পঞ্চগড়ে মাদ্রাসার ছাত্রকে মুখে টুপি গুজিয়ে দিয়ে নির্যাতন  

প্রকাশ : 2025-09-26 18:19:40১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড়ে মাদ্রাসার ছাত্রকে মুখে টুপি গুজিয়ে দিয়ে নির্যাতন    

পঞ্চগড়ে যোহরের নামাজে ফরজ নামাজ শেষে সুন্নাত না পড়ার অভিযোগ এনে মাদ্রাসার এক ছাত্রকে মুখে টুপি গুজে বেধড়ক মারপিট করেছেন শিক্ষক বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে জেলা শহরের তেতুলিয়া সড়কের লিচুতলা এলাকার আল আত- তাক্বওয়া ওয়াসসুন্নাহ হিফজ মাদ্রাসায় এ ঘটনটি  ঘটে।

সুন্নত আদায় না করায় এসময় তাকে লাঠি দিয়ে টুপি গলায় ঢুকিয়ে দেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে বলে  সেই অভিযোগ উঠে।ফলে শিশুটির মুখের তালু ক্ষতবিক্ষত হয়।

শুধু তাই নয়, কয়েকজন ছাত্র ভুক্তভোগীর দুই হাত ধরে রাখে আর ওই শিক্ষক তাকে নির্দয়ভাবে দুই হাত, ঘাড়, গলা ও কোমরের নিচে আঘাত করতে থাকেন। কোনোভাবে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আবারও তাকে শিক্ষকের সামনে এনে মারধর করা হয়। বর্তমানে আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এতে অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগীর বাবা বেলাল হোসেন পঞ্চগড় সদর থানায় আসাদসহ তিন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সাব্বির হোসেন নাসির (১২)। সে সদর উপজেলার বলেয়াপাড়া এলাকার স্বর্ণকার বেলাল হোসেন ও গৃহিণী ইয়াসমিন আক্তারের একমাত্র ছেলে। নাসির ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করছে।

জানা গেছে, তিন মাস আগে নাসির মাদ্রাসা টিতে  ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পরপরই একবার নির্যাতনের শিকার হয়েছিল সে। সেসময় বাড়িতে চলে গেলেও পরবর্তীতে পরিবার তাকে আবার মাদ্রাসায়  পাঠায়। তবে এবারের নির্যাতন ছিল চরম।

আহত সাব্বির হোসেন নাসির বলেন, “আমি সুন্নত নামাজ না পড়ায় আসাদ হুজুর আমাকে মারধর শুরু করে। আমি চিৎকার করলে মুখে টুপি গুজে দেয়। কয়েকজন ছাত্র আমার হাত ধরে রাখে, আর তিনি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করতে থাকেন। যেভাবে টুপি গুজে দিয়েছিল, আরেকটু হলে আমি মরেই যেতাম। গলা দিয়ে রক্ত বের হয়েছে।”

নাসিরের বাবা বেলাল হোসেন বলেন, “এর আগেও আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছিল। এবার যে নির্যাতন করেছে তা বর্ণনা করার মতো নয়। আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল তারা। এখন আবার আসাদ হুজুর আমাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”

এ ঘটনায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) রহিমুল ইসলাম জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে ভর্তি আছে এবং তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) আব্দুল্লাহ -হিল- জামান বলেন, “ নির্যাতিত শিশুর বাবা থানায় মামলা করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'