কাউনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে শিলপাটা ধারের কারিগররা

প্রকাশ : 2022-10-02 19:39:06১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে শিলপাটা ধারের কারিগররা

 গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য রন্ধন শালার মসলা বাটার শিলপাটা ধারের গারিগরদের হাক ডাক আর তেমন শোনা যায় না। একটা সময় ছিল সকাল হলেই শোনা যেত শিলপাটা ধার করবেন, শিলপাট.........। যান্ত্রিক আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই শিল্পের সাথে জরিত কারিগররা হারিয়ে যেতে বসেছেন। 

সরেজমিনে কথা হয় একজন শিলপাটার কারিগর পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়নে রাজেন চন্দ্র বর্মন (৫০) এর সাথে। তিনি জানান এই ব্যবসা এখন আর চলে না, তবুও বাপ-দাদার পেশা কোন রকমে ধরে রেখেছি। আগে প্রতিটি বাড়িতে শিলপাটা ব্যবহার হতো এখন আর হয় না বেশীরভাগ মানুষ প্যাকট মশলা বা নিজেরাই বাড়িতে বিদ্যুত চালিত যন্ত্রদিয়ে মসলা গুড়া করে। তিনি জানান বড় শিলপাটা হলে ১০০ টাকা আর ছোট হলে ৫০/৬০ টাকা নেই। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ২টি কাজ পাই, তাই দিয়ে কোন মতে সংসার চালাই। হাতড়ী আর ছেনি দিয়ে নিপূণ কারিগরী শিলপাটা পাথরের ওপর খোঁদাইয়ের সেকি মনোরম চিত্রকর্ম তৈরী করেন। হাতুডী দিশে টুক-টুক করে বাটনাতে খাঁচ কেটে দেন তিনি। রোজ সকালে একটা ছেঁড়া-তালি দেয়া ব্যাগ নিয়ে পুরোনো একটা সাইকেলে চেপেই তার রুজি রোজগারের আসায় প্যাডেল ঘোড়ানো। সাইকেলের প্যাডেল ঘুরলেও জীবন চাকা যেন ঘুরতেই চাইছে না আর। এই নিয়ে চালাতে হয় পাঁচ সদস্যের পরিবার। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে জীবন আর চলতে চায় না এখন। বাপ-দাদার কাছ থেকেই এ কাজে তার হাতেখড়ি। অনেকেই এ পেশা ছেড়েছেন, তাকেও ছাড়তে হবে। তার মুখ থেইে জানা গেলো এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিলো শিল পাটা, সে বেশি দিনের কথা নয়, তখন তাদের কদরও ছিলো, প্রত্যেকটি বাড়ীতে আঁদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, মসলাসহ রান্না সরঞ্জানের সব কিছুই বাটা হতো শিলপাটায় কিন্ত কালের বিবর্তনে শিলপাটা আর চোখেই পড়ে না। তিনি জানান এখনকার ছেলে-মেয়েরা শিলপাটা চিনেই না, তাই তাদের এ পেশার কারিগররা পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।

 হরিশ্বর গ্রামের রওশন বেওয়া জানান, এই পেশার মানুষ গুলোকে একসময় আর দেখা যাবে না।এই শিল্পের সাথে জরিত শতশত কারিগর জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো এই শিলপাটা ধার করেই। যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় তারা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।