দিল্লির টানা দ্বিতীয় হার, উইকেটশূন্য মোস্তাফিজ
প্রকাশ : 2022-04-08 09:29:54১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মাঝারি সংগ্রহ নিয়েও শেষ পর্যন্ত লড়াই করল দিল্লি ক্যাপিটালস। আর লড়াই শেষ পর্যন্ত নেওয়ার পেছনে কিপটে বোলিংয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য উইকেটশূন্য থাকলেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার। নিজের শেষ ওভারে কিছুটা খরুচে বোলিংও করলেন তিনি। তবে দিল্লির টানা দ্বিতীয় হারের পেছনে অবশ্য ব্যাটারদের পাশাপাশি বল হাতে খরুচে এনরিক নরকিয়ার দায়-ই বেশি। ২০২২ আইপিএলের ম্যাচে বৃহস্পতিবার লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে দিল্লি। মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে শুরুতে ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে দিল্লি। জবাবে ৪ উইকেট হারিয়ে ও ২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় লক্ষ্ণৌ।
এর আগে চলতি আইপিএলে গুজরাটের বিপক্ষে নিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমে দুর্দান্ত বল করেন ‘দ্য ফিজ’। গুজরাটের বিপক্ষে ম্যাচে দিল্লির সেরা বোলিং পারফরম্যান্স মোস্তাফিজেরই। তিনি নির্ধারিত চার ওভার বল করে ২৩ রান খরচ করে নিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। আজ অবশ্য কিপটে বোলিংই করেছেন তিনি, কিন্তু ছিলেন উইকেটশূন্য। তার দলও পেল না সাফল্যের দেখা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় লক্ষ্ণৌ। তবে শুরুতে তাদের রানের গতি কমিয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। পাওয়ার প্লেতে দুই ওভার করেন তিনি। এই দুই ওভারে কাটার মাস্টার খরচ করেন মাত্র ৮ রান। কিন্তু প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে আইপিএল খেলতে নামা প্রোটিয়া পেসার এনরিক নরকিয়া দুই হাতে রান খরচ করেন। নিজের প্রথম ওভারেই তিনি খরচ করে বসেন ১৯ রান। ওই ওভারে এক ছক্কা ও ৩ চার হাঁকান কুইন্টন ডি কক।
ফিজের নিয়ন্ত্রিত বোলিং সত্ত্বেও রাহুল ও ডি কক মিলে উদ্বোধনি জুটিতে তুলে ফেলেন ৭৩ রান। তবে রাহুল শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে। ১০ম ওভারে কুলদিপ যাদবের বলে পৃথ্বী শ'র হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে লক্ষ্ণৌ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ২৪ রান। তবে অন্যপ্রান্তে দারুণভাবে রানের চাকা সচল রাখেন ডি কক। খুব আগ্রাসী ব্যাটিং না করলেও রান তোলার গতি ঠিক রাখেন এই প্রোটিয়া উইকেটকিপার-ব্যাটার। সেই সঙ্গে ৩৬ বলের মোকাবিলায় তুলে নেন দারুণ এক ফিফটিও।
ডি কক একপ্রান্ত ধরে রাখলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটার এভিন লুইস তাকে সঙ্গে দিতে ব্যর্থ হন (৫)। তাকে কুলদিপের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন ললিত যাদব। তবে ডি কককে থামানো যাচ্ছিল না। ১৬তম ওভারে ফের তার স্বদেশী নরকিয়া ওভারের তৃতীয় বলে ইনিংসে নিজের দ্বিতীয় নো বল (উচ্চতার কারণে) বদলি বোলার কুলদিপ যাদবের বলে পর পর দুই চার হাঁকান তিনি। কিন্তু ওভারের শেষ বলে সরফরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন ডি কক। তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৮০ রান।
ডি ককের বিদায়ের পর ফের মোস্তাফিজকে আক্রমণে আনে দিল্লি। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করেন তিনি। আর তাতে শেষ ১৮ বলে লক্ষ্ণৌর সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৪ রানের। ১৮তম ওভারে কুলদিপের বলে তারা নিতে পারে মাত্র ৫ রান। পরের ওভারে ফের বোলিংয়ে আসেন ফিজ। প্রথম ২ বলে মাত্র ২ রান খরচ করলেও তৃতীয় বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকান ক্রুণাল পান্ডিয়া। পরের তিন বলে ডাবল। অর্থাৎ ওই ওভারে আসে ১৪ রান। শেষ ওভারে ৫ রানের লক্ষ্য পেরোতে গিয়ে শার্দূলের প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দীপক হুডা (১১)। কিন্তু এক বল বিরতি দিয়েই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্কোর লেভেল করেন আয়ুশ বাদোনি। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন এই তরুণ ভারতীয় ব্যাটার।
বল হাতে ৪ ওভারে সাড়ে ৬ ইকোনোমি রেটে ২৬ রান খরচ করেন মোস্তাফিজ। আরেক পেসার ললিত ৪ ওভারে ২১ রান খরচ করে নেন ১ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন কুলদিপ। তবে নরকিয়া মাত্র ২.২ ওভার বল করেই খরচ করে বসেন ৩৫ রান; ওভারপিছু ১৫ রান করে! মূলত তার খরুচে বোলিংটাই ডুবিয়েছে দিল্লিকে।
এর আগে পৃথ্বী শ'র ফিফটি এবং ঋষভ পন্থ ও সরফরাজ খানের ৪০ ছুঁইছুঁই ইনিংসে মাঝারি সংগ্রহ পায় দিল্লি ক্যাপিটালস। ওপেনার পৃথ্বীর ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬১ রানের ইনিংস। পথ ৩৬ বলে ৩৯ রানে এবং সরফরাজ ২৮ বলে ৩ চারে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তবে ব্যর্থ হয়েছেন দলটির অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (৪) ও ক্যারিবীয় ব্যাটার রভমান পাওয়েল (৩)।
বল হাতে ২ উইকেট নিয়েছেন লক্ষ্ণৌর বোলার রবি বিষ্ণুই এবং বাকি উইকেট কৃষ্ণাপ্পা গৌতম।
এই নিয়ে ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট অর্জন করা লক্ষ্ণৌ উঠে এলো পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। আর ৩ ম্যাচে ১ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে সাতে অবস্থান দিল্লির। অন্যদিকে লক্ষ্ণৌর সমান পয়েন্ট নিয়েও রান ব্যবধানে এগিয়ে থাকা কলকাতা নাইট রাইডার্স আছে শীর্ষে।