ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং স্বাধীনতা আন্দোলন

প্রকাশ : 2023-07-10 13:26:32১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং স্বাধীনতা আন্দোলন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ। এটি ১৯৪৬ সালের ১০ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় যা বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে হতে স্নাতক পর্যায়ে পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭ সালে ভারতবর্ষের ক্ষমতা দখলের প্রায় একশ বছর পর ১৮৫৩ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠারও একশ’ বছরে এ অঞ্চলে কোন মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়নি। মধ্যবর্তী এ দীর্ঘ সময়ে কিছু মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মিটফোর্ড হাসপাতালের সাথে প্রতিষ্ঠিত হয় মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুল (যা বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ), ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও সিলেট মেডিকেল স্কুল।

তবে পূর্ববঙ্গে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিতে নিতে চলে আসে ১৯৩৯ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার বছরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকারের কাছে ঢাকায় একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব পেশ করে। কিন্তু যুদ্ধের ডামাডোলে হারিয়ে যাওয়া প্রস্তাবটি ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষে আলোর মুখ দেখে। ব্রিটিশ সরকার উপমহাদেশের ঢাকা, করাচী ও মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই) তিনটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ উপলক্ষে ঢাকার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডাঃ মেজর ডব্লিউ জে ভারজিন এবং অত্র অঞ্চলের প্রথিতযশা নাগরিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাদের প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করেই ১০ জুলাই ১৯৪৬ তারিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ চালু হয়।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন

১৯৪৮ এর মার্চ মাসে রমনার রেসকোর্সে [বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান] কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ যেদিন ঘোষণা দেন, ‘উর্দু, শুধু উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ সেদিন বিক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজই ক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল, প্রতিবাদে হয়েছিল সরব। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে মুখর প্রতিবাদী যুবকদের প্রতিহত করতে শাসকেরা বেছে নিয়েছিল নির্যাতনের কৌশল। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ তো ছিলই, ছিল বিপ্লবী ছাত্রদের গ্রেফতার। অনেকের সাথে সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র এম আই চৌধুরী, আবু সিদ্দিক, আলী আসগর, জসিমুল হক ও ফরিদুল হক কারাবরণ করেন।

এরপরে ১৯৫২ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল [যা ব্যারাক নামে পরিচিত ছিল] ভাষা আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র রূপে আবির্ভূত হয়। এখন যেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সেখানেই ছিল ব্যারাক। টিনশেড প্রায় ২০টি ব্যারাক ছিল, যেখানে মেডিকেলের ছাত্ররা থাকত। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সংসদ ভবন (বর্তমান জগন্নাথ হল) এর নিকটবর্তী হওয়ায় কৌশলগত কারণেই সকল ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে মেডিকেল হোস্টেল গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ঢাকা শহরের সকল ছাত্ররা মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের সামনে সমবেত হতে শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সংসদ ভবন অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করার- কারণ তখন সংসদ অধিবেশন চলছিল। সশস্ত্র পুলিশি প্রহরা এবং ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় কোন মিছিল আয়োজন সম্ভব ছিল না। কিনতু অকুতোভয় ছাত্ররা বিকাল ৪টার দিকে ঐতিহাসিক আমতলা [যা বর্তমান জরুরি বিভাগের পাশে অবস্থিত ছিল] থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়। মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউর।

একুশে ফেব্রুয়ারি সূর্যাস্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেয় শহীদদের রক্তরঞ্জিত স্থানে একটি মিনার স্থাপন করার। ১২ নং ব্যরাকের ৬নং রুম ও হোস্টেলের পূর্ব পাশের গেটের মধ্যবর্তী এক জায়গায় মিনারটি ২২শে ফ্রেব্রুয়ারি ও ২৩শে ফেব্রুয়ারি রাতভর কাজ করে গড়ে তোলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা। আর এ জন্য হাসপাতালের নির্মাণ কাজের জন্য সংরক্ষিত ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়।

উনসত্তরের গণঅভুত্থান

ষাটের দশকে ছাত্র ও জাতীয় রাজনীতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। আইয়ুব খানের সামরিক সরকার ছাত্র-রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপর নিপীড়ন শুরু করলে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যে সর্বজনাব সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক, কে এম ওবায়দুর রহমান, মোঃ ফরহাদ[প্রয়াত], কাজী জাফর আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, হায়দার আকবর খান রনো, নুরুজ্জামান, শেখ মনি [প্রয়াত], সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক(প্রয়াত)প্রমুখ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বকশীবাজারে ছাত্রদের হোস্টেলে থাকতেন। আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচী বা রূপরেখা নির্ধারণের বেশির ভাগ সভাই সে সময় কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হত। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাস শুধুমাত্র তৎকালীন ছাত্রনেতাদের নিরাপদ আশ্রয়স'ল বা সভার স্থানই ছিল না, এই কলেজের অনেক ছাত্র জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। আইয়ুব খান জেল, হুলিয়া ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুকাল আন্দোলন দমন করে রাখলেও ’৬৮ সালের শেষের দিকে ছাত্রনেতৃবৃন্দ পুনরায় আন্দোলন গড়ে তুলতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন হলে ছাত্রদের সঙ্গে গোপনে আলোচনা শুরু করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ’৬৯ এর ২০ জানুয়ারি ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলে পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান জরুরি বিভাগের নিকট মিছিলে প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান গুরুতর আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কিন্তু চিকিৎসা শুরুর পূর্বে তিনি বর্তমান ৮ নং ওয়ার্ডে মারা যান। মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা শহীদ আসাদুজ্জামানের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে প্রথম শোক মিছিল বের করে। এই দশকে বিভিন্ন আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকার প্রায়ই ঢাকা শহরে কারফিউ দিতো। ছাত্র-জনতা কারফিউ ভেঙ্গে মিছিল বের করলে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ এমনকি গুলিবর্ষণ পর্যন্ত করত। তখনকার ছাত্র-চিকিৎসকরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেই কারফিউর মধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসত। এই দুঃসাহসিক কাজ করতে গিয়ে অনেকে নির্যাতন পর্যন্ত ভোগ করেছে। ’৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় ছাত্রদের স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের কয়েকদিন পরেই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা বর্তমান ডক্টরস ক্যাফেটেরিয়ার চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

