নির্বাচন করতে গিয়ে কর্মী মরলে ১০ লাখ টাকা অনুদান ঘোষনা করলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাইফুল(ভিডিও)

প্রকাশ : 2021-11-17 19:51:23১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

নির্বাচন করতে গিয়ে কর্মী মরলে ১০ লাখ টাকা অনুদান ঘোষনা করলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী  সাইফুল(ভিডিও)

সিরাজদিখান বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুলের ঘোষনা- আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমার কোন কর্মী মারা গেলে তার পরিবারের মিলবে ১০ লাখ টাকা

আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলের শীর্ষ পর্যায়ে তদবির চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে প্রচারণার অংশ হিসাবে পাড়া-মহল্লায় পোষ্টার সেঁটে দেওয়াসহ তাদের যোগ্য তুলে ধরছেন বিভিন্ন সভায় কিংবা হাট বাজারের চায়ের দোকানে। ভুল করছেন না বিয়ে কিংবা সুন্নতে খাতনার কোন দাওয়াতে যেতে । আগামী ২৩ ডিসেম্বর ৪র্থ ধাপে সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৯ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ৭ ডিসেম্বর। 

এদিকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর সিরাজদিখানের বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান এবং আসন্ন ইউপি নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম যুবরাজ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মীদের গরু জবাই করে খাওয়ানোর আয়োজন করেন। ওইদিন কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে সাইফুল ইসলাম যুবরাজের দেওয়া বক্তব্য বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। আর ভাইরাল হওয়া বক্তব্য শুনে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ভাইরাল হওয়া বক্তব্য গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ইউপি চেয়ারম্যানের নিজ বাড়ী উত্তর পাথরঘাটা গ্রামে কর্মীসভায় বলেছেন, ‘এই নির্বাচন পারপাসে একটা লোক মারা যেতে পারে, আমার কর্মী যারা তাদের একটা লিস্ট আছে। এই লিস্টটা করতাছি এই লিস্টটা আমার কাছে আছে। এই কর্মীদের ভিতরে যদি কেউ নির্বাচন করতে গিয়ে মারা যায়, তাহলে আমার পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা তাদের পরিবারকে দেওয়া হবে। আর যদি খুনাখুনি বাইরাবাইরি করে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তাহলে আমি তার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবো। এমনকি তার সংসারের খরচও আমি চালাবো। আমি মাইট্টা ধোরা সাপ। চুপ করে শুয়ে থাকি, আর যখন কামড় মারি তখন মাংসসহ ছিড়ে ফেলি।’ চেয়ারম্যান প্রার্থীর এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে নির্বাচনে আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। 

এ ব্যাপারে বাসাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী তাইফুর রহমান ডালু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি।

সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, এ বিষয়টি অনেকের কাছে শুনেছি। এলাকায় বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম যুবরাজ বলেন, আমার ২৫মিনিট ভিডিও বক্তব্যের ৬০ সেকেন্ড রেখে বাকি অংশ ডিলিট করে ফেসবুক ভাইরাল করেছেন আমার প্রতিপক্ষের লোকজন। আমি বলেছি ৮৭ সালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ ব্যক্তি সহিসংতায় মারা যায়। ওই ধরনের সহিসংতার কোনো ঘটনা আর ঘটতে দেওয়া হবে না,  গ্রামবাসীকে এমন আশ্বস্ত করা হয়। তারপরও এলাকার লোকজন ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে আমি আমার পক্ষে লোকজনের মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারকে এসব কথা বলেছিলাম। তবে ওই সময় নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়নি। আর এমন বক্তব্যে নির্বাচন আচরণবিধিও লক্সঘন হয়নি।

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনা ইসলাম চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা এড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। ইউপি চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব ।  

সিরাজদিখান থানার ওসি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না। তাই সবাইকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানান ওসি। তিনি বলেন, বাসাইল ইউপির চেয়ারম্যান এরকম কোন কথা বলে থাকলে এবং ভাইরাল হওয়া ভিডিও চিত্র পর্যবেক্ষণ ও উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।