ধারাবাহিক উপন্যাসঃ কাক-জ্যোৎস্নায় কাক-ভোর (পর্ব-৩)
প্রকাশ : 2021-08-31 10:27:21১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
শাশ্বত স্বপন
---------------------
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আজ শুক্রবার। বিকাল বেলা, কালীদের পাড়ার ছেলে মেয়েরা দক্ষিণের ফসল শূন্য বিরান মাঠে কানামাছি, বৌচি, দাঁড়িয়াবান্দা খেলছে। বড় ছেলেরা খেলার মাঠেই ফুটবল খেলতে চলে যায়। কালী ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে ফুটবল খেলছে। মাঝে মাঝে ফুটবল খেলতে তার খুব ভাল লাগে। সে খেলাধূলায় সব সময়ই ভাল। হাইজ্যাম্প, লংজ্যাম্প, সাঁতার, দৌঁড় ইত্যাদিতে সে বেশ দক্ষ। তবে এ পাড়ার অনেকেই তাকে মদ্দনী বলে। কেউ অগোচরে খোদাই ষাড়ও বলে। সবাই খেলায় ব্যস্ত। কালী খুব ভাল সর্ট মারতে পারে। কখনো দেখা যায় খেলার সাথীদের নিয়ে হুড়মুড় করে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। ছেলেদের মত করে মাথায় বল হেট দিচ্ছে। দূর থেকে মহিলারা ছিঃ ছিঃ করছে। কেউ কেউ কালীকে ধমক দিচ্ছে। সে তবুও শুনে না অথবা না শুনার ভান করে থাকে।
প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, কিছু কিছু অভিভাবক বাড়িতে ফেরার জন্য তাদের ছেলে-মেয়েদের ডাকছে। ঠিক এমনি মুহুর্তে কালীদের বাড়িতে চিৎকার-চেচামেচি শুনা গেল। সবাই ছুটে গেল ওদের বাড়িতে। বাড়িভরা মানুষ। ঘটনা ছিল এরকম--গোখরা সাপ কালীদের দুধেল গাইটার দুধ খাচ্ছিল। গরুর দুই পা পেঁচিয়ে বিস্ময়কর ভংগীতে সাপটি দুধের বাট মুখে পুড়ে আছে। গরু পা নাড়াতে পারছে না। হাম্বা হাম্বা করে ডাকছে। তুলসী কি মনে করে গরুটাকে ঘাস দিতে এসে দেখে এ অবস্থা। তুলসী রাস্তায় দাঁড়ানো প্রতিবেশী সিরাজকে ডাক দিয়ে দেখাল। বাড়ির সবাই ভয়ে আর বিস্ময়ে সাপের দিকে তাকিয়ে আছে। সাপ আসন্ন বিপদ বুঝতে পেরে যখনি যেতে শুরু করেছে তখনি সিরাজ মোটা একটা লাঠি নিয়ে গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে কয়েকবার আঘাত করল, সাপটি মারা গেল। আরেকটি সাপ সবে মাত্র ঝোপ থেকে আসছিল। অবস্থা দেখে পালিয়ে গেল। কালী এসে শুধু মৃত সাপটা দেখল আর ঘটনা শুনল। অনেক বড় সাপ! প্রায় চার হাত হবে। কালীর মা-ঠাকুমা মনে করে, দুধরাজ সাপ প্রায়ই গরুর দুধ খায়. মাঝে মাঝে ওলানে দুধ খাওয়ার প্রমাণ চিহৃও পাওয়া যায়।
