খোশ আমদেদ মাহে রমজান
প্রকাশ : 2022-04-03 10:04:54১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আজ থেকে শুরু হয়েছে ১৪৪৩ হিজরী সনের পবিত্র রমজান মাস। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর পরই সর্বত্র রোজার আবহ সৃষ্টি হয়। মসজিদে মসজিদে তারাবীহ্র নামাজ আদায়ের মাধ্যমে রোজা পালনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোটা রমজান মাস জুড়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ রোজা পালন করে আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন। পবিত্র কোরআনে রমজান মাসকে অত্যন্ত বরকতময় মাস হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ মাসে বান্দাগণ আল্লাহ্ রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে প্রার্থনা করলে তা কবুল হয়। এ মাসেই রয়েছে রবরকতময় রজনী শবে কদর; যেদিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ওপর পবিত্র আল কোরআন নাজেল হয়েছিল। সেজন্যই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগি করে আাল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য লাভের চেষ্টায় ব্রতী হয়ে থাকেন। পবিত্র রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহ্র শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেছেন।
রোজার আরবি প্রতিশব্দ সিয়ামের অর্থ সংযম। মুসলমানগণ এ মাসে দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থেকে আত্মশুদ্ধি লাভের চেষ্টা করেন। তবে, শুধু দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থাকার মধ্যেই রোজা বা সিয়ামের উদ্দেশ্য নিহিত নয়। বরং সিয়ামের অন্তর্নিহিত মর্মবাণীকে অন্তরে ধারণ করে নিজেকে পুতপবিত্র মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই এর মূখ্য উদ্দেশ্য। পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সব ধরনের লোভ-লালসা, হিংসা-ক্রোধ, অপরের অনিষ্টচিন্তা এবং অসৎ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখাই সিয়াম সাধনার প্রধান শিক্ষা। আমরা যদি রোজার শিক্ষাকে আত্মস্থ করে ষড় রিপুর তাড়না থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার, ব্যাভিচার, অরাজকতা দূর হতে বাধ্য। ইসলামের শিক্ষা হলো, আল্লাহ তায়ালার বিধানকে মেনে চলা এবং প্রাত্যহিক জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানো। সামাজিক শান্তি বজায় রাখা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রেখে একটি সুস্থ ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য।
আজ আমাদের সমাজে যেসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে, তা মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যাওয়ারই প্রতিফলন। সব ধর্মেরই মূলমন্ত্র শান্তি ও মানবকল্যাণ। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানিকে কোনো ধর্মই সমর্থন করে না। কিন্তু আমরা এখন কী দেখছি? দিকে দিকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছাড়ানোর এক সর্বনাশা অপতৎপরতা আমাদের সমাজজীবনকে বিষিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। স্বার্থান্বেষীরা ধর্মীয় তত্ত্বের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরলমনা মানুষদের বিভ্রান্ত করে ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠিস্বার্থ লুটার অপচেষ্টায় রত। অথচ, ইসলাম তা একেবারেই সমর্থন করে না। আর তাই ওই অপশক্তিকে প্রতিহত করা ঈমানদার মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে গ্রামনগরবার্তার পাঠক, পৃষ্ঠপোষক ও শুভানুধ্যায়ীদের আন্তরিক মোবারকবাদ।