একাত্তরেরে মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১এর মুক্তিযুদ্ধে এই কলেজ থেকে পাশ করা চিকিৎসক, তৎকালীন ছাত্র, কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এদের অনেকেই অস্ত্রহাতে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা এবং অসহায় বাঙালিদের চিকিৎসা করেছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা তিনভাগে বর্ণনা করা যেতে পারে- এক ভাগে যারা ঐ সময়ে কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের তৎপরতা, আরেকভাগে এই কলেজ থেকে পাশকৃত চিকিৎসকদের একটি অংশ যাঁরা অন্যান্য হাসপাতাল ও সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে কর্মরত ছিলেন কিনতু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছেন এবং শেষভাগে যারা অস্ত্রহাতে যুদ্ধ না করলেও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিদের চিকিৎসা করেছেন।

এই কলেজের তৎকালীন ছাত্রদের মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মোয়াজ্জেম হোসেন, সেলিম আহমেদ, আলী হাফিজ সেলিম, আবু ইউসুফ মিয়া, ইকবাল আহমেদ ফারুক, মুজিবুল হক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোজাফ্‌ফর, আমজাদ হোসেন, ওয়ালী, ওসমান, গোলাম কবীর, জিল্লুর রহিম, ডালু, নুরুজ্জামান, শাহাদত প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদের অনেকেই ঢাকা শহর কমান্ডের তত্ত্বাবধানে থেকে যুদ্ধে করেছেন। এই কলেজের কয়েকজন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা শহরের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ বর্তমান শহীদ ডাঃ ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসে রাজাকারদের উপর হামলা চালায়। ছাত্রাবাসের ১০৭ নং রুমে সে সময় রাজাকারদের ঘাঁটি ছিল। তাদের গোপন হামলায় হোস্টেল গেটে পাহারারত ২ জন রাজাকার নিহত হয়। গুলির শব্দ শুনে ১০৭ নং রুমে অবস্থানরত অন্যান্য রাজাকাররা পালিয়ে যায়। এদের একজন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকলে সেও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির আঘাতে নিহত হয়। একই দিনে তারা ২১৯নং রুমে হামলা চালায়। এই গ্রুপটি কলেজ-ডি সেকশন হলেও বোমা চালিয়েছিল।

এই কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী নিপা লাহিড়ী যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ভারতে যাবার পথে ফতুল্লাতে নিহত হন। আর একজন ছাত্র সিরাজুল ইসলাম হাসপাতালে বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেতেন। তিনি রাতে হোস্টেলে না গিয়ে হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ডে ঘুমাতেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কিছু স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্রের সহায়তায় তাকে ১১ ডিসেম্বর রাতে রাজাকার বাহিনী ক্যান্সার ওয়ার্ড থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করে।

তৎকালীন সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লীডার এম শামসুল হক, মেজর খুরশীদ, মেজর শামসুল আলম, ক্যাপ্টেন আব্দুল লতিফ মল্লিক, ক্যাপ্টেন মোশায়েফ হোসেন, ক্যাপ্টেন আঃ মান্নান, লে আখতার, লে নুরুল ইসলাম প্রমুখ অফিসারবৃন্দ বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োজিত ছিলেন। এদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ক্যাপ্টেন খুরশীদ বীরউত্তম ও লে আখতার বীরপ্রতীক উপাধি পেয়েছিলেন। তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের যে সমস্ত সদস্য শহীদ হয়েছেন তাদের মধ্যে ডা. লে ক এ এফ জিয়াউর রহমান, ডা. মেজর আসাদুল হক, ডা. লে আমিনুল হক, ডা. লে খন্দকার আবু জাফর মোঃ নূরুল ইমাম প্রমুখ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত প্রায় সকল চিকিৎসকই আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করতেন। মুক্তিযোদ্ধারা আসল নাম গোপন রেখে হাসপাতালে ভর্তি হতেন। হাসপাতালে এই সমস্ত কাজের সমন্বয়ের দায়িত্ব্‌ পালন করতেন অধ্যাপক ফজলে রাব্বি। তিনি তার আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করতেন মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। শহীদ অধ্যাপক আলিম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে কর্মরত থাকলেও বেশিরভাগ সময় কাটাতেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা অনেক চিকিৎসক ভারতে গিয়ে বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঐ সমস্ত চিকিৎসকদের অনেকে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন। আবার কেউ আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের চিকিৎসা করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশকৃত চিকিৎসকদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা হলেন- ডা. শিশির মজুমদার, ডা. সরওয়ার আলী, অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ডা. মাকসুদা নার্গিস, ডা. কাজি তামান্না, ডা. ফৌজিয়া মোসলেম ও ডা. সমীর কুমার শর্মা প্রমুখ (অনেকের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি)। দেশের ভিতর থেকে অসংখ্য চিকিৎসক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য পাকবাহিনী ও রাজাকারদের হাতে অনেককে জীবন দিতে হয়েছে।