পঞ্চগড়ে এখনো কাটেনি ভয় আতঙ্ক কাদিয়ানীদের
প্রকাশ : 2024-08-10 12:46:19১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পঞ্চগড়ে আহমদীয়া পরিবারের লোকজন এখনো বাড়িতে ফিরতে পারছেনা। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে তারা এখনো সরে আছে নানা জায়গায়। অগ্নিগর্ভে ধ্বংস হয়েছে তাদের বাড়ি-ঘর ও মসজিদ।
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে চলমান আন্দোলনের পর ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিকেলে বিক্ষুব্ধ জনগন পঞ্চগড়ের আহমদীয়া মসজিদ ও জলসাগাহ সহ বাড়িঘরে আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৭০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করে। এতে ১৬জন আহমদী সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।ঘটনার পর আহতদের রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে সেনাবাহিনীর সহায়তার অনেকেই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের মাওলানা জাফর আহমেদ জানান এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে সবাই । তবে ঘটনার দিন সদর হাসপাতালে নিরাপত্তার আভাবে আহত সকলকে তাদের এলাকায় নিরাপদে নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা প্রধান করা হয়। একজনকে গুরুত্বর অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।আহমদীয়া মুসলিম জামাতের নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য পঞ্চগড় শহরতলীতে অবস্থিত আহমদনগর ও শালশিড়ি গ্রামদুটি আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের সদস্য অধ্যুষিত। আহমদীসহ অত্র এলাকার সকল ধর্মমতের জনগণ এখানে দীর্ঘ কাল যাবত শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাস করে আসছেন। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রয়ারি আচমকা অত্রঞ্চলের আহমদীয়া সদস্যদের বাড়িঘরে আক্রমণ, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আহমদীয়াদের অনেক সদস্যকে আহত করা হয়, আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়। পুনরায় ২০২৩ সালে ৩ ও ৪ মার্চ দুষ্কৃতিকারীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আহমদীয়াদের জলসা চলাকালে আহমদীয়া সদস্যদের উপর চড়াও হয়, ইটপাটকেল ছোড়ে।এসময় তরুন আহমদী সদস্য ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসান নির্মম ভাবে প্রাণ হারায়। এছাড়া প্রায় ৭০জনকে আহত হয়।এছাড়া আহমদনগর ও শালশিড়িতে দুই শতাধিক বাড়িঘর ও দোকানপাটে আক্রমণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পঞ্চগড় বাজারে আহমদী সদস্যদের দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেরও ক্ষতি করা হয়। এ ঘটনায় আহমদীয়া মুসলিম জামাতের কয়েকজন জানান এর আগে এমন ধ্বংস লীলা হয়নি। এবার কিছুই রাখেনি ধ্বংসকারিরা।
মাওলাণা জাফর আহমেদ জানান শুক্ররবার জ্বালিয়ে দেওয়া মসজিদ পরিষ্কার করে নামাজ আদায় করা হয়। এখন মসজিদ, বাড়ি-ঘর মেরামত করে বসবাস করা ছাড়া কোন উপায় নাই। এখন নিরাপত্তা ফিরে আসেনি। তাদের মাঝে ভয় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে আহমদীয়া এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার দিন ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে সাংবাদিকরা কেউ ঘটনাস্থলে যেতে পারেন নি।