ক্রেতা না আসায় ৪০ মণ বাহাদুর কে নিয়ে বিপাকে কাউনিয়ায় খামারী নজরুল

প্রকাশ : 2021-07-08 16:43:56১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ক্রেতা না আসায় ৪০ মণ বাহাদুর কে নিয়ে বিপাকে কাউনিয়ায় খামারী নজরুল

কাউনিয়া উপজেলায় গরুর খামারী নজরুল ইসলাম নিজ সন্তানের মতো লালন পালন করে বড় করে তুলেছেন বাহাদুর কে। অনেক শখ করে তার নাম রেখেছেন বাহাদুর। গরুটি দেখতেও বাহাদুরের মতোই হয়েছে। বাহাদুর বলে ডাকলেই গরুটি সন্তানের মতো সারা দেয়। তার আশা গরুটি বিক্রি করবেন ২৫ লাখ টাকা।

সরেজমিনে উপজেলা কুর্শা ইউনিয়নের শিবু মালিপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় খামারী নজরুল ইসলাম এর সাথে। তিনি জানান গ্রামীন ব্যাংকের চাকরী শেষে কিছুটা হতাশায় পরেন তিনি। তার স্ত্রীর পরামর্শে ৩টি গরু দিয়ে তিনি ২০১৪ সালে প্রথম খামার শুরু করেন। প্রথমের দিকে তেমন লাভ না হলেও ধীরে ধীরে তার খামার লাভের মুখ দেখতে থাকে। বর্তমানে তার প্রচেষ্টা খামারে ২৪টি দুধের গরু রয়েছে। প্রতিদিন ১২০ লিটার করে দুধ বিক্রি করেন তিনি। বাহাদুর তার নিজের একটি গরুর বাছুর। বাছুরটি যখন জন্ম হয় তখন থেকে তিনি স্বপ্ন দেখেন এই বাছুরটিকে কোন মোটা তাজা করন পদ্ধতি ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে বড় করবেন। যেই কথা সেই কাজ। শুরু করেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিশ্রম। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাকে সহযোগিতা করেছে তার স্ত্রী ও তার ছোট ভাই। নিজস্ব পদ্ধতিতে তিনি আলাদা একটি সেডে রেখে বাহাদুরকে বড় করতে থাকেন। বাহাদুরের এখন বয়স ৩৩ মাস। তার ওজন হয়েছে প্রায় ৪০ মন। বাহাদুরকে এক নজর দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে মানুষ এসে দেখে যায়। 

নজরুল ইসলাম জানায় দেশীয় খাবার দিয়ে এবং ইনজেকশন না দিয়ে গরু বড় করা সম্ভব সেটি আমি প্রমান করতে চেয়েছি, সেই সাথে বেকার যুবকদের বুঝাতে চেয়েছি চাকরীর পিছে না ছুটে সৎ ভাবে একাগ্রতার সাথে নেক নিয়তে খামার করলে সে অন্যকে চাকরী দিতে পারবে। তার খামারে এখন ৪ জন কর্মচারী আছে। তাদের বেতন বাবদ খরচ হয় মাসে ৩০ হাজার টাকা। বাহাদুরে পিছনে প্রতিদিন খাদ্য ভুষি, ঘাস, খৈল বাবদ ১২০০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। সে আশা করছে বাহাদুরকে ২৫ লাখ টাকা বিক্রি করবে। লকডাউনের আগে ঢাকা এবং চট্রগ্রামের পাইকার এসে ২০ লাখ টাকা বলেছিল। এখন দেশে যে অবস্থা তাতে কি হবে জানিনা। কাউনিয়ায় এই গরু কেনার মতো গ্রাহক নেই। এভাবে লকডাউন বাড়তে থাকলে পাইকার আসবে না। তাই বাহাদুরকে নিয়ে বিপাকে ও চিন্তায় আছি। জানিনা আল্লাহ কপালে কি রেখেছেন। তবে আমি আশাবাদী আমার বাহাদুর ২৫ লাখ টাকা বিক্রি হবে। 

উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, কাউনিয়ায় নজরুলের বাহাদুর নামের গরুটি এপর্যন্ত সবচেয়ে বড় গরু। গরুটিকে সে দেশীয় খাবার ও পদ্ধতিতেই বড় করেছে। তাকে প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে সহযোগিতা করা হয়। জেলা প্রানী সম্পদ অফিসার মোঃ সিরাজুল হক জানান দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা এত বড় মাপের ষাঁড় গরু আমি প্রথম দেখেছি নজরুলের খামারে। নজরুল ইসলাম কাউনিয়ায় এখন একজন সফল খামারী এবং বাহাদুর কে এতা বড় করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।