দুর্দান্ত জয় কেকেআরের

প্রকাশ : 2021-09-21 08:06:40১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

দুর্দান্ত জয় কেকেআরের

একটা প্রশ্ন আগামী কয়েক দিন আইপিএল দুনিয়ায় বহুল চর্চার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। বিরাটকোহলির ক্যাপ্টেন্সি ছাড়ার সিদ্ধান্ত কি এলোমেলো করে দিয়েছে আরসিবিকে? পরের ম্যাচগুলোতে কী হবে, সে কথা পরে বোঝা যাবে। কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচ ধরে এগুলে কিন্তু বলতে হবে, আরসিবি দলের অবস্থা সেই কথাই শোনাচ্ছে। 

আইপিএলের প্রথম পর্বে প্রথম তিনের মধ্যে থাকা বেঙ্গালুরু গতকাল সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) মাত্র ৯২ রানে অল আউট হয়ে গেল কেকেআরের বিরুদ্ধে। সর্বোচ্চ রান দেবদত্ত পাড়িক্কালের (২২)। তারপর শ্রীকর ভরত (১৬)। পার্পল ক্যাপ দখলে নেওয়া পেস বোলার বোলার হর্ষ প্যাটেল ১২ না করলে আরও রুগ্ন দেখাত আরসিবির স্কোরবোর্ড।

৯৩ রানের লক্ষ্য যখন থাকে, যে কোনও টিম চাপহীন ক্রিকেট খেলে। কেকেআর তাই করল। শুভমন গিল আর এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া বাঁহাতি ওপেনার বেঙ্কটেশ আইয়ারের ৮২ রানের পার্টনারশিপটাই সব গল্প শেষ করে দিল। মাত্র ১০ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নাইটরা। এই ম্যাচে প্রাপ্তি বেঙ্কটেশ। ওপেনিং জুটি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক পরীক্ষা চালালেও কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট সফল হয়নি। 

অনেক দিন পর শুভমনের সঙ্গীর খোঁজ পেল কেকেআর। প্রথম ম্যাচ খেলতে নামলেও আরসিবির বোলিংকে ক্লাবস্তরে নামিয়ে এনেছিলেন বেঙ্কটেশ। আইপিএলের মঞ্চ থেকেই উঠে আসেন তরুণ ক্রিকেটাররা। যদি নিজেকে ধরে রাখতে পারেন, বেঙ্কটেশ কিন্তু দেবদত্ত পাডিক্কাল, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়দের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলতে পারেন। শুভমন ৪৮ করে ফিরে গেলেও নট আউট ৪১ রান করে টিমকে জিতিয়ে গেলেন বেঙ্কটেশ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সোজা কিছু তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। টিমের অন্তত দু’জন ব্যাটসম্যানকে একটা দিক ধরে রাখতে হবে। অন্য দিক দিয়ে ঝড় বইয়ে যাবেন বাকিরা। বিরাটের টিমকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন, আগে ব্যাট করে কলকাতা ৮০ বা তার সামান্য বেশি রানে অল আউট হয়ে গেছে। উইকেট পড়ছে পড়ুক, দ্রুত রানটা তুলে নিতে হবে। এই তাড়াহুড়ার জন্যই কেউ একটা দিক আগলে রেখে ইনিংস গড়ার কাজটা করতে পারলেন না। 

বিরাট যে মারাত্মক চাপে আছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপের পর আর ভারতের ক্যাপ্টেন্সি করবেন না। গত রবিবার আবার আরসিবির ক্যাপ্টেন্সি ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। একের পর এক চমকে দেওয়া সিদ্ধান্ত আর বিতর্কের পর টিম নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন বিরাট। ওপেন করতে নেমেছিলেন দেবদত্ত পাড়িক্কালের সঙ্গে। একটা বড় ইনিংস বিরাটের দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারত সহানুভূতির হাওয়া।

প্রসিধ কৃষ্ণাকে দুরন্ত অন দ্য রাইজ ড্রাইভটা দেখে মনে হয়েছিল, বিরাট কিছু করতেই নেমেছেন কোহলি। কিন্তু কৃষ্ণার ভিতরে আসা বলটা বুঝতে পারলেন না তিনি। ৫ রান করে ফিরে গেলেন। বিরাটের মতোই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১০), এবি ডে ভিলিয়ার্সরাও (০) ফিরলেন দ্রুত। টিমের মেরুদণ্ড ভেঙে গেলে আর কিছু করার থাকে না। কেকেআর বোলাররা সেই সুয়োগটাই নিলেন।

কয়েক দিন আগে কুলদীপ যাদব কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে উগরে দিয়েছেন তার ক্ষোভ। টিমে সুয়োগ পাচ্ছেন না বলে। বরুণ চক্রবর্তীর মতো কাউকে বসিয়ে কুলদীপকে খেলানোর প্রশ্নই ওঠে না। কেন, সেটা আরও একবার দেখালেন বরুণ। ১৩ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট। ঝুলিতে ম্যাক্সওয়েল, সচিন বেবি, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। বরুণের মতোই আর এক দিক থেকে দুরন্ত বল করলেন আন্দ্রে রাসেলও। একই ওভারে ফেরালেন ভরত ও এবিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্যাপ্টেন অনেকদিন মনে রাখবেন রাসেলের নিখুঁত ইয়র্কারটা।

৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তিনেই থেকে গেল বিরাটের টিম। কিন্তু কেকেআর ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়া রানরেটে ব্যাপক প্রভাব ফেলল। পরের ম্যাচ চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে। না জিততে পারলে কিন্তু প্লে-অফ থেকে দূরে সরে যেতে হবে। কেকেআর উঠে এল পাঁচে। ইওন মর্গ্যানের টিম এই প্রথম এতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ৯২ (দেবদত্ত ২২, ভরত ১৬, হর্ষ ১২, রাসেল ৩/৯, বরুণ ৩/১৩, ফার্গুসন ২/২৪)। কলকাতা নাইট রাইডার্স ৯৪/১ (শুভমন ৪৮, বেঙ্কটেশ নট আউট ৪১, চাহাল ১/২৩)।