রাতে পড়তে বসে কালী ঘরে যত্ন করে রাখা মাসীর ব্যাগে খুঁজে পেল একটা ম্যাগাজিন, সেখানে সাপের দুধপান করা নিয়ে অনেক তথ্য আছে। দুধরাজের কাউকে মারার ক্ষমতা নেই, একদমই নির্বিষ। কিন্তু তার ক্ষিপ্রতা বিষধর সাপকে হার মানায়। কিন্তু এই সাপ রেগে গেলে নিজেকে একেবারে চ্যাপ্টা আকার ধারণ করতে পারে। নামে দুধরাজ হলেও সে যেমন দুধ দেয় না, তেমনি দুধ খায়ওনা। শুধু দুধরাজ কেনো পৃথিবীর কোনো সাপ চুষে কিছু খেতে পারে না। কারণ সাপের জিহ্বার অগ্রভাগ দ্বিখণ্ডিত থাকে। নির্বিষ সাপরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির হয়। তবে দুধরাজ খুবই হিংস্র প্রকৃতির, রেগে গেলে বা ভয় পেলে তেড়ে এসে কামড় বসায়। তবে এদের কামড়ে মানুষ মারা যায় না, কারণ বিষ নেই। এক সময় প্রচুর দেখা গেলেও বর্তমানে তেমন একটা দেখা মেলে না; কারণ মানুষ সাপ দেখলেই মেরে ফেলে।
গাভীর ওলানের বাট হলো নরম ত্বক। বিভিন্ন কারনে বাটে ক্ষত হতে পারে অথবা ফেটে ফেটে যেতে পারে। খামারীরা তখন মনে করে রাতে সাপে দুধ খেয়েছে। মুলত গাভীর বাটে ক্ষত/ফেটেঁ যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বাছুরের দাঁতের কামড়। অনেকসময় ছত্রাকজনীত ইনফেকশন বা এলার্জি জনীত কারনেও বা কোন আঘাতজনিত কারনেও এমন হতে পারে।
দুধরাজ সাপ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যে কাজ করে, তা আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন না। দুধরাজের প্রিয় খাবার ইঁদুর। ইঁদুর প্রতি বছর প্রায় হাজার কোটি টাকার রবিশস্য খায়। কিন্তু দুধরাজ প্রচুর ইঁদুর খায়। এতে কৃষকের উপকার হয়। একটা সময় দেশের সব জায়গায় এদের দেখা গেলেও বর্তমানে তেমন দেখা যায় না। আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এই সাপ বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।
ঘুমানোর আগে মেরে ফেলা দুধরাজের জন্য কালী খুব মায়া হল। অকারণে, না জেনে শত শত বছর ধরে মানুষ এভাবেই বিষ, নির্বীষ সব সাপকেই মেরে ফেলছে। কালীদের উত্তরের বনঝোপে দুধরাজ, শঙ্খিনী, চন্দ্রবোঁড়া, ডোরা ইত্যাদি সাপেরা থাকে। ভারতবর্ষ বিভাগের আগে উত্তরের ঝোপটাতে ছিল কামার আর কুমারদের বাড়ি। এখানে ব্রাহ্মন পরিবারও ছিল অনেক। দেশ-বিভাগের পর অনেকেই ভারত চলে গেছে। বাকী যারা ছিল, মুক্তিযুদ্ধের সময় ও পরে, তারাও চলে গেছে। এখন এই বনঝোপের অধিকাংশ জায়গা গণিমুন্সীর। দেশ-বিভাগের পর এই বনঝোপ বাড়তে বাড়তে ঘন বনঝোপে পরিণত হয়েছে। ঝোপের ভিতরে পুরনো, ভগ্ন সমাধী মন্দির, টিন কাঠের ভাঙ্গা মন্দিরে ঘরও