পঞ্চগড়ে দুজন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রাণ ফিরেছে চা শিল্পে

প্রকাশ : 2025-12-12 17:43:47১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড়ে দুজন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রাণ ফিরেছে চা শিল্পে

চায়ের পাতা নিয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের ভূতপূর্ব জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী।  এবার নবাগত জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান তার পতেই হাটছেন।শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে কাঁচা চা পাতার দাম না পেয়ে ইতোপূর্বে চা চাষীরা প্রায় এক হাজার  হেক্টর জমিতে গড়ে ওঠা চা বাগান তুলে ফেলেছেন।

কয়েক বছর বছর যাবত চা চাষীরা চায়ের দাম না পাওয়ায় সড়ক অবরোধ করে কাঁচা পাতা ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এ নিয়ে নানা আন্দোলন সভা,সেমিনার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে।এমতাবস্থায় ধীরে ধীরে চায়ের পাতার দাম কেজি  ১২-১৩ টাকায় নেমে আসে। এর কারণে চমর হতাশ হয়ে পড়ে চা চাষীরা। তৎকালিন সরকারের মন্ত্রী,এমপি সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা অজ্ঞাত কারণে চুপ হয়ে থাকে।

এবছর হঠাৎ করেই চায়ের পাতার দাম উর্ধমুখি হয়ে ওঠে। শুরুর দিকে ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে কারখানায় চা পাতা বিক্রি হতে থাকে।এখন সেই চায়ের পাতা ৪০ টাকায় ওঠে।হতাশার চক্র থেকে প্রাণ ফিরে পায় চা চাষীরা।

এরপর ছুটে আসেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. মেসবাহ উদ্দীন ৭ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চা চাষী ,কারখানা মালিক ও অংশিজনদের নিয়ে এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হন। তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে চা উৎপাদন, পরিবহন সহ নানা দিক নিয়ে পর্যবেক্ষণ মূলক বক্তব্য রাখেন।

এরপর ১১ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ের নবাগত জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান তার নিজস্ব ফেইসবুকে চায়ের পাতা নিয়ে একটি পোস্ট দিয়ে তিনি লিখেছেন ‘‘ পঞ্চগড়ের সবুজ চায়ের পাতার মান নিয়ে কোন ক্রমেই ছাড় দেয়া হবেনা’’। পঞ্চগড়ে চা শিল্পের স্বার্থে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।’’ মানহীন সবুজ চা পাতা পাওয়া গেলে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে।’’

এদিকে তার ফেইসবুকের পোস্ট থেকে জানা যায়, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় চা আইন,২০১৬ এর অধীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। চা আইন,২০১৬ এর ৩৪ ধারা ভঙ্গের অপরাধে ৩২ ধারায় পাঁচটি চা কারখানাকে মোবাইল র্কোট পরিচালনার মাধ্যমে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কারখানাগুলো হলো; পঞ্চগড় সদর উপজেলার মলি টি ফ্যাক্টরীকে ২০ হাজার, মরগেন টি ফ্যাক্টরীকে ২০ হাজার, ইউরো-এশিয়া টি ফ্যাক্টরীকে ২০ হাজার , তেতুঁলিয়া উপজেলার সুরমা পূর্নিমা টি ফ্যাক্টরীকে ৫০ হাজার এবং রয়েল ট্রি ফ্যাক্টরীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান সতর্কতামূলক ভাবে তার ফেইসবুক পোষ্টে  চা চাষীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনারা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না।’’ জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলুন।’’ 

এদিকে নানা সূত্রে জানা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রশাসন ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্র ছায়ায় কাঁচা চা পাতার দাম নিয়ে একঠি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়। তারা কারখানার মালিকদের সাথে আতাঁত করে শতকরা ৪০ ভাগ থেকে ৫০ ভাগ চায়ের পাতার মূল্য বাদ রেখে চা চাষীদের ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে চা পাতা কিনতে থাকে। পাশাপাশি চায়ের পাতার টাকা দিতে গড়িমসি করে।সরকার পরিবর্তনের পর পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক হিসেবে মো. সাবেত আলী যোগদান করার পর সেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যায়। এখন সেই পথেই হাটছেন নবাগত জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান। তার এই ভূমিকার প্রশংসা করছেন চা চাষী ও সচতেন মানুষ।