পঞ্চগড়ে ভূট্টা ব্যবসায়ীর ট্রাক ছিনতাই করে প্রায় ১৩ লাখ টাকার মাল আত্মসাৎ সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ : 2024-09-17 17:36:52১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ট্রাক মালিক, ড্রাইভার, ও ট্রান্সপোর্টকারীর বিরুদ্ধে অভিনব কায়দায় ভূট্টা বোঝাই দুটি ট্রাক ছিনতাই করে মালামাল বিক্রি ও টাকা আত্মসাত করে ভুট্টা ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম সহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী ভুট্টা ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের সোনাহার বটতলী এলাকায় ভুক্তভোগী ভুট্টা ব্যবসায়ীর আয়োজনে তার ভ্ট্টূার গুদামে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলন ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম, ইউসুফ আলী, সাজেদুর রহমান সাজু, সাবেক ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে স্থানীয় ভূট্টা ব্যবসায়ীরা সহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার কচুকাটা এলাকার ট্রান্সপোর্টকারী এমদাদুল হকের (৫৮) মাধ্যেমে আনিসুর রহমান (৬৮) নামে এক ট্রাক মালিকের দুইটি গাড়ি ভাড়া করা হয়। এতে ড্রাইভার হিসেবে ছিলেন জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা এলাকার মঞ্জুরুল ইসলাম (৪০) ও জাহিদুল ইসলাম (৪৫)। পরে গত ২৩ আগষ্ট এমদাদুল হকের মাধ্যমে ভাড়া করা ট্রাকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া নিউহোপ ফিড মিলে ভূট্টা পাঠানোর জন্য মাল লোড করা হয়। পরে মা জবেদা পরিবহনের ব্যানারে ওই দুইটি ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো ট ১৩৭৯১৪) ও (ঢাকা মেট্রো ট ১২১২৩৯) দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের বটতলী হতে ভূট্টা নিয়ে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্য ছেড়ে যান। যার একটিতে ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ কেজি ও অপরটিতে ১৭ হাজার ৮শ কেজি ভুট্টা ছিল। দুইটি ট্রাকে থাকা ভূট্টার দাম প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা।
তারা আরও বলেন, ভুট্টা নিয়ে মুন্সিগঞ্জের ফিড মিলে না পৌছালে আমরা কর্তৃপক্ষ ও গাড়ির মালিকের সাথে যোগাযোগ করি। তখন জানতে পারি একটি গাড়ি পৌছেছে। আরেকটি গাড়ি গাড়ির চাকা পাংচার ও যান্ত্রিক ক্রটি হওয়ার কারণে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে। তারপরের দিন আবার যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে জানতে পারি উপরোক্ত আসামীরা যোগসাজস করে ভুট্টা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্য ভুট্টা বিক্রি করে দেয়। তবে আমাদের কাছে প্রমাণ পত্র আছে। এর মধ্যে একটি গাড়ি ট্রান্সপোর্টকারীর মাধ্যেমে জব্দ করা আছে। আরেকটির খোঁজ পুলিশের মাধ্যেমে করা হচ্ছে। তবে ট্রাকের মালিক আমাদের নামে মিথ্যা ছিনতাইয়ের মামলা করেছে। যা ভিত্তিহীন ও অবান্তর। আমরা এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ এঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও বিচার দাবী করছি। আমরা এখন পথে বসতে শুরু করেছি। এত টাকা যদি না পাই তাহলে ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। আর বাকীতে কেনা ভূট্টার দাম কৃষকদেরই বা কিভাবে দিবো। আমরা আমাদের ছিনতাই হওয়া ট্রাকের মালামালের টাকা উদ্ধারে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছি। আমরা এর বিচার চাই।
তবে ট্রাকের মালামাল বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাক মালিক আনিসুর রহমান। তিনি বলেন আমরা ট্রাক ছিনতাই করেছে তারা। এজন্য মামলা করেছি। আমি কেন তাদের মাল বিক্রি করতে যাবো। তারা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
ট্রান্সপোর্টকারী এমদাদুল হক বলেন, ট্রাক মালিক আনিসুরের বুদ্ধিতেই ভূট্টা মুন্সিগঞ্জ না নিয়ে পথেই কোথাও বিক্রি করা হয়েছে। ড্রাইভারগুলো আমার কাছে স্বীকার করেছে। আমাদের কাছে এর প্রমাণ আছে। আমরা একটি ট্রাক ধরেছি। সেটি শ্রমিক নেতাদের জিম্মায় আছে। আরেকটি ধরবো তাড়াতাড়ি। আমরা আনিসুরকে ডেকেছিলাম। তিনি আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেন নি। আমরা তার শাস্তি চাই।
দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, এঘটনায় আইনী প্রক্রিয়া চলমান আছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।