কাউনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে শ্বাশত গ্রাম বাংলায় গরু মহিষের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ

প্রকাশ : 2021-08-01 17:10:32১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে শ্বাশত গ্রাম বাংলায় গরু মহিষের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ

একসময়ের শ্বাশত গ্রাম বাংলায় জমি চাষের একটি চিরায়ত পদ্ধতি ছিলো গরু-মহিষ হাল। লাঙ্গল ও জোয়াল গরু মহিষের কাধে লাগিয়ে চাষি জমি চাষ করতো। কালের আবর্তনে যান্ত্রিক আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যটি।

সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ এখন আর চোখে পড়ে না। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির আগমনে দিন দিন হারিয়ে গেছে এই চিরচেনা গ্রামের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষের দৃশ্যটি। এটি ছিলো অনেক উপকারী এক পদ্ধতি। লাঙ্গলের ফলা জমির অনেক গভীর অংশ পর্যন্ত আলগা করতো। গরুর পায়ের কারণে জমিতে কাদা হতো অনেক এবং গরুর গোবর জমিতে পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি অনেক বৃদ্ধি করতো। আগে দেখা যেত কাক ডাকা ভোরে কৃষক গরু, মহিষ, লাঙ্গল, জোয়াল নিয়ে ভাওয়াইয়া, জারি, সারি গান গাইতে গাইতে মাঠে বেরিয়ে পরতো। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে কৃষক গরু, মহিষ পালন করত হালচাষ করার জন্য। আবার অনেকে গবাদিপশু দিয়ে হালচাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। এখন আর সে দৃশ্যও চোখে পড়ে না আর গানও শোনা যায় না। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষ। বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারের ফলে কৃষিতে এসেছে নানা পরিবর্তন। তাই কৃষকরা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গরু, মহিষ, লাঙ্গল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল চাষ। তাই কৃষকরা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল চাষ। 

কাউনিয়ার গদাই গ্রামের কৃষক গফুর আলী মন্ডল বলেন, ‘ছোটবেলায় হালচাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হালচাষের বলদ গরু ছিল ২-৩ জোড়া। চাষের জন্য দরকার হতো এক জোড়া বলদ, কাঠের তৈরি লাঙ্গল, বাঁশের তৈরি জোয়াল, মই, লরি (বাঁশের তৈরি গরু তাড়ানোর লাঠি), গরুর মুখে টোপা ইত্যাদি। বাড়িতে পান্তা ভাত মরিচ পিয়াজ আর সরিষার তেল দিয়ে মেখে খেয়ে বেড়িয়ে পড়তাম লাঙ্গল-জোয়াল কাঁধে দিয়ে জমি চাষ করতে। এখন আধুনিক বিভিন্ন মেশিন এসেছে, সেই মেশিন দিয়ে লোকজন জমি চাষাবাদ করে। তাই গরু, মহিষ, লাঙ্গল, জোয়াল নিয়ে জমিতে হাল চাষ করা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন কবি নজরুলের পত্রিকা‘লাঙ্গল’ যেন হারিয়ে গেছে তেমনি আর কিছু দিন পর আমাদের নতুন প্রজন্মকে লাঙ্গল জোয়াল চেনাতে নিয়ে যেতে হবে যাদু ঘরে। কারন বিলুপ্ত জিনিষই যাদু ঘরে স্থান পায়।