গেটকিপার ঘুমে, রেলগেটে ঢুকে পড়ল ট্রেন, বড় দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা
প্রকাশ : 2024-05-03 15:20:20১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গেটকিপারের অসাবধানতার কারণে শুক্রবার [৩ মে) ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে রেলগেটে অল্পের জন্য রক্ষা পেল দুটি পণ্যবাহী ট্রাকসহ বেশকিছু ছোটবড় যানযাহন ও পথচারীরা।
শুক্রবার ]৩ মে) ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফুলবাড়ী স্টেশন থেকে ছেড়ে পার্বতীপুর জংশন অভিমুখে যাওয়ার সময় ফুলবাড়ী সবচেয়ে ব্যস্ততম ও জনগুরুত্বপূর্ণ রেলগেটে এই ঘটনা ঘটেছে।
রেলগেটের গেট নামানো আর ওঠানোর দায়িত্বে থাকা গেটকিপারের নাম মো. রাহিদ রাহী। তার বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায়। ঘটনার পর থেকে তাকে আর রেলগেট এলাকায় দেখা যায়নি। অপর গেটকিপার দায়িত্ব পালন করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রেলগেটটি অতিক্রম করে ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি অতিক্রম করার পরে তাড়াহুড়ো করে ঘুম চোখে গেট ফেলছেন গেটকিপার মো. রাহিদ রাহী। মুহুর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তবে অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যায় বড় দুটি পণ্যবাহী ট্রাক, বেশি কিছু ছোটবড় যানবাহন, অটোরিকশাসহ পথচারীরা। ভিডিওটি মুহুর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ভিডিওধারণকারী কলেজ শিক্ষার্থী পারভেজ হাসান বলেন, ‘রেলগেটে আমার দোকান আছে। ভোরে আমি দোকান খুলে বসে থাকার সময় দেখতে পাই, ট্রেন আসছে, রেলগেট দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে যানবাহন চলাচল করছে। অথচ রেল গেটের গেট ফেলা হয়নি। আমি আমার ফোনের ভিডিও চালু করে দৌঁড়ে গেটের কাছে যাওয়ার সময় দেখি ঘুম ঘুম চোখে তাড়াহুড়ো করে গেট কিপার রাহিদ রাহী তার শয়নকক্ষ থেকে বেড়িয়ে গেট ফেলছেন। ততক্ষণে ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি রেলগেট অতিক্রম করে ফেলছিল। এদিকে অচমকা ট্রেন দেখতে পেয়ে দুটি ট্রাকই হার্ডব্রেক করে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন চালকদ্বয়।’
প্রত্যক্ষদর্শী আরেক পথচারী সবুজ হোসেন বলেন, ‘ট্রেনের ইঞ্জিনসহ কয়েকটি বগি রেলগেট অতিক্রম করার পর গেটকিপার রাহিদ রাহী দৌঁড়ে এসে গেট ফেলেন। এতে গেটকিপারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে যানমাল। এধরণের অসাবধান মানুষকে এতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া ঠিক না।’
গেটকিপার মো. রাহিদ রাহীকে খুঁজে না পাওয়ায় এবং রেল স্টেশনের দায়িত্বরতরা মোবাইল ফোনের নম্বর দিতে অস্বীকৃতি জানায়। সে জন্য তার সঙ্গে কথা বলা কিংবা তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী স্টেশনের দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার শ্রী টুটুল সরকার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার [২ মে) বিকাল ৪টা থেকে শুক্রবার [৩ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত পর্যন্ত বিশ্বনাথ কয়াল স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিশ্বনাথ কয়ালের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে কী ঘটেছে তা আমার জানা নেই। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক।’
শুক্রবার [৩ মে) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তদন্তে এ ঘটনায় যদি কারো দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া যায়, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’