কোটা আন্দোলনে স্বপ্ন ভঙ্গ নিহত রাব্বির রিক্সা চালক বাবার, পরিবারে শোকের মাতম

প্রকাশ : 2024-08-10 16:42:44১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কোটা আন্দোলনে স্বপ্ন ভঙ্গ নিহত রাব্বির রিক্সা চালক বাবার, পরিবারে শোকের মাতম

ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার আশায় শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিউটে ভর্তি হন ইসমাইল হোসেন রাব্বি। ইঞ্জিনিয়ার হয়ে রিক্সাচালক বাবাকে একটু শান্তি দেবে এমন এমনটাই আশা ছিল রাব্বির। দুই বোন ও ভাইদের মধ্যে তিনিই একা এবং সবার ছোট। এক মাত্র সন্তানকে হারিয়ে পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম। ছেলের কথা মনে পড়লেই ঠুকরে কেদে উঠছেন বাবা মিরাজ তালুকদার ও মা পারভীন বেগম।  ছেলের এমন অকাল মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন পরিবার ও স্থানীয়রা। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে রাব্বি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন। ১৯ জুলাই ঢাকার শাহাবাগ এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাব্বি। গুলি তার কপাল দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজে রাখা হয়েছিল। আন্দোলনে যোগদান করা ছেলেকে না পেয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন পরিবারটি। অবশেষে গত ৪ আগস্ট রাতে শুনতে পান রাব্বির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পরে ৫ আগস্ট ছেলের লাশটি মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামে নিজ বাড়ি আনা হয়। পরে পারিবারিক কবরে দাফন করা হয়েছে। ছেলে হারা শোক কোনমতে ভূলতে পারছে না পরিবার। 

স্থানীয়রা জানান,রাব্বি অনেক মেধাবী ছিল। তার স্বপ্ন ছিল সে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু সেই হাল আর ধরা হলো না। আমরা চাই যে পুলিশ তাকে এভাবে গুলি করে হত্যা করেছে সেই সকল পুলিশের বিচার চাই ও  সরকারের কাছে  গরিব অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো জোর দাবি জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল হোসেন জানান, অনেক কষ্ট করে রিক্সা চালক মিরাজ তালুকদার তার ছেলেকে শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিউটে ভর্তি করেছিল। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। কষ্ট দুর হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেলো।

নিহত রাব্বির বাবা মিরাজ তালুকদার বলেন, ১৯ জুলাই ছেলে আন্দোলনে যায়। এরপর তাকে খুঁজে পাইনি। পরে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকি। পরে ৪ আগস্ট জানতে পারি তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা লাশ নিয়ে বিচারের দাবীতে মিছিলও করে। ঢাকার পুলিশরা হাসপাতাল থেকে তাড়াহুড়ো করে লাশ নিয়ে দাফন করতে বলা হয়। পরে লাশ এনে বাড়ির পাশে দাফন করেছি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি পুলিশের গুলিতে আমার ছেলে নিহত হয়েছে। কি অপরাধ ছিলো আমার ছেলের? কেন তাকে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।