দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক ঢোল তৈরীর কারিগররা

প্রকাশ : 2021-09-09 15:57:39১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক ঢোল তৈরীর কারিগররা

হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে রংপুরের কাউনিয়ার বাদ্যযন্ত্র তৈরীর কারিগররা। আর কিছু দিনের মধ্যেই প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ঢাক-ঢোলের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির গুলো। যদিও আধুনিক যন্ত্রপাতির কারনে ঢাক-ঢোলের চাহিদা কমে যাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, কাউনিয়ার বাদ্যযন্ত্র তৈরির দোকানে ঢাক-ঢোল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। করোনা লকডাউনের কারনে সারা বছর তাদের ব্যবসা হয়নি। এবার আশা করছে আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে এবং তাদের ব্যবসা হবে। আগের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় দম ফেলার সময় নেই তাদের। কাঠের খুটখাট শব্দে মুখর দোকান গুলো। ঢাক-ঢোলের জন্য খোল তৈরি, রং করা, চামড়া লাগানো এবং মেরামতে ব্যস্ত বেশিরভাগ কারিগর। 

শিবু তাল তরঙ্গ মালিক শ্রী সুভাষ চন্দ্র দাশ বলেন, হিন্দুশাস্ত্রে এর ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। আগের দিনের মতো ঢাক-ঢোলের তেমন চাহিদা নেই। যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢাক-ঢোল, খোল, তবলা, একতারা, দোতারা, সারিনদা। পূজা উপলক্ষে ঢাক-ঢোলের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। করোনার শুরু থেকে বলাযায় কোন কাজই ছিল না। হিন্দু বিয়েতে ঢাক ঢোল সাঁনাই বাজলেও করোনার কারণে আনুষ্ঠানিক ভাবে তেমন বিয়ে হয়নি ফলে ঢুলিদের ঢোলের চাহিদা ছিল না। তিনি আরো জানান আমাদের কাছে পাটগ্রাম, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চিলমারী, পীরগাছা সহ উত্তর অ লের অনেক ঢুলি আসে। আমার এখানে আমার ছেলে শিবুসহ আরো দুইজন কাজ করে, তাদের বাড়ি মানিকগঞ্জ। তাদের মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা করে। 

কারিগর দিনেশ চন্দ্র দাশ বলেন, বর্তমান যুগে আধুনিক যন্ত্রপাতির কারনে ঢাক-ঢোলের বাজনা কমে যাচ্ছে। কাঠ, চামড়াসহ ঢাক-ঢোল তৈরির বিভিন্ন উপকরণের দামও বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন খুব একটা লাভ হয় না। আমরা হারমনিয়াম, ঢাক,ঢোল, খোল,তবলা, ডুগি, ড্রাম সেট, খনজরি, খনম, একতারা সহ অনেক ধরনের বাদ্যযন্ত্র তৈরী করি। করোনা কালে আমাদের খোঁজ কেউ নেইনি। পুজা উপলক্ষে একটু চাহিদা বাড়ায় এখন পরিবার নিয়ে একটু ভাল আছি। 

কাউনিয়া সংগীত শিক্ষক ষতিশ চন্দ্র জানান, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের কারণে উৎসব-অনুষ্ঠানে এখন আর ঢোলের তেমন কদর না থাকলেও হিন্দু বিয়ে ও পূজা-পার্বনে এখনও ঢাক-ঢোলের কদর রয়েছে। পূজার আরতিতে ঢোলের এখন কোনো বিকল্প নেই। তাই বছরের এ সময়টাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাদ্যযন্ত্র তৈরীর কারিগররা।