বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কমিটির প্রস্তাব ড. ইউনূসের

প্রকাশ : 2024-08-23 11:10:17১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কমিটির প্রস্তাব ড. ইউনূসের

বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে দুই দেশ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ভারত সরকারকে এই প্রস্তাব দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ‘ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আমরা যে ধরনের ফ্ল্যাগ মিটিং করি, উচ্চ পর্যায়ের এমন একটি কমিটি করা গেলে এটি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মিটিং করবে এবং উভয় দেশ যৌথভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে।’ খবর- বাসস

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারত আন্তঃসীমান্তে অবস্থিত এবং অনেক আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, সুতরাং এ ধরনের উদ্যোগ বন্যার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের জন্য সহায়ক হবে।

ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর অমীমাংসিত পানির হিস্যার বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। ভারতের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বিমসটেক ও সার্ককে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সার্কভুক্ত দেশের তরুণরা নিজেদের সমৃদ্ধির জন্য যেন একসঙ্গে কাজ করতে পারে আমদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি দূঢ়ভাবে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুতপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করি।’

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ত্রিপুরায় এবার যে বন্যা হয়েছে তা নজিরবিহীন। সেখানে ৫০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ত্রিপুরায় পানির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে উপচে পড়ে পানি বাংলাদেশে ঢুকেছে।

ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ: প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।  প্রেস সচিব বলেন, ‘ভারতের হাইকমিশনার জানিয়েছেন যে, দূতাবাস এবং বাংলাদেশে ভারতের অন্যান্য স্থাপনা নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু পোস্ট দেওয়া হচ্ছে, যা দুঃখজনক। যাঁরা এটি করছেন, এটি খুব দুঃখজনক।’

আলোচনায় সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গ: প্রেস সচিব জানান, আলোচনায় সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গটি এসেছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন যে, সংখ্যালঘু নিয়ে কিছু সংবাদ অতিরঞ্জিত। এটির জন্য তিনি ভারতের সাংবাদিকদের আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ সফরের জন্য। তাঁরা যেন নিজের মতো করে ঘুরে দেখেন-কোথায় কী হয়েছে।

জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগ নিয়ে আলোচনা: প্রেস সচিব জানান, দুই দেশের জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগ নিয়ে কথা হয়েছে। হাইকমিশনার জানিয়েছেন, গত বছর ১৬ লাখ বাংলাদেশি চিকিৎসা, পর্যটনসহ নানা কারণে ভারত সফর করেছেন।