জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিলের পরামর্শ
প্রকাশ : 2024-08-13 12:59:45১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সোমবার (১২ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, নোবেলজয়ীর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতীকালীন সরকারকে ‘সময়’ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সহযোগিতা করার প্রস্তাব। পাশাপাশি অধিকাংশ দলও কিছু দাবি-দাওয়া জানিয়েছে। এসময় ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছে কোনও-কোনও দল।
বিকাল চারটায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ), গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ফরিদা আখতার, আদিলুর রহমান খান, মোঃ নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় নেতারা দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। লিখিত প্রস্তাবনা দেওয়া হয় ড. ইউনূসের হাতে। মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া একাধিক দলের প্রধান নেতারা ১৫ আগস্টকে শোক দিবস হিসেবে বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস করাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর পর্যালোচনা করতে বলেছি। এটি (১৫ আগস্ট) শোকের নয়, বরং এটি আমাদের সুখের ও শান্তির মাস।’ এসময় তিনি ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন বলেও জানান।
নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময়ে, এবি পার্টি ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার বিষয়টি বিবেচনা করার প্রস্তাব দেয় । দলটির নেতারা বৈঠক থেকে বেরিয়ে বলেন, কোনও গণপ্রজাতন্ত্রে ব্যক্তি কেন্দ্রীক দিবস বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা অনুচিত। এটি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের পরিপন্থি। এবি পার্টি মনে করে জাতীয় ব্যক্তিত্বদের অবদান স্মরণ করার আনুসাঙ্গিক ব্যবস্থা থাকতে পারে তবে এই রাষ্ট্র কোনও একক ব্যক্তির অবদান নয়। কোন ব্যক্তিকে অতিমাত্রায় পূজনীয় আকারে হাজির করলে আদতে তার অসম্মান ও পতন অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।’
মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া একটি দলের অন্যতম প্রধান নেতা জানান, ‘মূলত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে বাতিল করার চিন্তা অন্তবর্তীকালীন সরকারের। আর এ বিষয়টিই একাধিক রাজনৈতিক দল সামনে এনেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আজকালের মধ্যে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ১৫ আগস্ট বাতিল করা হবে।’
এদিকে আগামী ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস (১৫ আগস্ট) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট তা বাতিল করে। ২০০৮ সালে হাইকোর্টের এক রায়ে ১৫ই অগাস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুর্নবহাল করা হয়।
সা/ই