নীললোহিতের বয়স সাতাশের বেশি বাড়ে না

প্রকাশ : 2022-10-23 13:56:58১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

নীললোহিতের বয়স সাতাশের বেশি বাড়ে না

নীললোহিতের বয়স সাতাশ, সাতাশের বেশি তার বয়স বাড়ে না। সে চির-বেকার, চাকরিতে ঢুকলেও সে বেশিদিন টেকে না। তার বাড়িতে মা, দাদা, বৌদি রয়েছেন। সেই নীললোহিত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের [৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ - ২৩ অক্টোবর ২০১২] ছদ্মনাম। নীললোহিতের মাধ্যমে সুনীল নিজের একটি পৃথক সত্তা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। নীললোহিতের সব কাহিনিতেই নীললোহিতই কেন্দ্রীয় চরিত্র। যে যুবক বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের এবং সমাজের বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। 

মানুষ মরণশীল, জন্ম হলে মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু কিংবদন্তীর মৃত্যু নেই অর্থাৎ তাদের শারিরীক মৃত্যু আছে কিন্তু তারা বেচে থেকে ইতিহাসের পাতায় এবং প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। 

বিশ শতকের শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষার জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাংলা ভাষায় এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক।

সুনীলের পিতা তাকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দুটি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল এ জন্য যে তিনি যেন দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তা-ই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, সুনীল তখন পিতৃ-আজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেয়ে হয়ে উঠলে তিনি নিজেই লিখতে শুরু করেন।

২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে হৃদ্‌যন্ত্রজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ৪ এপ্রিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার ‘গণদর্পণ’-কে সস্ত্রীক মরণোত্তর দেহ দান করে যান। কিন্তু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতে তার দেহ দাহ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২৫ অক্টোবর ২০১২ তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।