প্রস্তাবিত বিক্রমপুর স্যার জে, সি, বোস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতকাহন
প্রকাশ : 2021-08-07 08:40:09১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ঢালী আমিরুল ইসলাম
সম্ভবত ১৯৭৭ সালের দিকে তৎকালীন সরকার ঢাকা মাওয়া রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন । সে সময়ের মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল আমিনুল ইসলামের তত্বাবধানে সে সময়ে রাস্তার কাজটি এগিয়ে নেওয়া হয় । ঢাকা মাওয়া রাস্তার কাজ শুধু মাত্র যে বিক্রমপুরের জন্য জনসাধারণের সুবিধার্থে তখন করা হয়েছিল তা কিন্তু নয় । রাস্তার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলকে কাছে টানা , এবং দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে ঢাকার সড়ক পথ বা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করা । দক্ষিণ অঞ্চলকে কাছে টানার সুবাদে বিক্রমপুরের জন্য ঢাকা মাওয়া পথ আজ শাপেবর হয়ে দেখা দিয়েছে । এক সময় মুন্সীগন্জ তথা বিক্রমপুর ঢাকার অতি কাছের জেলা হওয়া সত্বেও ঢাকার সাথে বিক্রমপুরের যোগাযোগ ব্যবস্হা ছিল অত্যন্ত অনুন্নত ।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বিক্রমপুরের অনেক জাদরেল নেতা, মন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ক্ষমতায় থাকা সত্বেও বিক্রমপুরের সাধারণ জনগণের স্বার্থে তারা যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ উল্লেখ করার মত কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নাই । তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডাঃ বি চৌধুরী, প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদ, তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রী মিজানুর রহমান সিনহা , মিজানুর রহমান শেলী , সামসুল ইসলাম, নাজমুল হুদা, এয়ার ভাইস মার্শাল আমিনুল ইসলাম, কোরবান আলী, শাহ্ মোয়াজ্জে হোসেন এরা সকলেই বিভিন্ন সরকারের সময় বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন ।
আমাদের জানামতে, পূর্ব পাকিস্তানে হাতেগোনা দুই চারজন নেতার মধ্যে মোনায়েম খাঁন তার জেলায় বর্তমান ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, ফজলুল কাদের চৌধুরী চিটাগং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, সবুর খান খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং শাহ্ আজিজ কুষ্টিয়ায় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । বর্তমান মানণীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা প্রত্যেক জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে, তারই দাবিতে উৎসাহিত হয়ে বিক্রমপুরের এক ঝাঁক প্রাণ চঞ্চল তরুন নেতা, প্রথমেই বলতে হয় বাংলাদেশ সরকারের সংসদ শবনম জাহান শিলা, জনাব মাহি বি চৌধুরী, ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা, মৃনাল কান্তি দাস , অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সানজীদা খাতুন, শিরিন আহমেদ, এডভোকেট সোহানা এবং মুন্সীগন্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মহিউদ্দিন আহমেদ এগিয়ে এসেছেন । তাদের সকলকে স্বাগত জানাই ।
মুলতঃ বিক্রমপুরে স্যার জে,সি, বোস বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে, বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন পরিষদ ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ঢাকায় বিকশিত বিক্রমপুরের ব্যানারে একটি সভা হয় । সেই সভায় উপস্হিত ছিলেন, যুগ্ন সচিব জনাব নজরুল বিক্রমপুরি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক আবুজাফর আহমেদ মুকুল, ডাক্তার রাশিদুল ইসলাম, আবদুর রশীদ খান, খোরশেদ আলম চৌধুরী, ঢালী আমিরুল ইসলামসহ আরও অনেকে । সেই সভায় বিক্রমপুর জে,সি, বোস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে আলোচনা করা হয় ।
পরবর্তিতে লৌহজং কলেজের একটি সভায় ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর লৌহজং কলেজে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় । সেদিন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ঢাকা থেকে গাড়ি পাঠিয়ে আমাদের লৌহজং কলেজে যাওয়ার ব্যবস্হা করেছিলেন এবং দুপুরে লৌহজং কলেজে তার মায়ের হাতের রান্না ভাত খাওয়ার ব্যবস্হা করেছিলেন । পরবর্তিতে রাড়িখাল স্কুল এন্ড কলেজের আলোচনা সভায় স্যার জে, সি, বোস বিশ্ববিদ্যালয়টি তার পৈত্রিক ভিটায় প্রতিষ্ঠিত হবে তা চূড়ান্ত করা হয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন চ্যানেলে তা প্রচার করা হয় ।
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন পরিষদের মডারেটর আবুজাফর আহমেদ মুকুল এবং কিছু সদস্য, সংসদ জনাব মাহি বি চৌধুরীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আলোচনা করেন । স্হানীয় সাংসদ জনাব মাহি বি চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন পরিষদের হাতে একখানা ডিও লেটার , মানণীয় প্রধান মন্ত্রীর বরাবরে প্রেরনের জন্য হস্তান্তর করেন ।
২০২১ , ২৮ জুন মানণীয় সংসদ শবনম জাহান শিলা তার নিজস্ব ডিও লেটার এবং মানণীয় সংসদ, জনাব মাহি বি চৌধুরী র ডিও লেটারসহ তিনি নিজে মানণীয় প্রধান মন্ত্রীর নিকট সরাসরি হস্তান্তর করেন এবং ৩০, জুন মানণীয় শিক্ষা মন্ত্রীকে একই আবেদন পত্র হস্তান্তর করেন ।
এখানে উল্লেখ করতে হয়, বিক্রমপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখেছি। কিন্তু এই বিষয়ে আমরা উল্লেখযোগ্য কারো কোন ভূমিকা কখনো দেখিনি । মানণীয় সংসদ শবনম জাহান শিলা যে কাজটি করতে পেরেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখেন । বিক্রমপুরে যে তার শিকড় প্রোথিত। বিক্রমপুরের প্রতি যে তার শিকরের টান তা তিনি প্রমাণ করেছেন ।
আমাদের কথা মুন্সীগন্জ জেলা তথা বিক্রমপুরের জনগণের একটি মাত্র দাবি আমরা বিক্রমপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চাই । এই একটি মাত্র ছাতার তলে আমরা দলমত নির্বিশেষে সকলেই একত্রিত হবো। আমরা একটি একটি করে সুন্দর সুন্দর প্রকল্প হাতে নিয়ে বিক্রমপুরকে একটি আধুনিক শহরে রুপান্তরিত করবো, এই লক্ষ্য আমাদের অটুট রেখে আমরা এগিয়ে যাব।