নাগরিক সমাজের সাথে ঐক্য পরিষদের মতবিনিময়
প্রকাশ : 2023-06-01 14:24:15১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
গতকাল ৩১ মে ২০২৩ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪: ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকার আন্দোলনের সাথে তারা একাত্ম। তারা এ আন্দোলনকে অধিকতর জোরদার করে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর জোর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভার শুরুতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বলেন, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আর মাত্র সাত মাস বাকি। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতোমধ্যে নানান মহল থেকে সংঘাত ও সহিংসতার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হচ্ছে। এতে আমরা উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। কারণ বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সর্বস্তরের নির্বাচনের পূর্বাপর আমরা লক্ষ্য করেছি, ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে এক বিশেষ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল নানান ছদ্মাবরণে নির্যাতন ও সহিংসতা চালায়। নির্বাচন কমিশনসহ রাজনীতি সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে অতীতে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্য করেছি, এ ব্যাপারটিকে আমলে নিয়ে কেউ কোনসময় কোনভাবে যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। একদিকে শঙ্কা, অন্যদিকে অদ্যবধি দাবি পূরণ না হওয়ায় সংখ্যালঘু জনমনে তীব্র ক্ষোভ, হতাশা বিরাজ করছে যা সামনের নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব দেখা দিতে পারে।
মতবিনিময় সভায় এ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে সমাজের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল অংশকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, সবাই হাল ধরুন, সবাই জোট বাধুন, আসুন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই মিলে এগিয়ে যাই।
মতবিনিময় সভায় নাগরিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী এ্যাড. সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী খুশী কবির, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মফিদুল হক, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, দৈনিক প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক সাংবাদিক সোহরাব হাসান, আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী শামসুল হুদা, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইঞা, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রী মাসুদা রেহেনা বেগম, সাংবাদিক ও গবেষক সুভাষ সিংহ রায়, সমাজসেবক ড. বেনেডিক্ট আলো রোজারিও প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় এ্যাড. সুলতানা কামাল বলেন, 'রাষ্ট্রকেই আজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, রাষ্ট্র মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায় তো দূরের কথা, অস্তিত্ব নিয়ে তাদের টিকে থাকাই দায় হয়েছে। সত্য বলাও তাদের জন্য আজ বিপদ। তিনি বলেন, ’৭৫-র পরবর্তী বিশ বছরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ বড় হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীরা যা যা করতে চেয়েছিল তার সবই নিষ্ঠার সাথে করেছে। আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা ছিল তারা এই অবস্থার পরিবর্তন করবে, রাষ্ট্রকে মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তারা উপরসা কাজে ব্যস্ত থেকেছে, সমাজ বদলানোর প্রকৃত দায়বোধ তারা দেখায়নি। শিক্ষাব্যবস্থা আরও পশ্চাদপদ হয়েছে, বাউলেরা মার খাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তরা পুলিশ প্রশাসন এবং সরকারের চেয়ে কার্যকরভাবে শক্তিশালী হয়েছে। এই অবস্থায় জামায়াত নিষিদ্ধ করা না করায় কিছু যায় আসে না। কারণ আপোস করতে করতে আওয়ামী লীগ নিজেই আজ জামায়াতের ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরো বলেন, পিছিয়ে রাখা মানুষ, বঞ্চিত মানুষদের জন্য বিশেষ কমিশন করা অবশ্যই দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কেবল জিডিপি, রিজার্ভ, উন্নয়নকে প্রদর্শন করলে চলবে না, সব মানুষের সমান অধিকার নিয়ে রাষ্ট্রে বাস করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা রেখে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখা আদতে দ্বি-চারিতা। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। সমঅধিকার ও সমমর্যাদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে অবশ্যই বৈষম্যবিলোপ আইন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করা দরকার। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সর্বজনীন সুরক্ষাব্যবস্থা নেই। রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতে হলে স্বাধীন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক আন্দোলন যদি রাজনৈতিক শক্তির ছত্রচ্ছায়ায় থাকে তাহলে অধিকার আদায় হবে না। আগামী নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের কৌশলগত অবস্থান নিতে হবে। এককভাবে কোন রাজনৈতিক শক্তির সাথে ঐক্য না করে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট যে শক্তি তাদের সুরক্ষা দিতে পারবে সেখানে তাকেই নির্বাচিত করতে হবে। ৯% ভোট নিয়ে অসহায়ের মত কথা বললে চলবে না। অধিকার প্রতিষ্ঠায় জোরালোভাবে কথা বলতে হবে। সার্বভৌম কণ্ঠস্বরে সোচ্চার হতে হবে।'
