খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের সবাই হত্যার আসামি হবে: ফখরুল
প্রকাশ : 2022-01-05 15:38:46১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
গুরুতর অসুস্থ দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার জেনেশুনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, খালেদা জিয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হলে সরকারের প্রত্যেককে হত্যার আসামি করা হবে।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৫ জানুয়ারি স্মরণে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছেন তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও আইনের দৃষ্টিতে সুযোগ নেই বলে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো রকম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী না হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এ মুহূর্তে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা দরকার। চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু যে কোনো সময় তার জীবন নিয়ে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। দেশনেত্রীর অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কিছু হলে সরকারের প্রত্যেকেকে হত্যার আসামি করা হবে। এসময় তিনি রাজপথে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সরকার জেনেশুনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অথচ সরকার আইনের অজুহাতে তাকে বিদেশে চিকিৎসা দিতে চাচ্ছে না, বরং তারা বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়।
ঢাকাসহ দেশের সব জেলায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে অষ্টমবারের মতো ঢাকাসহ সারাদেশে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়া তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে দেশে গণতন্ত্র হত্যার প্রধান নায়ক আখ্যা দেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ যখন বুঝলো জনগণ তাদের ভোট দেবেন না, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার উদ্যোগ নিলো। এতে প্রধান নায়কের ভূমিকায় ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তাই ভবিষ্যতে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে বিচারপতি খায়রুল হকের বিচারও করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়। তারা তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে কারান্তরীণ করে রেখেছেন।
ফখরুল বলেন, আজ গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির এইদিনে পাতানো কৌশলে একদলীয়ভাবে নির্বাচন হয়েছিল, শুধুমাত্র একটি দলকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে। অথচ দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল সেদিন নির্বাচন বর্জন করেছিল।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দক্ষিণের আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।