পদত্যাগ আফগানিস্তান প্রেসিডেন্টের, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বোরকার দাম

প্রকাশ : 2021-08-15 20:15:24১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পদত্যাগ আফগানিস্তান প্রেসিডেন্টের, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বোরকার দাম

কাবুলে তালেবানের প্রবেশের পর পদত্যাগ করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এর ফলে প্রায় দুই দশক পর ফের আফগানে শুরু হতে যাচ্ছে তালেবান শাসন। আর তালেবান সরকার গঠনের আগেই দেশটির রাজধানীতে বাড়ছে বোরকার দাম। শহরটির দুই-তৃতীয়াংশ নারীর বয়স ৩০ এর নিচে হওয়ায় অধিকাংশের অভিজ্ঞতা নেই তালেবান শাসন নিয়ে। আর তাই নিকট ভবিষ্যতে কট্টর নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধের ভয়ে আছেন অনেকেই।
 
কাবুলের নারীদের ভীতির সঙ্গে বেড়ে চলেছে বোরকা বিক্রি, চাহিদা ও মূল্য। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এমন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক 'দ্য গার্ডিয়ান'। সেখানে তুলে ধরা হয়েছে স্থানীয় এক নারী আলিয়ার কথা। যিনি কিনা দ্রুত চড়তে থাকা বোরকার দাম নিয়ে দোকানির সঙ্গে কথা বলছিলেন। আলিয়া জানান, ‘গত বছরও বোরকার দাম ছিল ২০০ আফগানি (প্রায় ২১৫ টাকা)। আর এখন তারা এগুলোর দাম চাচ্ছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার আফগানি।’

বহু দশক ধরে আফগান নারীদের পরিচায়ক ছিল ঐতিহ্যবাহী আফগানি বোরকা, যেটা অধিকাংশ সময়েই নীলচে রঙের। ভারী কাপড়ে বানানো এই বোরকার নকশা এমন, যাতে যিনি পরবেন তার মাথা থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত ঢেকে থাকে। চোখের কাছে ঢাকা থাকে জালের মতো এক ধরনের কাপড়ে, যাতে ভেতরে যিনি আছেন তিনি বাইরে দেখতে পারেন, তবে বাইরের কেউ যেন ভেতরে দেখতে না পারে।

১৯৯০-এর দশকে তালেবান সরকার এ ধরনের বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করে। নইলে তালেবানের ‘মোরাল পুলিশ’ এর হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো। তালেবান মুখপাত্র থেকে জানানো হয়েছে, নারীরা কাজে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করতে চাইলে অবশ্যই হিজাব পরে বের হতে হবে। 

সেখানে জানানো হয়েছে, আফগান নারীরা চাইলে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন, তবে অবশ্যই হিজাব পরতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যমকে সমালোচনা করার অনুমতি দেওয়া হবে কিন্তু সচেতনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে এবং শাস্তিযোগ অপরাধের বিচার আদালত পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে।

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবানি শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীদের মুখ, চুলসহ সম্পূর্ণ দেহ ঢাকা বোরখা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। মেয়েদের বয়স ১০ বছরের বেশি হলেই স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। শরিয়া আইনের নামে তারা চালু করেছিল দোররা ও পাথর ছুড়ে হত্যার মত ভয়ঙ্কর সব শাস্তি। ২০০১ সালে মার্কিন বাহিনী তালেবানকে উৎখাত করেছিল আফিগানিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত করার জন্য। কিন্তু দুই দশকেও সেখানে শান্তি আসেনি।