ঢাকায় এসেই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খোঁজ নিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : 2025-11-22 14:11:10১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আজ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। বিমানবন্দরে নামার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন তিনি। এ সময় তিনি গতকালের (২১ নভেম্বর) ভূমিকম্পে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে জানতে চান এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। নরসিংদীর মাধবদীতে উৎপত্তি হওয়া এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৭। এতে বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন, ঢাকায় চারজন ও নারায়ণগঞ্জে এক শিশুর প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আর আহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৮টায় ড্রুকএয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে লাল গালিচায় সংবর্ধনা জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাকে স্বাগত জানান।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দুই নেতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। এ সময় তোবগে ভূমিকম্পে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে জানতে চান এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বৈঠক শেষে তোবগেকে ১৯ বন্দুক স্যালুট এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রওনা হন। তিনি স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং স্মারক বইতে স্বাক্ষর করবেন।
জানা গেছে, দুপুরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ভুটানের এই নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর বিকেল ৩টার দিকে তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক আয়োজন করা হবে। সন্ধ্যায় আয়োজিত এক সরকারি নৈশভোজেও যোগ দেবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মো. আসাদ আলম সিয়াম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকের পর দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া, শিল্পসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ কর্তৃক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ক কয়েকটি সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে এবং ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা যায়।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরদিন ২৩ নভেম্বরে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে।’