ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে মাদানীকে পুলিশে দিলো র্যাব
প্রকাশ : 2021-04-09 19:49:47১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানায় মামলাটি দায়ের করে র্যাব। মামলা করার পর র্যাব মাদানীকে গাছা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (এএসপি) ইমরান খান। তিনি বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে জিএমপির গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জিএমপির দক্ষিণ বিভাগের গাছা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আহসানুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে র্যাব বাদী হয়ে গতকাল রাতে মামলাটি করে। মামলায় অভিযোগ করা হয় তিনি আইন না মেনে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
এর আগে বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচিত ও ভক্তরা অভিযোগ করে আসছিলেন, মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে নেত্রকোনার নিজ বাসা থেকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া রফিকুল ইসলামও সবশেষ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমাকে গুম করার চেষ্টা চলছে’।
এরপর দুপুরের দিকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী র্যাবের নিরাপত্তায় রয়েছেন মর্মে নিশ্চিত হয়েছি। অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।’
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় রয়েল রিসোর্ট মাওলানা মামুনুল হকসহ এক নারীকে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয়রা। এতে মামুনুলের ‘দ্বিতীয় স্ত্রীর’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক লাইভে এসে রফিকুল ইসলাম মাদানী মামুনুল হকের সমর্থনে কথা বলেন।
এর আগে ২৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের মোদিবিরোধী মিছিল থেকে এ ‘শিশুবক্তা’কে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।
ওই দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘিরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের একটি মিছিল রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি এলাকা থেকে শুরু হয়। এতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিছিলটি মতিঝিলে যাওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় রফিকুল ইসলামকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছিল।
রফিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়, থাকেন গাজীপুরে। তিনি নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদরাসার পরিচালক। রফিকুল ইসলামের বয়স ২৬ বছর। অনেকেই তাকে ‘শিশুবক্তা’ হিসেবেও চেনেন। তবে নিজের নামের সঙ্গে ‘শিশুবক্তা’ শব্দটি ব্যবহারে আপত্তি জানান তিনি নিজেই। বিভিন্ন সময়ে ওয়াজে তার নামের সঙ্গে ‘শিশুবক্তা’ ব্যবহার না করারও অনুরোধ জানান।
বিভিন্ন ওয়াজে নিজের বয়স সম্পর্কে রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘১৯৯৫ সালের শেষের দিকে আমার জন্ম। এখনও আমাকে শিশুবক্তা বানিয়ে রাখবেন কেন? আমি ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতে পড়াশোনা করেছি। এরপর ক্লাস সিক্স পর্যন্ত স্কুলে পড়েছি। তারপর মাদরাসায় ভর্তি হই। নুরানিতে পড়েছি এক বছর। আল্লাহ রহমতে দুই বছরে হেফজ শেষ করেছি। এখানে তিন বছর, আগের ১২ বছর মোট হলো ১৫ বছর। এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েছি।’