টাকা দিচ্ছি পারলে আমাকে গ্রেফতার করুক, ভিসিদের পদত্যাগ দেখার খুবই শখ: জাফর ইকবাল

প্রকাশ : 2022-01-26 10:25:16১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

টাকা দিচ্ছি পারলে আমাকে গ্রেফতার করুক, ভিসিদের পদত্যাগ দেখার খুবই শখ: জাফর ইকবাল

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করলে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ জন ভিসি একসঙ্গে পদত্যাগ করবে বলেছিলেন এমন দৃশ্যটি দেখার খুবই শখ বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে সস্ত্রীক ক্যাম্পাসে এসে এমন মন্তব্য করেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ করলে আমাদের দেশের ৩৪ জন ভিসি একসঙ্গে পদত্যাগ করবে বলেছিলেন সেটা চোখে দেখার খুবই শখ ছিল। জানিনা দেখে যেতে পারি কিনা!

ড. জাফর ইকবাল বলেন, আমি এখানে আসতে চাইছিলাম না। কারণ তোমরা আমরা কথা না শুনলে তাই! তবে আমার ছেলে-মেয়েদের উপর আমার বিশ্বাস ছিল, তাই এসেছি। আমি সংকল্প করে এসেছি তোমাদের অনশন ভাঙিয়ে তারপর আমি সিলেট ছাড়বো। আমি চাই তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও, তবে অনশন ভেঙে আন্দোলন করো। আন্দোলন আর অনশন ভিন্ন জিনিস!

এদিকে বুধবার সকালে ২৮জন শিক্ষার্থীকে একসাথে অনশন ভাঙাবেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এমন কথা পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বসে আছে সে প্রত্যাশিত মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য!

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের ১৩ম দিনে ও অনশনের দীর্ঘ ১৬২ ঘণ্টার বেশি সময় পর এ সময় তিনি আন্দোলনরতদের সহায়তা করায় সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থী আটক হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, 'আন্দোলনের সহায়তা করা কোন অপরাধ নয়।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থে আমার কাছে একটা লেখা চেয়েছিল। সেই লেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের ফান্ডে দিতে এই সম্মানীর টাকাটা আমি নিয়ে এসেছি। এই টাকাটা দিচ্ছি, তোমরা রাখো। সাবেক শিক্ষার্থীরা টাকা দিয়ে সহায়তা করে অপরাধ করলে এবার আমাকেও অ্যারেস্ট করুক পুলিশ।

এসময় জাফর ইকবাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের অবস্থার কথা শুনে কেঁদে ফেলেন।

তার সঙ্গে থাকা ড. ইয়াসমিন হকও বলেন, ঢাকা থেকে আসার আগে একজন আমাকে বলেছিলেন শাবিতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। আমিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বহিরাগত, আমি আমার শিক্ষার্থীদের কাছে এসেছি। আমিও বহিরাগত আমাকেও গ্রেফতার করুক। এবার আমাকে অ্যারেস্ট করুক।

এরআগে ভোর ৪টা ২২ মিনিটে জাফর ইকবাল শাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে হেঁটেই অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান তিনি। সেখানে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন।

এসময় অনশনকারীদের উদ্দেশ্যে ড. জাফর ইকবাল বলেন, আজ তোমাদের ওসিলায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে। তোমাদের আন্দোলনে দেশের ৩৪ ভিসির ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। '

তিনি বলেন, 'আমি আইজিপিকে বলেছি, ছাত্রদের বিশ্বাস করুন। তাদের মারবেন না। সবার হাতে স্মার্টফোন থাকে। একটা ছবি দেখান যে, ছাত্ররা গুলি করেছে। এ সবের কোনো প্রমাণ নেই। '

তিনি আরও বলেন, 'আমি ধরে নিয়েছিলাম, অনশনের এখানে মেডিক্যাল টিম আছে। কিন্তু, এখানে এসে দেখলাম, ডাক্তাররা ছিলেন। কিন্তু, তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে এখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এখানে অনশনকারীদের অবস্থাই যখন এতো খারাপ, তাহলে অসুস্থ (হাসপাতালে ভর্তি) ২০ জনের কী অবস্থা! আমি শঙ্কিত। এটা চরম অমানবিকতা। '