জারোত হামরা মরি গেইনো বাহে
প্রকাশ : 2025-01-02 18:29:32১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
জারোত হামরা মরি গেইনো, হামার ভিতি কায়েও দেখে না, একনা দয়ার নজরে দেখেন বাহে, ’হামাক এ্যাখান কম্বল দেন বাহে। তীব্র শীতে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের মানুষের এমন আকুতি। এ আকুতি সরকার সহ সমাজের উচ্চ বিত্ত মানুষের কাছে।
সরেজমিনে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে গত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের তীব্রতা বেশী হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষরা পড়েছেন মহাবিপদে। আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাবে হাড় কাপানো শীতের তীব্রতায় নিরুপায় হয়ে পড়েছে উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্ঠিত ১৭টি চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। গত কয়েকদিন সূর্যের দেখা নেই, সেই সাথে হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা বাতাসে চরাঞ্চল থেকে শুরু করে উপজেলার সর্বত্রই নতুন করে শীত জেঁকে বসেছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। আর মধ্যবিত্তরা পরেছে চরম বিপাকে। তারা না চাইতে পাচ্ছে না সাহায্য করতে পাচ্ছে। অনেকে খড় কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে। বিশ^নাথ গ্রামের বৃদ্ধা নুরবানু জানান, এই মাসোত ক্যানবা এতো ঠান্ডা বাহে, শীতের কাপরের অভাবত হামরা গুলা মরিগেইনু বাহে, হামার ভিতি কায়ো দেখে না। হামাক এখান কম্বল দিয়া জারত থাকি বাচান বাহে। অতিশীতের কষ্ট থেকে তার এই আর্তনাদ। শুধু বিশ^নাথ গ্রামেই নয়, এ চিত্র তিস্তা পারের দারীদ্রক্লীষ্ট ২২টি চরের। তিস্তা নদীর কোল ঘেষা কাউনিয়ায় ৮৩টি গ্রামের ১৭টি গ্রামই হলো তিস্তার চরাঞ্চল। এ চরাঞ্চলে প্রায় দেড়লক্ষ মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ দারীদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। চরাঞ্চলের ওই সব মানুষের দুঃখের কথা কেউ জানেনা। জানলেও ওদরে কথা কজনইবা মনে রাখে ? ওদেরই একজন হতভাগ্য ঢুসমারা চরের সেকেন্দার আলী জানান হামার কষ্ট চিরকাল, কত সরকার আইসে যায় হামার যেমন কষ্ট তেমনে থাকে। হামরা কী এই দ্যাশের মানুষ নোয়াই বাহে ? তাদের দাবী দেশে সরকার আছে, এনজিও আছে কেউ তাদের খোজ নেয়না। শুধু ভোট আসলে আর সুদের টাকার জন্য ওরা ওইসব চরে আসে আর সান্ত¦নার বাণী শোনায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত সরকারী ভাবে ২৫৪০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান সরকারী যা বরাদ্দ পেয়েছি তা যথাযথ ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসী বলছেন ৩লাখো মানুষের জন্য কম্বল মাত্র ২৫৪০, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তারা বলছেন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী ভাবেও সাহায্যের হাত বাড়ানো দরকার।