কাউনিয়া খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন ধু-ধু বালু চর,ফসল আর খেলার মাঠ, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই

প্রকাশ : 2021-04-08 19:11:57১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়া খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন ধু-ধু বালু চর,ফসল আর খেলার মাঠ, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই

রংপুরের কাউনিয়ায় এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন ধু-ধু বালু চর আর ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। চৈত্রের তাপদাহে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় তিস্তা নদী শুকিয়ে এখন তংতাল সার ফসলের মাঠ,খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর আজও কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ, শহীদবাগ, বালাপাড়া ও টেপামধুপরি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী ড্রেজিং, খনন, সংরক্ষণ ও সংস্কার করা হয়নি।

ঐতিহাসিক ভাবে এই নদীর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মান ও পানি চুক্তির বাস্তবায়ন না হওয়ায় নদীর এখন এ অবস্থা। এক সময় ছিল খরস্রোতা এ নদীতে থাকত পানির উত্তাল তরঙ্গমালা। কি চৈত্র কি আষাঢ় বর্ষা ও শুষ্ক উভয়ই মৌসুমে ছিল না পানির অভাব। সে সময় নদী দিয়ে বয়ে যেত ল , পালতোলা নৌকাসহ বিভন্ন জলযান। দেশের বিভিন্ন অ ল থেকে মালামাল পরিবহনের একমাত্র পথ ছিল এই নদী। তাই প্রতিনিয়ত দেখা যেত বিশাল আকৃতির পাল তোলা নৌকার বহর। এছাড়াও এলাকার হাজার হাজার কৃষক কৃষি পণ্য উৎপাদনে ব্যবহার করত নদীর পানি। নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করে একদিকে যেমন সাশ্রয় হতো অপরদিকে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেত। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই খরস্রোতা নদী এখন ধু-ধু বালু চর আর ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। ফলে আর দেখা মেলে না পালতোলা নৌকার বহর, লঞ্ছসহ কোন জলযানের। ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মাণের ফলে ও পানি চুক্তির বাস্তবায়ন না হওয়ায় নদীর এখন এঅবস্থা হয়েছে। দীর্ঘ দিন থেকে চৈত্র মাস না আসতেই শুকিয়ে যায় নদীর পানি। তিস্তা নদী এখন কোথাও ফসলের মাঠ, কোথাও খেলার মাঠ, কোথাও বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মৎস্যজীবি, শতশত নৌকার মাঝি বেকার হয়ে গেছে। ভূগভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় যেমন নদীর পানি শুকিয়ে গেছে, তেমনি অগভীর নলকূপগুলোতেও পানি উঠছে না। ফলে হাজার হাজার কৃষক পানির সমস্যায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। 

উপজেলা ঢুসমারা চরের তজরুল ইসলাম, তালুকশাহবাজ গ্রামের স্বাধীন বলেন, আমরা যুগ যুগ থেকে নদী থেকে পানি নিয়ে জমির সেচের কাজ করছি এখন তা করা সম্ভব হচ্ছে না। জহুল জানান নদী পথে নৌকা নিয়ে মাটির তৈরী ডাবর, টালি, পাতিল,কলসসহ বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী নৌকা যোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বর্তমানে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় আমাদেও ব্যবসা স্থবির হয়ে পড়েছে। তালুকশাহবাজ গ্রামের রফিক বলেন, নদী পানি শূন্য হওয়ায় মাঠে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে খরচ হচ্ছে অনেক গুণ বেশি। এতে আমাদের সেচ খরচ ও অনেক বেড়ে যাচ্ছে আর জমির উর্বরতা ও কমে যাচ্ছে।