ডাসারে প্রতিবন্ধী তিন বোনের মানবেতর জীবনযাপন
প্রকাশ : 2025-05-11 19:22:14১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

বিকলাঙ্গতা দলাতে পারেনি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার দর্শনা বাজারের পূর্ব দর্শনা গ্রামের উম্মি খাতুন, আকিতন ও নুননাহার ষাটোর্ধ বৃদ্ধা আকিতন নেছাকে। সমাজে ৮/১০জন শারীরিক প্রতিবন্ধীর মধ্যে তিনিও একজন। তবে তিনি প্রতিবন্ধী থাকা সত্ত্বেও তার সামান্য আয় দিয়ে নিজের পাশাপাশি দুমুঠো আহার যোগাতে হচ্ছে পরিবারের অন্য দুই সদস্য আকিতন ও নুননাহার। তারাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। সরকারের দেয়া একজনের সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে পেট না চলায় তাকে যেতে হয় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। কারণ তাকে সহ সংসারে আরও দুজনের পেটে দুমুঠো আহারে যোগাতে হবে। এলাকাবাসী তাদের সাহায্য সহযোগিতা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় তাদের বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে পরেছে। আর স্থানীয় প্রশাসন করছেন, অসহায় এই পরিবারটিকে যথা সম্ভব সর্বাত্তক সহযোগিতা করা হবে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পূর্ব দর্শনা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উম্মি খাতুন, আকিতন ও নুননাহার আর-দশটা শিশুর মত তারাও স্বাভাবিকভাবেই জন্ম গ্রহন করেন। কিন্তু জন্মের কয়েক বছর পরই অজানা এক রোগে আক্রান্ত হয়ে তারা সবাই শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিনতি হয়। গত একযুগ আগে পিতা সুলতান হাওলাদার ও মাতা জাহেরা বেগমের মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পরে তারা। পরিবারের উপার্জনক্ষম কোন পুরুষ না থাকায় পাড়া প্রতিবেশি সামান্য সাহায্য সহযোগিতার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। নানা রোগে আক্রান্ত আকিতন নেছা শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়া আগের মতো মানুষের কাছে সাহায্যের জন্য যেতেও পারে না। আকিতন নেছা প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও পরিবারের অন্য দুজন সদস্যের ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা সহ সরকারী কোন সহায়তা। ফলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির এই সময়ে অর্থকষ্টে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। তাই সমাজের বিত্তবান ও সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন এই অসহায় পরিবারটি।
এ ব্যপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ডাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম সিকদার বলেন,আমার ইউনিয়নে ৩ বোন একই ঘরে প্রতিবন্ধী । তাদেরও নিয়মিত খোজ-খবর নিতেছি। তাদের ভিজিডি কার্ড কার্ডও দিয়েছি। ভবিষ্যতে কোন অনুদান আসলে তাদের দেওয়া হবে।
ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল আরেফিন বাশার জানান, উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশে অবশ্যই দাঁড়াবে। তারা একান্তই অসহায় মানুষ। তাদের মধ্যে একজনের প্রতিবন্ধী কার্ড আছে। বাকী ২ জন যাতে প্রতিবন্ধী কার্ডের আওতায় আসে তারা যোগাযোগ করলে যথাযথভাবে সে ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাময়িকভাবে যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন কালকিনি উপজেলা প্রশসন থেকে তা করা হবে। তাদের আত্ম কর্মসংস্থানেরও সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তাও করা হবে।
সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী এই পরিবারটিকে সরকারী সহযোগীতার পাশাপাশি সমাজের বৃত্তবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।