জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্ব সংগ্রাম দিবস -বাংলাদেশের জনগণের জলবায়ু ও জীবন সংগ্রাম

প্রকাশ : 2025-11-15 17:39:15১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্ব সংগ্রাম দিবস -বাংলাদেশের জনগণের জলবায়ু ও জীবন সংগ্রাম

আজ ১৫ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন (বিকেএফ)সহ ২২টি সংগঠনের উদ্যোগে জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্ব সংগ্রাম দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কমরেড জায়েদ ইকবাল খান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেতা, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ-এর নেতা ইকবাল ফারুক, ; এ. এ. এম. ফয়েজ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন; অমলি কিসকু, সভানেত্রী, বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতি; শামীম আরা, সভানেত্রী, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন; লাভলী ইয়াসমীন, সভাপতি, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন; নাহিদুল হাসান নয়ন, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন;মরিয়ম আক্তার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশন; জাহানারা বেগম, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ভাসমান নারী শ্রমিক ইউনিয়ন ;আশা মণি,প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ কিষাণী সভা ; আল-আমিন, সাধারণ সম্পাদক, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; কৃষক নেতা শাহাবুদ্দিন মাতব্বর; নারী নেত্রী রেহানা বেগম; ইরেজারের নেতা রবিউল ইসলাম, সুনু রানী দাস, দলিত নারী উন্নয়ন সংস্থা; আল-এমরান, কর্মকর্তা, সিপিআরডি; আশা মণি, নেত্রী, বাংলাদেশ কিষাণী সভা এবং আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব জলবায়ু বিপর্যয়ের চরম হুমকির মুখে। উত্তর গোলার্ধে বরফ গলছে, দক্ষিণের দেশগুলোতে খরা ও খাদ্য সংকট বাড়ছে। শিল্পদূষণ, নদী-জলাভূমি ধ্বংস, কয়লা-গ্যাসনির্ভর জ্বালানি নীতি ও কর্পোরেট লোভের কারণে বাংলাদেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। বাংলাদেশে নদী দূষণ, নদীভাঙন, শিল্পবর্জ্য, কৃষিজমি দখল, বন উজাড়, নিরাপদ পানির সংকট ও ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ—সবই জলবায়ু ও পরিবেশগত অবিচারের বহিঃপ্রকাশ। বক্তারা বলেন, কৃষক, শ্রমিক, নারী, শিশু, জেলে, উপকূলবাসীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই অবিচার রুখতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।

সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় দাবিসমূহ উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো: ১। ভূমি ও কৃষি সংস্কার — শিল্প ও রিয়েল এস্টেটের দখল থেকে কৃষিজমি রক্ষা এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তা; ২। জৈবিক কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব — নদী-জলাভূমি রক্ষা ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকে রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার; ৩। ন্যায়সঙ্গত শহর — বাসস্থান, পানি, স্যানিটেশন, নিরাপদ পরিবহন ও বিদ্যুৎকে মৌলিক অধিকার হিসেবে নিশ্চিত করা; ৪। জলবায়ু ন্যায়, সামাজিক সংহতি ও প্রকৃতি রক্ষা — সুন্দরবন, উপকূল, নদী ও কৃষিজমি ধ্বংসকারী সব প্রকল্প বন্ধ; ৫। জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদের শোষণ বন্ধ — কয়লা, তেল, গ্যাস ও শিল্পদূষণ প্রতিহত করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিস্তার; ৬। দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি — কর্পোরেশন ও রাষ্ট্রের পরিবেশগত ও সামাজিক অপরাধের প্রতিকার নিশ্চিত করা।

বৈশ্বিক ন্যায়ের দাবিসমূহ হলো: ১। কার্বন ঋণ পরিশোধ ও ক্ষতিপূরণ (খড়ংং ্ উধসধমব) প্রদান; ২। উন্নত দেশগুলোর ভোগবাদী উৎপাদন, যুদ্ধে বিনিয়োগ ও সম্পদ লুণ্ঠন বন্ধ; ৩। বহুজাতিক কোম্পানির কর ফাঁকি ও মুনাফা পাচার বন্ধ; ৪। এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, পানি ও জ্বালানীর সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে ন্যায্য নীতি প্রণয়ন।

সমাবেশের আহ্বান দেওয়া হয় “মুনাফা নয়—জনগণ; কর্পোরেশন নয়—প্রকৃতি” এই মূল স্লোগানে। বক্তারা ঘোষণা করেন, নদী রক্ষা, কৃষিজমি রক্ষা, বন ও উপকূল রক্ষা এবং সকল মানুষের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।