রয়েছে। মাটির ভাঙ্গা হাড়ি-পাতিল আর লোহার টুকরায় ভরা মাটির প্রথম স্তর। গণি মুন্সির বাড়ী ছিল বিস্তৃত ঝোপের দেড় কিলোমিটার উত্তরে। সামান্য একটু জায়গা ছিল। জমিদারের গোমস্তা ছিল বলে তাকে জমিদার বাড়ির কাছাকাছি থাকতে হতো। জমিদার মারা যাবার পর তার পুত্র কন্যারা ভারতে চলে যায়। জমিদার ব্রাহ্মন পরিবার চলে যাবার পর গণিমুন্সি বাকী ব্রাহ্মনদের সু-কৌশলে তাড়িয়ে ঐ জায়গা পুরোটা দখল করে। এখন যেখানে কল্যাণরা থাকে, এটাই ছিল জমিদারের রাজবাড়ি। মুক্তিযুদ্ধের সময় গণি মুন্সীর পুত্র আযম মুন্সী পাকসেনাদের মোরগ-মুরগীর সাথে কিশোরী, যুবতী ও নতুন বউদের উপহার দিয়ে খুশী করত। সংখ্যালঘু হিন্দুদের তাড়িয়ে জায়গা-জমিন, সোনাদানা কম দামে কিনে রাখত। হিন্দুদের মনে ভয় ঢুকিয়ে কাজ করতে তার সুবিধা হতো। যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দুদের সে রক্ষাও করেছে। তাদের শাখা-সিদুঁর ফেলে দিয়ে কোরআন শরীফ দিয়ে বসিয়ে রেখেছে। সূরা, কালেমা শিখিয়েছে। সুযোগ বুঝে ভয়ের বীজ বুনে দিয়েছে। আজ সে আযম চৌধুরী। হজ্ব তিন বার পালন করেছেন। দান খয়রাত প্রচুর পরিমাণে করেন। একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছিলেন। পাশ করতে পারেননি।
আযম মুন্সী যুদ্ধের পর পরই ঢাকায় চলে যান এবং রাজনীতিবিদ এক মামার সাথে মিশে মিটিং-ফিটিং করে মুক্তিযোদ্ধা খাতায় নিজের নাম লিখিয়েছেন। গ্রামে তিনি কালে ভদ্রে আসেন। গ্রামে তার দুঃসম্পর্কের এক বোন আছে, এলে সেখানেই উঠেন। তারপর তার স্মৃতি বিজরিত বনঝোপ ঘুরে ঘুরে দেখেন। গণি মুন্সীর কবরটা নিজ হাতে পরিষ্কার করেন। তারপর জিয়ারত করেন। কখনো কালীদের বাড়ি এসে জলপান করেন। খুব ভাল ব্যবহার করেন গ্রামবাসীদের সাথে। গ্রামের বয়োজেষ্ঠ্যরা তার কুর্কীতি আর সুকীর্তি সম্পর্কে সবই জানেন। কেউ মুখ ফোটে কিছু বলেন না। সে এখন বহু অর্থ সম্পদের মালিক। সাধারণ গ্রাম্যবাসীদের কাছে ধনীরা হল ন্যায়-অন্যায়ের উপরে।
কল্যাণরা আযম মুন্সীর দখলকৃত বাড়িতেই থাকে। সবাই চলে গেলেও আত্মীয়-স্বজনহীন কল্যাণের বাবা দরিদ্র বামুন ননী গোপাল চ্যাটার্জী ভারতে যাননি। ফলে আযম মুন্সী বাস্তহারা হিসাবে থাকতে দিয়েছে। বিনা চিকিৎসায় ননী গোপাল মারা গেলে নিঃস্ব সবিতা পুত্রকে বহু কষ্টে লালন-পালন করছেন। ননী গোপাল মারা গেলে হিন্দু সমাজের অবস্থাপন্নরা সবিতাকে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করত। আযম মুন্সীও তার বাড়ির