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রধান ভুক্তভোগী ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা। আমরা দেখলাম, কুমিল্লায় মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে দেশব্যাপী সহিংসতা সৃষ্টির কারিগর ইকবালকে মাত্র ১৬ মাস কারাদণ্ড দেয়া হল। অথচ রংপুরে টিটু রায়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হল। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই গত নির্বাচনের ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে।'
সংস্কৃতিজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, 'স্বাধীন বাংলাদেশ আগের চেয়ে দশগুণ সাম্প্রদায়িক হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো সাম্প্রদায়িকতার সামাজিকীকরণ হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতা রোধে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার হলে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে আদর্শ ও চিন্তায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারলে নতুন সমাজ গঠন সম্ভব।'
মানবাধিকার নেত্রী খুশী কবির বলেন, 'বাংলাদেশ কার্যত সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হয়ে গেছে। রাষ্ট্রধর্ম বহাল রেখে, রাজনীতি-সমাজ-চলাফেরা-পোশাক-বাকস্বাধীনতা-চিন্তায় সর্বক্ষেত্রে ধর্মকে টেনে এনে এ রাষ্ট্রের পরিবর্তন করা যাবে না। বরং প্রতি ক্ষেত্রে এর বিরুদ্ধে আদর্শগত সংগ্রাম করতে হবে। আপোস করার কোন সুযোগ নেই। ’৭১-এ আমরা পারলে এখনো পারবো।'
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী বলেন, 'হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যে দাবি করছে তা মুক্তিযুদ্ধের ধারা প্রতিষ্ঠারই আন্দোলন। আমরা এমন রাষ্ট্র চেয়েছিলাম যেখানে সকল ধর্মের মানুষ সমানাধিকার নিয়ে বাস করবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রুখে দেওয়া যায়। কিন্তু রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনৈতিক শক্তি যখন সাম্প্রদায়িকতার সাথে আপোস করে তখন কৌশলের কাছে নীতি পরাস্ত হয়।'
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, 'ধর্মীয় সত্ত্বার উপর আক্রমণ কার্যত জাতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে শিক্ষা এবং সংস্কৃতির লড়াই জারি রাখতে হবে। এ লড়াইটা কেবল সংখ্যালঘুদের নয়, আমাদের সবার। মনে রাখতে হবে, উন্নয়নের সাথে সম্প্রীতির প্রশ্নও জড়িত। উন্নয়ন অর্থহীন হয়ে যাবে যদি সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করা না যায়। এসডিজিতেও সামাজিক সম্প্রীতি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার রয়েছে। তাই সম্প্রীতি রক্ষায় সরকার আন্তর্জাতিকভাবেও দায়বদ্ধ।'
সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য প্রথমেই আইনের শাসন দরকার। অথচ রাষ্ট্রে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, ভিন্নমত নেই। ২০০১-পরবর্তী সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনায় যে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয় তার প্রধান যিনি ছিলেন, তিনি আজ রাষ্ট্রপতি। কিন্তু একটা ঘটনারও বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি ভাঙ্গার দায়িত্ব সরকারের। আর সরকারকে চাপে রাখার দায়িত্ব সামাজিক শক্তির। তিনি বলেন, রাষ্ট্র আজ ভোটের অধিকার ও নাগরিক অধিকার অস্বীকার করছে। এর বিরুদ্ধে যদি কথা না বলি তাহলে আত্মপ্রতারণা করা হয়। তিনি বলেন, সরকার নিজেই সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপোস করেছে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, শুধু হেফাজতে ইসলাম নয়, জামায়াতে ইসলামের সাথেও আওয়ামী লীগের ছায়া সম্পর্ক তত দৃঢ় হবে।'
উন্নয়ন কর্মী শামসুল হুদা বলেন, 'ঐক্য পরিষদের উত্থাপিত দাবিগুলো আগামী নির্বাচনের আগেই পূরণ করা সম্ভব। সরকারের এখনও সাত মাস মেয়াদ আছে। যদি সরকারের সদিচ্ছা থাকে তাহলে এই সময়ের মধ্যে তাদের অঙ্গীকারের অন্তত ৭০% পূরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে রাষ্ট্রধর্ম প্রত্যাহার হতেই হবে।'
অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, 'স্বাধীন রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুর বিপন্নতা বেড়েছে, মুক্তবুদ্ধির মানুষের বিষণ্নতা বেড়েছে। এই বিষণ্নতা সামাজিক হতাশার জন্ম দিয়েছে। গত ১৫ বছর স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকলেও এসব জায়গায় কোন অগ্রগতি হয়নি। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের কাছে করা অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেনি, করবেও না। গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে।'
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, 'বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মসনদে মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ছিল। রাষ্ট্রধর্মের মধ্য দিয়ে এ অঙ্গীকারের সাথে আপোস করা হয়েছে। যদি বাঙালি জাতীয়তাবাদ মানি, তাহলে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র কোনভাবেই মানতে পারি না।'
সাংবাদিক ও গবেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, 'অধিকারবোধ এবং সার্বভৌম কণ্ঠস্বর আজ খুবই জরুরি। নাহলে রাষ্ট্রের ভয়াবহ বিপর্যয় হবে। ষাটের দশকে রাষ্ট্র ছিল সাম্প্রদায়িক, সমাজের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা ছিল অসাম্প্রদায়িক। এখন এই চিত্র পুরো উল্টো হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের আত্মমর্যাদার জায়গা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মর্যাদা কেউ দেবে না, আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে- তারা অবকাঠামো, জিডিপি সব দেখেছে কিন্তু সাংস্কৃতিক জাগরণে মন দেয়নি।'