পঞ্চগড়ে চাইনিজ কুড়ালে ও ছোঁড়া দিয়ে উপর্যপরি হামলা মামলা না নেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে 

প্রকাশ : 2025-11-19 17:52:35১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড়ে চাইনিজ কুড়ালে ও ছোঁড়া দিয়ে উপর্যপরি হামলা মামলা না নেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে 

পঞ্চগড়ে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে চাইনিজ কুড়াল ও ছোঁড়া দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আরিফ হোসেন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।এমন হামলার ঘটনায় সদর থানায় মামলা রেকর্ড না করার অভিযোগ উঠেছে ওসি আবদুল্লা হিল জামানের বিরুদ্ধে। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি বিবাদীরা রাজনৈতিক প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

জানা যায়,পঞ্চগড় সদর উপজেলার কেচেড়া পাড়া এলাকায় গত রবিবার (১৬ নভেম্বর) গুরুত্বর আহত হন মোস্তফা জামাল (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি একই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে।অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী আরিফ হোসেন, আবু তাহের রেজাসহ তাদের পরিবারের অন্তত চারজন ব্যক্তি সেই হামলায় অংশ নেয়।  আরিফের বাবা আব্দুল কাদের ও শাহিনুরের বাবা মোস্তফা জামাল আপন চাচাতো ভাই।

মামলা এজাহার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় সদর থানা পুলিশের একটি টিম শাহিনুরের বাসায় গিয়ে তাকে ডাকেন। শাহিনুর তাতে সাড়া দিলে সদর থানার ওসি তাকে ডেকছেন বলে জানানো হয়। এরপর শাহিনুর উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের কথা মতো তাদের সাথে থানায় যান। এরপর তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করেই লকআপে রাখা হয়। পরদিন সকাল ১০টায় ওসি কথা বলবেন বলে জানানো হয়।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ওসি আব্দুল্লা হিল জামান শাহিনুরের সাথে কথা বলেন। সে সময় তিনি শাহিনুরের আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চান। কিন্তু শাহিনুর কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত না বলে জানান। বিষয়টি যাচাই শেষে পুলিশ শাহিনুরের কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা না পেলেও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।

 এরপর ওইদিন (শনিবার) বিকেলে আদালতে জামিন শেষে বাসায় ফিরেন শাহিনুর। শাহিনুরের অভিযোগ এর আগেও প্রতিবেশী আবু তাহের রেজা তাকে হুমকিধামকি দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয় তাকে।

শনিবার রাতে শাহিনুরের বাবা মোস্তফা কেন তার ছেলেকে এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে তার বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিবাদীরা আবারো হুমকি দেন। ঘটনার জেরে রবিবার বিকেলে মোস্তফা জামাল আরিফদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মোস্তফাকে চাইনিজ কুড়াল ও ছোঁড়া দিয়ে একাধিক কোপ দেয় আরিফ ও তার ছোট ভাই রাকিব। এতে মোস্তফার বাম পায়ের রগ এবং কোমড়ের উপরে গভীর ভাবে কেটে যায়।
পরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা মোস্তফাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমান হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে মোস্তফার। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

এই ঘটনায় শাহিনুর বাদী হয়ে রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতেই আরিফ হোসেনকে প্রধান আসামী করে মোট ৬ জনের নামে সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন। তবে শাহিনুরের দাবি, এজাহার দায়েরের পর থেকেই টালবাহানা করতে থাকে পুলিশ। মামলা রেকর্ড না করে উল্টো এজাহার থেকে আসামীর নাম বাদ না দিলে মামলা রেকর্ড হবে না বলেও জানানো হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত তাদের মামলাটি নথিভুক্ত করেননি ওসি আব্দুল্লা হিল জামান। পরে থানায় মামলা নথিভুক্ত না হওয়ায় উপায়ন্তর না দেখে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

অপরদিকে আরিফদের পরিবারের দাবি, রবিবার সকালে আরিফের বাবা (আব্দুল কাদের) শাহিনুরদের বাড়ির সামনে দিয়ে পার্শ্ববর্তী দোকানে যাওয়ার সময় শাহিনুরের পরিবার তার পথরোধ করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে আব্দুল কাদেরকে উলঙ্গ করা হয়। এই ঘটনায় আব্দুল কাদের মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বলেও জানায় একটি সূত্র। তবে সেদিনের ঘটনার পর আরিফদের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার জমা দিলে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে।