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে এবং ছেলে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ১৬ নভেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী ব্যবসার জন্য তার কাছ থেকে প্রথমে ২০ লাখ, পরে ৫ লাখ ও ৩ লাখ—মোট ২৮ লাখ টাকা নেন।
ফেরদৌসী বেগম অভিযোগ করেন, ২০২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত তিনি টাকার কোনো হিসাব পাননি। শাহাদাত হোসেন “দিচ্ছি, দিচ্ছি” বলে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। শত কোটি টাকার মালিক হয়েও তিনি টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।
পরবর্তীতে ফেরদৌসী বেগমের জামাতা ব্যবসায়ী সোহেল পঞ্চায়েত টাকার বিষয়ে তাগিদ দিলে শাহাদাত হোসেন বিরক্ত হয়ে হুমকি ধামকি দিতে শুরু করেন। ঈদুল আজহার দুই দিন পূর্বে কিছু অপরিচিত যুবক তার বাসায় এসে হুমকি দিয়ে যায়—“আপনি মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে কোনো টাকা পাবেন না। যদি আপনার জামাই আবার টাকা দাবি করে, তাহলে বুঝে নিন—জীবন আগে, না টাকা আগে?”
এই ঘটনার পর ফেরদৌসী বেগম তার এতিম দুই নাতনী নিয়ে ঘর ছেড়েছেন। তিনি এখন মেয়ের বাসায় এবং পুত্রবধূ ও নাতনীরা অবস্থান করছেন নানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানের কেজি স্কুলসংলগ্ন বাসায়।
তিনি আরও বলেন, শাহাদাত হোসেনের লোকজনের দেওয়া প্রাণনাশের হুমকির কারণে তারা বাসায় ফিরতে পারছেন না। তিনি আশঙ্কা করছেন, টাকার জোরে শাহাদাত হোসেন তাদেরকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিতে পারেন। এমনকি তার বড় নাতি রেজওয়ান, যিনি এ বছর বরগুনা জিলা স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী, শাহাদাত হোসেনের ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে বাইরে কোচিং বা প্রাইভেট পড়তে যেতে পারছেন না।
তিনি তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পাওনা টাকা ফেরতের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌসী বেগমের কন্যা, জামাতা সোহেল পঞ্চায়েত, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।