সব ফল-ফলাদি কল্যাণদের ভোগ করার অধিকার দিয়েছেন। অনেক মুসলমান প্রোঢ়রা সবিতাকে বিয়ে করতে চেয়েছে। দৃঢ় মনোবল, ধর্মপ্রাণ বলে কেউ তার গায়ে একটা আঁচড়ও দিতে পারেনি। শেফালী, তুলসী, সবিতা--আরো অনেকে বাঁশ দিয়ে খুঁচি, ডোলা আর নাইলন সূতা দিয়ে মাছের জাল বোনায়। এগুলো মহেশ কাপালী কিনে নেয়, পরে চড়া দামে অন্য পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। এসব ব্যাপারে কালীর বাবা সবাইকে সাধ্যমত সহায়তা করে।
কালীর ধর্ম সাবজেক্টটা পড়তে আগে ভাল লাগত, এখন ভাল লাগে না। তার মাঝে মাঝে মনে হয়, ধর্ম না থেকে মহামনীষীদের জীবনী থাকলে অনেক ভাল হত। এগুলো পড়ে কেউ ধার্মিক হয়েছে বলে, তার মনে হয় না। বরং যারা পাপ বেশি করে তারাই ধর্ম-কর্ম বেশি করে। বেশি বেশি পাপ করে বৃদ্ধ বয়সে হরি হরি, রাম রাম শুরু করে।
কালী আগের চেয়ে বেশ মোটা হয়েছে। বুকের আয়তন বয়সের তুলনায় বেশ বড় আকার ধারণ করেছে। বার্ষিক পরীক্ষা আসন্ন। শংকর আজ দু’মাস পর ওকে পড়াতে এসেছে। এতদিন সে এইচএসসি পরীক্ষা পরবর্তী ছুটি তাদের গ্রামে কাটিয়েছে। দু’মাসের মধ্যে হঠাৎ কালীর এ দৈহিক গঠন দেখে রীতিমত অবাক। কালী সবেমাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অথচ অন্যান্য সমবয়সী মেয়ের তুলনায় তার স্ত্রী অংঙ্গগুলি বেশ অগ্রসর। শংকর কালীকে তার পাশে বসাতে গিয়ে নিজের দেহের রক্ত চলাচলের দ্রুততা অনুভব করে। সে ক্ষণে ক্ষণে কালীর বুকের দিকে তাকায়। কালীর অস্বস্থি লাগে। কিছু বলতেও পারে না লজ্জায়। কালী একটা অংক কষতে পারলে শংকর ওর মাথায় ও পিঠে হাত বুলায়। কালীর তখন সারা শরীর শিরশির করে উঠে। এক সময় সে বলে উঠে--
-- স্যার, আমি আসছি।
-- কোথায় যাচ্ছ?
-- এইতো ও ঘরে।
কালী পশ্চিমের ঘরে গিয়ে বুকে ওড়না জড়িয়ে পড়তে আসল। শংকর অবাক! দু’জনে হঠাৎ নিরব। শংকরও অংক করতে বলছে না। কালীও কিছু করছে না। শুধু আঁকি-উঁকি করছে খাতায়।
-- জয়, তুমি যাও। তোমার ছুটি। উষা, কে লিখতো। এবার আই লিখ, পাশে দু’টা এস দাও। অর্থ কি হল বলতো?
--জানিনা--
--আচ্ছা ব্রেস্ট অর্থ কি বলতো? থাক পারবে না।
কালীর আসল নাম উষা। গাঁয়ের রং কালো বলে সবাই তাকে কালী বলে ডাকে। নামটা কালীর কাছে যেমন অভ্যস্ত, সবার কাছেও তেমনি। কালী স্যারের চোখে মুখে তাকিয়ে তার অন্য রকম ইংগিত ঠিকই বুঝতে পারছে। স্যার সব সময় তাকে ধমক দিয়ে কথা বলতো। আজকে কেন এমন হল। কালীর কাছে রহস্য মনে হচ্ছে।
-- লাভ অর্থ কি, বলতো?
