পঞ্চগড়ে দূর্লভ প্রাণি গাড়লের খামার

প্রকাশ : 2025-09-20 18:06:37১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড়ে দূর্লভ প্রাণি গাড়লের খামার

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খালপাড়া এলাকায় গড়ে উঠেছে গাড়ল পালনের খামার। দুম্বা আকৃতির এই প্রাণি পালন বাংলাদেশের আবহাওয়া বেশ অনূকুল।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় গাজীপুরস্থ বাইপাস এলাকার জানে আলম খন্দকার নামে এক ব্যক্তি এই গাড়লের খামারটি স্থাপন করেছেন। তিনি গাজীপুর বাইপাস বনিক সমিতির সভাপতি। গত সাত বছর ধরে তিনি এই গাড়ল পালন করে আসছেন ।

দূর্লভ এই প্রাণি তরতাজা হয়ে বেড়ে উঠছে। তাদের মূল খাবার খাস। তবে এর পাশাপাশি ভূষি মিশ্রিত খাবার দেওয়া হয়।খামার মালিকের অনপুস্থিতিতে খামার পরিচালনাকারি কর্মচারী রবিউল ইসলাম জানান, খামার মালিক ঢাকা থেকে এখানে জমি কিনে শুধু মাত্র আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য খামারটি স্থাপন করেন। তিনি সময় পেলে খামার পরিদর্শনে আসেন। আমরা তাকে আয় ব্যয়ের হিসাব বুঝিয়ে দেই।

পঞ্চগড় জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তারা ও খামার পরিচালনাকারি জানান, অত্যন্ত আবহাওয়া সহনশীল এই প্রাণি। এসব প্রাণি আমেরিকা, আফগানিস্তান পাকিস্তান ও আফ্রিকার দেশে এই গাড়ল পাওয়া যায়।

খামার কর্মচারী রবিউল ইসলাম জানান, গাড়লকে যতœ নিতে নিতে হয়। প্রয়োজন হলে শ্যাম্পুও খৈল দিয়ে এসব প্রাণিকে গোসল করাই। প্রাণিটির লেজ লম্বা। এটিকে বর্ষার সময় মাটিতে আনিনা। এতে পায়ে রোগ ধরতে পারে। গরম বেশি হলে ফ্যান ব্যবহার করা হয়। তার মতে, গাড়ল দূম্বার ক্রস। আমদানি করা দেশের জঙ্গলে থাকে। বছরের ছয় মাস পর পর বাচ্চা দেয়। অনেকে ব্যবসায়ি এসে বাচ্চা কিনে নিয়ে যায়। প্রতিটি বাচ্চা ১৪ হাজার পাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়। এর মাংস এক হাজার টাক কেজি দরে বিক্রয় হয় বাজারে। গাড়ল বাচ্চা দেওয়ার এক মাস পরেই আবাদ গাভ নেয়।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, খুব সহজে এই গাড়ল পালন করে আসছে জানে আলম খন্দকার। বছরে দুবার বাচ্চা দেয় গাড়ল। এতে একটি গাড়ল পালন করে কমপক্ষে ২৬ হাজার টাকা থেকে ২৮ হাজার টাকা আয় হয়। খামারটিতে প্রায় শতাধিক গাড়ল ছিল। অনেকে পালন করার জন্য এসে গাড়ল নিয়ে যায়। আর্থিক সাবলম্বী হতে চাইলে গাড়ল পালন করা সহজ। খামারটি স্থাপন হওয়ায় চারপাঁচটি পরিবারের কর্মসংস্থান হয়েছে। দায়িত্বে থাকা খামারের কর্মচারিরাও ভালো বেতন পায়। মাস যেতে না যেতেই তাদের বেতন দিয়ে দেয়। তারা জানান দূর দুরান্তের শুধু গাড়ল কিনতে আসেনা ‘অনেকে জানতে পেরে দেখতেও আসে গাড়ল। অনেক ভারতীয় নাগরিকরাও আসতো গাড়ল খামার।

ওই খালপাড়া এলাকার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার হাসিবুল ইসলাম গাজিপুরের ভদ্রলোক এখানে এই গাড়ল পালন করেছে। এখন গাড়ল পালন করলে সহজে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। অনেকের কর্মসংস্থান ও হতে পারে এই গাড়ল পালন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মরিয়ম রহমান বলেন, বাংলাদেশে গাড়ল পালনে উপযুক্ত। বাংলাদেশের পরিবেশ নাদুস নুদুস অঞ্চল হওয়ায় এটি পালন খুব সহজ ও স্বাস্থ্য সম্মত। গাড়লের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। তাই এই প্রাণি খুব সহজে পালন করা যায়। এর মাংসের পুষ্ঠিগুণ অনেক বেশি। ঠিকঠাক মত পিপিআর ভ্যাকসিন প্রদান করা যায় তবে সহজেই গাড়ল পালন করা সম্ভব। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।