নকল বিড়ি-সিগারেটসহ অবৈধ সিন্ডিকেট চক্রের ১ সদস্য আটক
প্রকাশ : 2025-03-17 14:29:25১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামের রাউজানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রমরমা ভাবে বিক্রি হচ্ছে নকল বিড়ি-সিগারেট। এই নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়িসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের বিড়ি ও সিগারেট আমদানি করে রাউজানের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। রবিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নকল বিড়ি-সিগারেট সরবরাহকালে নকল বিড়ি-সিগারেট সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য রফিকুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের সোম্বাইজ্জা হাটের দোকানে দোকানে নকল আকিজ বিড়ি ও সিগারেট সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় জনগণ আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের কর্মকর্তাদের অবগত করেন। পরে আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের কর্মকর্তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করেন। কল পেয়ে হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নকল বিড়ি-সিগারেটসহ অবৈধ সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য রফিকুল ইসলাম আটক করে। এসময় তার নিকট থেকে বিপুল পরিমান নকল ডার্বি ও স্টার সিগারেট, নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়ি ও নকল কারিকর বিড়ি জব্দ করা হয়। আটক রফিকুল রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের মৃত শাহাজাহানের ছেলে।
নকল পণ্যসহ পুলিশ আসামী রফিকুল ইসলামকে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে হাটহাজারী থানা থেকে আসামীকে রাউজান থানায় হস্তান্তর করা হয়। এসময় আকিজ বিড়ির ট্রেডমার্ক জাল করে নকল বিড়ি বিক্রির দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হলে রাউজান থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। থানা কর্তৃপক্ষ আসামীকে মুচলেকা নিয়ে তার পরিবারের হেফজতে ছেড়ে দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ ও নকল পণ্য সরবরাহকারী সিন্ডিকেট চক্র রাউজান থানা কর্তৃপক্ষের যোগশাজসে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। রাউজান থানায় সুনিদির্ষ্টভাবে অভিযোগ করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। গত ৯ মার্চ পুলিশের উপস্থিতিতে নকল বিড়ি সিন্ডিকেটের মূল হোতা মামুন মিয়ার দোকান থেকে ৩৪০ প্যাকেট নকল আকিজ বিড়ি উদ্ধার করা হয়। সে সময়ও আসামির বিরুদ্ধে নকল বিড়ি বিক্রি অপরাধে রাউজান থানায় মামলার আবেদন করা হলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এদিকে অবৈধ পণ্য সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতম মহল। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের পরও পুলিশের এমন ভুমিকাকে মেনে নেওয়া যায়না বলে জানান তারা।
আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, অবৈধ ব্যবসার আড়ালে একটি অসাধু সিন্ডিকেট চক্র সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । এতে সঠিক ভাবে রাজস্ব প্রদানকারী কোম্পানীগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নকল বিড়ি বন্ধ করতে আমরা পুলিশ, র্যাব, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহযোগীতা কামনা করছি।
এনবিআর এর এক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ম অনুসারে ২৫ শলাকার ১ প্যাকেট বিড়ির দাম ১৮ টাকা। তবে অভিযোগ রয়েছে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে এক প্যাকেট বিড়ি ৮-১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। নকল পণ্য বিক্রির ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সরকার অবৈধ পণ্য বিক্রির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স জারি করেছে। সকল পর্যায়ের প্রশাসন সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।
কা/আ