ক্রিকেটার আল- আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
প্রকাশ : 2022-10-12 11:08:15১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
একসাথে বসবাসের অধিকার, মাসিক ভরনপোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবিতে স্ত্রীর করা মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে এ আদেশ দেন।আজ আদালতে আল-আমিনের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন আল-আমিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন জমা দেন।অপরদিকে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।
চলতি মাসের ৬ তারিখে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আল-আমিন স্ত্রী ইসরাত জাহানকে তালাক দিয়েছেন বলে লিখিত জবাব জমা দেন। আল-আমিন বৈবাহিক সম্পর্কের তিক্ততা বৃদ্ধি ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলেছেন স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ বিষয় শুনানির জন্য ১২ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন আদালত। তবে তালাকের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান।
এদিন ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আল-আমিন উপস্থিত হন। এরপর মামলার বিষয়ে ৭ পাতার একটি লিখিত জবাব দাখিল করেন। এ বিষয়ে ১২ অক্টোবর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান বলেন, আমি তালাকের বিষয়ে কিছুই পাইনি। আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। আমি ন্যায়বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে বাদীর আইনজীবী শামসুজ্জামান বলেন, আসামি আল-আমিন আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দেন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে লিখিত জবাব দাখিল করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তিনি গত ২৫ আগস্ট তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তবে তার স্ত্রী তালাক সংক্রান্ত কোনো কাগজ পাননি।
লিখিত জবাবে ক্রিকেটার আল-আমিন উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট আমি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। আমি তাকে দেনমোহর, ভরণ-পোষণ দিতে প্রস্তুত। আমাদের দুই সন্তান আমার বাসায় থাকবেন ও তাদের পড়ালেখার খরচ আমি বহন করছি। তাই তাদের খরচ দিতে আমি বাধ্য না।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে ক্রিকেটার আল-আমিন আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
তারও আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান মামলাটি দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে গ্রহণ করেন। এরপর আল-আমিনকে ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হতে নোটিশ জারি করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল-আমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজী ভার্সনে কেজিতে পড়ালেখা করছে। বেশ কিছুদিন যাবৎ আল-আমিন স্ত্রী ও সন্তানদের ভরনপোষণ প্রদান করেন না এবং খোঁজও না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন। যোগাযোগও করেন না।
গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। সংসার করবে না বলে জানায়। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়।
সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর আল-আমিন তার মায়ের মাধ্যমে জানান, ইসরাতের সাথে সংসার করবে না এবং সন্তানদের ভরনপোষণ দেবেন না। প্রয়োজনে বাসা থেকে বের করে দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেবেন। পরকীয়ায় আসক্ত হওয়ার কারণে একাজ করেছে এবং একজন মহিলার সাথে উঠানো ছবি ইসরাতে কাছে পাঠায়।
মামলায় আরও বলা হয়, আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর যাবৎ আসামি বাদীর খোঁজখবর নেয় না এবং বাসায় নিয়মিত থাকে না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরনপোষণ দাবি করে মামলাটি দায়ের করলেন। জীবন ধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরনপোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়া বাবদ ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।