কালকিনিতে স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ, রোপন করা হচ্ছে কলা ও ধানের চারা
প্রকাশ : 2021-09-16 20:19:44১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মাদারীপুরের কালকিনিতে স্কুলের জমি দখল করে কলা ও ধানের চারা রোপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষ্র্থীদের যাতায়াতে বিগ্ন ঘটছে। যাদের বিরুদ্ধ দখলে অভিযোগ উঠেছে তারা ওই জমি তাদের বলে দাবী করছেন।
এদিকে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, স্কুলের মাঠে চাষাবাদের কোনো বিধান নেই। এরই মধ্যে অভিযুক্ত ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমির দলিল চাওয়া হয়েছে।
কালকিনি উপজেলার রায়পুর কাচারীকান্দি বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালে সরকারি হয়। এর আগে ১৯৯৪ সালে যাত্রা করা এই প্রতিষ্ঠানটি কমিউনিটি স্কুল ছিল।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, ১৯৯৪ সালে কালকিনি উপজেলার রায়পুর কাচারীকান্দি গ্রামের ইসমাঈস সরদার ও তার স্ত্রী ময়মুন নেছা ২২ শতাংশ ও মনির সরদার ১১ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেন। বিদ্যালয়ের জমিদাতা হিসেবে মনির সরদার দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সম্প্রতি মনির সরদারকে শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে সভাপতি থেকে বাদ দেয়া হলে তার ছোট ভাই আক্তার সরদার বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ধান ও কলাগাছ রোপণ করেন।
সরকারের সিদ্ধান্তে ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলটি খুলেছে। কিন্তু মাঠে ধান ও কলাগাছ রোপণের ফলে সেখানে কিছুই করতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সমস্যা হচ্ছে স্কুলে যাতায়াতে। বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে জমিতে মাটি দিয়ে সীমানা দিচ্ছেন কয়েক ব্যক্তি।
মাটি কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে আক্তার সরদার বলেন, ‘আমার জমিতে আমি মাটি কাটতেছি। স্কুল যদি জমি পায় নেবে। আমরা পাঁচ ভাই-বোন। আমার ভাই দলিল দিলে তারটুকু দিতে পারে।
‘আমাদের অন্য ভাই-বোনদের জমি দলিল দিতে পারে না। ১৪ শতাংশ জমির ১১ শতাংশ জমি আমার ভাই দলিল করে দিতে পারে না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষা অফিসারের কাছে গেলে তিনি ইউএনও স্যারের কাছে দরখাস্ত দিতে বলেন। আমি সেখানে দরখাস্ত দেই। তখন ইউএনও স্যার তহশিলদারকে দিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেন। দলিলপত্রসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে স্যারের কাছে যেতে বলেছেন।’
স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সাবেক সভাপতি মনির সরদার জমিদাতা হয়েও বিদ্যালয়ের জমি তার ভাই দিয়ে দখল করে আছে। কিছু বললেই লোক পাঠায় মারতে। আবার মামলা করার হুমকি দেয়। আমি এর সঠিক বিচার ও সমাধান চাই। যাতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় থাকে।’
অভিযোগের বিষয়ে মনির সরদার বলেন, ‘আমি ১১ শতাংশ জমির দলিল দিয়েছি। এখন আইনে যা হওয়ার তাই হবে। আমার ভাইদের জায়গায় তারা কী করল সেটা তাদের বিষয়, আমার নয়। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। আমি তাৎক্ষণিক ওই ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখে আপাতত মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন দিন-তারিখ ঠিক করে জায়গাটা পরিমাপ করলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।’
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রায়পুর কাচারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসেছিলেন। আমি তহশিলদারকে পাঠিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করেছি। বিদ্যালয়ের দলিল আনতে বলেছি।
‘যারা দাবি করছে তাদেরও দলিল আনতে বলেছি। কার কী সমস্যা তা দেখে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত বেড়া ছাড়া যে জায়গা আছে, ওখান দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।’