কালী কোন কথা বলল না । মুখ গোমড়া করে রইল।
-- আচ্ছা কালী, তুমি কাউকে ভালবাস? তোমার মঙ্গলের জন্যই বলছি--
-- (রাগত স্বরে) জানিনা--
-- থাক, আজ তোমার ছুটি।
কালী রাতের বেলায় মায়ের কাছে সব বলে দেয়। পরদিন শংকর পড়াতে আসলে শেফালী তাকে কিছু কটু কথা শুনিয়ে মাসের বেতন দিয়ে বিদায় করে দেয়। পরবর্তীতে আরো একজন ডিগ্রী পড়ুয়া ছেলেকে মাস্টার হিসাবে রাখা হয়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে কালীপদ রঞ্জিতা নামের এক মহিলার কাছে তাদের পড়তে দেয়। ভাই-বোন দু’জনেই মহিলার বাসায় পড়তে যায়।
বার্ষিক পরীক্ষার খারাপ রেজাল্টের জন্য কালীপদ কালীকে মেরেছে। সারারাত সে ঘুমাতে পারেনি। শুধু খারাপ রেজাল্ট আর শংকরকে স্যারকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে সারারাত কেটে গেছে। শংকর যা বলেছে--তা যদি সে মাকে না বলত, তবে নিশ্চয় শংকর স্যারকে চলে যেতে হত না। তার মঙ্গলের জন্য স্যার কি বলতে চেয়েছিল। শংকর স্যার সেদিন কান্নার্ত চোখে বিদায় নিয়েছিল। কালী লজ্জায় মুখ দেখাতে পারেনি। শংকর স্যার থাকলে হয়তো সে দুই বিষয়ে ফেল করত না। অংকেও এত খারাপ নাম্বার পেত না। গার্হস্থ্য বিজ্ঞানে সে ফেল করেছে। এই বিষয় তার মোটেও ভাল লাগে না। মাছ-মাংস, শাক-সবজি কিভাবে কুটতে হয়, রান্না-বান্না করতে হয়, ছেলেমেয়ে কিভাবে লালন-পালন করতে হয়, ঘর-দরজা কিভাবে পরিষ্কার রাখতে হয়--এই সব মুখস্ত করা তার মোটেও ভাল লাগে না। কালী ভাবে, বিদেশে কি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান আছে? সেখানে নাকি মেয়েরাও কৃষিকাজ করে। অথচ আমাদের দেশে...। কালীর ধর্ম সাবজেক্টটা পড়তে আগে ভাল লাগত, এখন ভাল লাগে না। তার মাঝে মাঝে মনে হয়, ধর্ম না থেকে মহামনীষীদের জীবনী থাকলে অনেক ভাল হত। এগুলো পড়ে কেউ ধার্মিক হয়েছে বলে তার মনে হয় না। বরং যারা পাপ বেশি করে তারাই ধর্ম-কর্ম বেশি করে। বেশি বেশি পাপ করে বৃদ্ধ বয়সে হরি হরি, রাম রাম শুরু করে। তার মতে, এই বইটা বৃদ্ধ বয়সে বাধ্যতামূলক করা উচিত।
সপ্তম শ্রেণীর গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের ক্লাশে একদিন মর্জিনা শিক্ষিকা সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছিল--কে কি হতে চায়? সবাই বিভিন্ন পেশার কথা বলেছে। কিন্তু কালী বলেছে সে আদর্শ গৃহিনী হবে, হাড়ি-পাতিল মাজবে, সন্তানাদি লালন-পালন করবে। নইলে গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের অবমাননা হবে। ধর্ম-কর্ম করবে, সতীত্ব প্রমাণের জন্য সীতার মত অগ্নি-পরীক্ষা দেবে, স্বর্গ পাবার জন্য দেব-দেবীদের সন্তুষ্ট করবে, গীতা পড়বে, মহাভারত পড়বে, সীতা পড়বে, দ্রোপদী পড়বে। সীতার মত আদর্শময়ী নারী হবে, দ্রোপদীর মত নয়। শিক্ষিকা অবাক হয়ে বলে, এতটুকু মেয়ে বলে কি! লাজ-লজ্জা কিচ্ছু নাই, এত সাহস তোমার!
চলবে)
প্রথম পর্বের লিংক-https://cutt.ly/3Q2d5Nf
পর্ব-২ https://cutt.ly/uQ2aVir