নন্দীগ্রামে নবান্ন উপলক্ষ্যে বাহারি মাছের মেলা
প্রকাশ : 2025-11-18 16:44:54১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সারি সারি দোকান, সেখানে থরে থরে সাজানো রুই, কাতল, সিলভার কার্প, বিগহেড, চিতল ও বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। এক কেজি থেকে শুরু করে ১৮ কেজি ওজনের মাছ উঠে দোকানগুলোতে। নবান্ন উপলক্ষ্যে বাহারি প্রজাতির মাছের পসরা বসেছে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন মাছের মেলায়।
জানা গেছে, সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী মঙ্গলবার অগ্রহায়ণ মাসের প্রথমদিন। এইদিনে নন্দীগ্রাম উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে। তবে নবান্ন উৎসব শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি চলছে নবান্ন উৎসব। এ উপলক্ষ্যে মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনদের আগে থেকেই আমন্ত্রণ করা হয়। মুসলিম কৃষকরা অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম শুক্রবার থেকে নবান্ন উৎসব শুরু করে। গ্রামাঞ্চলে মুসলিম কৃষকরা ভাতের সাথে গরু, মহিষ, খাসি ও হাঁসের মাংস খেতে বেশি পছন্দ করে। আর সনাতন ধর্মাবলম্বী কৃষকরা ভাতের সাথে মাছ খেতে বেশি পছন্দ করেন। পাশাপাশি চলে নানা রকমের পিঠাপুলি, পায়েস ও ক্ষীর খাওয়ার আয়োজন। নবান্ন উপলক্ষ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর, রণবাঘা, ধুন্দার ও হাটকড়ইসহ বিভিন্ন বাজারে মাছের মেলা বসে।
সরেজমিনে ওমরপুর ও রণবাঘা মাছের মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারো মেলায় ক্রেতা সমাগম চোখে পড়ার মতো। আকার ভেদে প্রতিকেজি রুই ও কাতল মাছ ২৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, সিলভার কার্প ও বিগহেড মাছ ২০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল ও বোয়াল মাছ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, আইড় ও শোল মাছ ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বিক্রি হয় সেখানে।
মেলায় মাছ কিনতে আসা ইমন আলী বলেন, মেলায় মাছের সরবরাহ খুব হয়েছে। মাছের দাম আমার কাছে একটু বেশিই মনে হচ্ছে। তবে চাহিদা মতো ছোট বড় সব ধরনের মাছ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। নবান্ন উৎসবে এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি মাছ কিনতে আমরাও মেলায় আসি। আমি ৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি কাতল মাছ কিনেছি।
নন্দীগ্রাম কলেজপাড়ার মাছ ক্রেতা বিমল কুমার বলেন, আমার বাবা দাদাদের দেখেছি অগ্রহায়ণ মাসের প্রথমদিন নতুন ধানের চাল করে সবাই মিলে মুখে দিতো। বড় বড় মাছ কিনে মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণ করে রাতে রান্না করে খেয়েছে। আমরাও পূর্বপুরুষদের সেই প্রথা এখনো পালন করছি। মাছ ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়। আমি রুই, কাতল, বিগহেড ও বোয়াল মাছ কিনেছি। মাছ বিক্রেতা মোস্তফা আলী জানান, প্রতিটি মাছ বিক্রেতা ৩০ থেকে ৪০ মণ মাছ মেলা উপলক্ষে এনেছে। মাছের বাজার স্বাভাবিক আছে বলে তার দাবি। এ বছর মেলাতে সে ৪০ মণ মাছ এনেছে। বিক্রিও খুব ভালো। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি নতুন চালের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।