ক্যামেরুন-সার্বিয়া ৬ গোলের রোমাঞ্চে কেউ জেতেনি
প্রকাশ : 2022-11-28 20:05:55১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ায় দুই দলের জন্যই এটি ছিল বাঁচা-মরার ম্যাচ। আর বেঁচে থাকার তাগিদেই যেন প্রতিটি মিনিটই চোখে চোখ রেখে খেলে গেল দুই দল। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে গোল হলো, শোধ হলো। গোল পাল্টা গোলে শেষপর্যন্ত অবশ্য জিতল না কেউই। সার্বিয়া-ক্যামেরুনের জমজমাট লড়াই থেমেছে ৩-৩ সমতায়।
এ ড্রয়ে শেষ ষোলোর সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখল দুই দলই। ১ পয়েন্ট নিয়ে ক্যামেরুন শেষ ম্যাচে লড়বে ব্রাজিলের বিপক্ষে, সার্বিয়ার প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড।
আল জানুব স্টেডিয়ামের ম্যাচটি যে এতটা রোমাঞ্চ ছড়াবে, সেটি অবশ্য প্রথম বিশ মিনিটে অনুমান করা যায়নি। বিশ্বকাপে টানা আট ম্যাচ হেরে যাওয়া ক্যামেরুনকে শুরু থেকে চাপে রাখে সার্বিয়া। ১০ মিনিটেই গোল পেয়ে যাচ্ছিল ইউরোপের দেশটি। সতীর্থের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নিয়েছিলেন আলেকসান্দার মিত্রোভিচ।
প্রতিরোধহীন শটটি পোস্টের ভেতরের অংশ লেগেও বাইরে চলে আসে। ৭ মিনিট বাদে আরও একবার সুযোগ পান ২৮ বছর বয়সী মিত্রোভিচ। এবার বল পেয়ে যান ক্যামেরুন ডিফেন্ডারদের ভুলে। তবে অরক্ষিত থাকলেও তাড়াহুড়ায় পোস্টের বাইরে শট নেন তিনি।
সার্বিয়ার আক্রমণের বিপরীত ধারায় ২৮ মিনিটে গোল পেয়ে যায় ক্যামেরুন। নুহু তোলোর কর্নার ক্রসে খুব কাছ থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন জঁ-চার্লস কাস্তেলেত্তো। বিশ্বকাপে খেলা সর্বশেষ নয় ম্যাচে এটি ক্যামেরুনের চতুর্থ গোল।
তবে মিত্রোভিচ, দুসান তাদিচরা যেভাবে বারবার আক্রমণে উঠছিলেন, গোল পাওয়া সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। প্রথমার্ধের শেষদিকে সেটিই হয়ে যায় দুই দফায়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে তাদিচের কর্নার থেকে হেডে বল জালে জড়ান স্ত্রাহিনিয়া পাভলোভিচ। তিন মিনিট পর আরেকটি গোল এনে দেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সার্বিয়া।
বিরতির পরও প্রথমার্ধের আক্রমণাত্মক ধারাই ধরে রাখে সার্বরা। ক্যামরুনের ডিফেন্সিভ থার্ডে ঢুকে শট নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সাভিচকে ঠেলে দেন মিত্রোভিচ। সেখান থেকে আন্দ্রিয়া জিভকোভিচ হয়ে গোলমুখে বল চলে আসে মিত্রোভিচের সামনে। সহজেই ক্যামেরুন গোলকিপারকে পরাস্ত করেন ২৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকার।
সার্বিয়া ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য ক্যামেরুন হতোদ্যম হয়নি। তবে ইতিহাস ছিল না পক্ষে। বিশ্বকাপে অন্তত ২০ ম্যাচ খেলা দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম গোলের হার আফ্রিকান দেশটির। শেষ আট ম্যাচের ৫টিতে গোল করতে না পারা ক্যামেরুনের সামনে তখন নিজেদের ইতিহাসই ‘বাধা’। তবে ম্যাক্সিম চুপো-মোতিং আর ভিনসেন্ট আবুবুকররা হাল ছাড়েননি। সার্বিয়ার প্রতিটি আক্রমণের পরই দ্রুত পাল্টা আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে গেছেন তারা।
সেই ধারাতে ৬৩ মিনিটে গোল পেয়ে যান বদলি নামা আবুবকর। কাস্তেলেত্তোর পাস থেকে বল পেয়ে এগিয়ে আসা সার্ব গোলকিপারের মাথার দিয়ে ওপর বল পাঠিয়ে দেন সৌদি আরবের লিগে খেলা এই স্ট্রাইকার। তিন মিনিট পর চলে আসা সমতা আনা তৃতীয় গোলও। এবার সহায়তাকারী হয়ে ওঠেন আবুবকর, গোলদাতা চুপো-মোতিং।
৬৬ মিনিটের মাথায় স্কোরলাইন ৩-৩-এ পরিণত হওয়ার পর খেলা চলেছে আরও আধা ঘণ্টা। তবে বাকি সময় আর গোলমুখ খুলতে পারেনি কেউই। মাঠ ছাড়তে হয় পয়েন্ট ভাগাভাগি করে।
এবারের বিশ্বকাপে এটিই দুই দলের প্রথম পয়েন্ট। প্রথম ম্যাচে সার্বিয়া ২-০ ব্যবধানে ব্রাজিলের কাছে, ক্যামেরুন ১-০ ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল।