পঞ্চাশ দশকের সঙ্গতিয়া রাইচাঁদ বড়াল
প্রকাশ : 2022-10-19 12:10:44১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রাইচাঁদ বড়াল একজন বাঙালি সুরশিল্পী সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গতিয়া হিসাবে খ্যাতিমান ছিলেন। তিনি ১৯৪০ ও ১৯৫০ এর দশকে অসংখ্য বাংলা ও হিন্দী চলচ্চিত্রের গানে সুরারোপ করেন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে অর্জন করেন।
তরুণ বয়সে রাইচাঁদ কলকাতার সংগীত আসরে এনায়েত খাঁ, হাফিজ আলি খাঁ,জদ্দন বাঈ, গওহর জান,জ্ঞান গোঁসাই, ভীষ্মদেব প্রমুখ বহুগুণী ব্যক্তির সঙ্গে তবলায় সংগত করেছেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় রেডিও স্টেশন স্থাপিত হলে নৃপেন মজুমদারের আহ্বানে বেতারকেন্দ্রে যোগ দিয়ে ভারতীয় সংগীত বিভাগের প্রযোজক হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি চলচ্চিত্রজগতে আসেন এবং নির্বাক ছবি 'চাষার মেয়ে'তে প্রথম সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এরপর সবাকযুগের এক অসামান্য সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে নিজেকে মেলে ধরেন। এদেশে চিত্রগীতির বিবর্তনের ক্ষেত্রে তার কীর্তি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। নির্বাক ছবির যুগে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্র্যাফ্ট-এর তৈরি ‘চোর কাঁটা’ ও ‘চাষার মেয়ে’ ছবি প্রদর্শনকালে তিনি যন্ত্রীদের সাহায্যে উপযুক্ত আবহসংগীত সৃষ্টি করেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত “চণ্ডীদাস”-এ তিনি সেই প্রথম এদেশের সবাক ছবিতে আবহসংগীতের প্রচলন করেন। প্রায় দেড়-শো ছায়াছবিতে সুর দিয়েছেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে নিউ থিয়েটার্সের শব্দযন্ত্রী মুকুল বসুর সাহায্যে নতুন পদ্ধতিতে নৃত্য ও গীতের রেকর্ডিং করে তা 'ভাগ্যচক্র' ছায়াছবিতে সংযোজিত করে শুটিংয়ের সময় গান রেকর্ডিং করার যে অসুবিধা ঘটত তা দূর করেন। ভারতে প্রথম কার্টুন চিত্রের নির্মাতা হিসাবেও তিনি স্মরণীয়। ওয়াল্ট ডিজনির অনুপ্রেরণায় ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে নিউ থিয়েটার্রসের ব্যানারে তিনি "পি ব্রাদার্স" প্রযোজনা করেন। রাইচাঁদের সুর সৃষ্টি সার্থকতা পেয়েছিল পঙ্কজকুমার মল্লিক, কুন্দনলাল সায়গল,কৃষ্ণচন্দ্র দে, কানন দেবী, চন্দ্রাবতী দেবী, উমাশশী, পাহাড়ী সান্যাল প্রমুখ মহান শিল্পীর গানে।
১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে রাইচাঁদ বড়াল ভারত সরকারের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ওই বৎসরেই তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার - দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারেও সম্মানিত হন।
রাইচাঁদ বড়াল ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে নভেম্বর ৭৮ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। প্রখ্যাত কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী ও ভারত সরকারের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় রাইচাঁদ বড়ালের পৌত্র।